Advertisment

পয়লা বোশেখের ঐশ্বরিক প্রেম

নববর্ষে পাঠকদের জন্য ছোট গল্প, লিখেছেন নীলার্ণব চক্রবর্তী।

author-image
Nilarnab Chakraborty
New Update
NULL

প্রতীকী ছবি


নীলার্ণব চক্রবর্তী

Advertisment

মোবাইল ঘাঁটছিল সুরেলা। সুরেলা মিত্র। বয়স ২৯ । কলেজ স্ট্রিট কফিহাউজের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে অনেক ক্ষণ হল। ঘণ্টা দুই তো হবেই। আজ পয়লা বৈশাখ। শাড়ি পরে এসেছে সে। তাঁতের শাড়ি, মায়ের, পাট-ভাঙা। কার জন্য অপেক্ষা করছে সুরেলা? তার বয়ফ্রেন্ডের জন্য। ছেলেটির নাম সাম্যব্রত। ছেলে বলার চেয়ে লোক বলাই বোধ হয় ভাল সাম্যকে। বয়স তার ৪৫ মোটামুটি। সবাইকে বলে ৪০। কারণ চেহারাটি তার তেমনই। আরও খানিকটা কমিয়ে দিলেও দেওয়া যায়। ধরা যাক-- ৩৫। এমনকি সুরেলা মনে মনে ভাবে, সাম্য যেমন চার্মিং দেখতে, তাকে ৩০-৩২ বললেও মোটেই অ-মানানসই হবে না। এ রকম ভেবে বেশ গর্বিতই হয় সুরেলা। মনটা সুরের সাগরে ভাসে। সাম্যের চেহারার কয়েকটা ফিচার সুরেলাকে টানে, যেমন ছেলেটির এখনও কুচকুচে কালো চুল। এখন তো কুড়িতেই চুল পাকতে শুরু করে দেয়। তার পর তিরিশে আসতে আসতে অর্ধেক চুল সফেদ। তা ছাড়া সাম্যের চেহারায় এতটুকু মেদ নেই যে! নেয়াপাতি ভুঁড়ি, পঁয়তিরিশের পর বাঙালি শরীরের স্বাভাবিক অঙ্গ, তা থেকে সাম্য এখনও শত হাত দূরে বলেই মনে হয়। পাশাপাশি, এটাও বলতে হবে, সাম্য নীরোগ, অন্তত নানা সময়ে তাকে জেরা করে এমনই জেনেছে সুরেলা। রোজ সকালে সে হাঁটে, অন্তত পাঁচ কিলোমিটার। মদ খায় না, এমনকি সুরেলা এক দিন একটা পার্টিতে শত অনুরোধেও তাকে এক ফোঁটা মদ্য পান করাতে পারেনি। তখন একটু বিরক্ত হলেও, পরে তুমুল খুশিই হয়েছিল সে। ছেলেদের মদ খাওয়াটা সুরেলা একেবারে পছন্দ করে না, আর-পাঁচটা মেয়ের মতোই, কিন্তু কখনও সখনও খেলে কি হয়েছে? সুরেলার এর বিরুদ্ধে যুক্তি রয়েছে পোক্ত-- প্রথমে ছেলেরা বলে অকেশনালি মদ খাই, তার পর সপ্তাহে দু'-তিন দিন। তার পর সাত দিনই। তার পর মদ খেয়ে বাড়ি ফিরে বাওয়াল। ক্রমে পরিস্থিতি সঙ্গীন। বিবাহিত হলে, বউ পেটানো। কে না জানে মদ এই ভাবে সুচ হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বেরিয়ে আসে। কোথাকার লাল জল কোথায় গড়িয়ে যাবে কেউ বলতে পারে না। সে দিক থেকে সাম্য তো একেবারে উল্টো মানুষ একজন। এটাই যেন প্রেমের লাইট পোস্টটাকে বেশ পাকা করে দিচ্ছে। তাতে ভেপার ল্যাম্পও জ্বালিয়ে দিয়েছে। নীচে অ্যাসফল্টের রাস্তায় সুট-সুট করে ঝকমকে গাড়িগুলো বেরিয়ে যাচ্ছে, তারা ফুটপাত ধরে হাঁটছে। রা-লা-রা-লা… লা-লা-লা… করে গান গাইছে। আহ, এই ছবিটা মাঝেমধ্যেই সুরেলার মনের পর্দায় ভেসে ওঠে। খুব আরাম হয়।… সাম্যব্রতর অবশ্য একটাই দোষ। সেটা হল দেরি করে আসা। অপেক্ষা করতে করতে পা টনটন মাথা ভনভন করে ওঠে। আবার এমনও হয়েছে কখনও, আসেইনি। বার বার ফোন করলেও ধরেনি। পরে যখন দেখা হয়েছে, হা-হা করে হেসেছে। সহজ ভাবে বলেছে, একটা কাজ পড়ে গেছিল বেবি। তার পর, একটু দার্শনিক গলায়, শোনো প্রতীক্ষা প্রেমকে আরও মজবুত করে তোলে। প্রতীক্ষা তো প্রেমেরই একটা পরীক্ষা।… কিন্তু সুরেলা কোনও দিন দেরি করে আসতে পারেনি। যে সময়টা ঠিক হয় অ্যাপোর, একেবারে ঘড়ি ধরে সেই সময়তেই চলে আসে। কত বার ভেবেছে অন্তত একবার দেরি করে আসবে, পারেনি। নিজের অভ্যাস সে বদলাতে পারেনি।… আজকে এই কফিহাউজের সামনে চারটে নাগাদ ডেটিং ছিল। এখন ছ'টা বেজে গিয়েছে, তার কোনও পাত্তা নেই। এখন আর বেশি ফোন করে না সুরেলা। এক বার-দু'বার করে থেমে যায়। আজ বার তিনেক ফোন করেছে সাম্যকে, যথারীতি ধরেনি। সুরেলা ফোন ঘাঁটছে লাগাতার। সময়টা কাটাতে হবে তো! গুগল করে পড়ছিল পয়লা বৈশাখ নিয়ে। কত লোক লিখেছেন এ সম্পর্কে। এক জায়গায় লিখেছে সংবাদ প্রভাকর-এর সম্পাদক ঈশ্বর গুপ্তই নাকি প্রথম ঘটা করে নববর্ষ পালন শুরু করেছিলেন। সুরেলা এমবিএ করেছে। সাহিত্য নিয়ে তার পড়াশোনা বেশ কম। এখন অবশ্য় সে অনেক গল্প উপন্যাস পড়ে। কবিতাও পড়ে। তবে এই সময়ের সব কবিতা সে বুঝতে পারে না। কবিতাটা পড়তে হয় সাম্যব্রতর জন্য। কারণ সাম্য খুব কবিতা পড়ে, লেখেও। তবে ছাপতে দেয় না। তাকে নিজের লেখা শোনাতেও চায় না। এই পাঁচ বছরের প্রেমপর্বে, বার তিনেক মাত্র সাম্য নিজের লেখা শুনিয়েছে তাকে। যা হোক, ঈশ্বর গুপ্ত সম্পর্কে তেমন কিছু জানে না সুরেলা। তাই গুগলে ঈশ্বর গুপ্ত সার্চ করল সে। উইকিপিডিয়ায় দেখল বাংলায় বেশ বড়সড় লেখা আছে একটা। দ্রুত পড়তে শুরুও করল। ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের জন্ম ১৮১২ সালের ৬ মার্চ, মৃত্যু ১৮৫৯ সালের ২৩ জানুয়ারি।… আরে ২৩ জানুয়ারি এই মানুষটা মারা গিয়েছিলেন, অথচ নেতাজির জন্মদিন তো। নেতাজির ছায়ায় ঈশ্বর ঢাকা পড়েছেন জানুয়ারির ২৩শে। বাহ বেশ ভেবেছে তো সে, নিজের পিঠ চাপড়ে দিল সুরেলা। এটাকেই বলে গল্প-উপন্যাস পড়ার ফলাফল। ঈশ্বর গুপ্ত যে গুপ্ত কবি হিসেবে পরিচিত ছিলেন, জেনে তার বেশ মজাই লাগল। অদ্ভুত নাম না-- গুপ্ত কবি! জন্ম কাঞ্চনপল্লিতে। আবার সে অবাক-- জানতে পারল কাঞ্চলপল্লি উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচড়াপাড়ার আগেকার নাম। পড়ে যেতে থাকে সুরেলা। জেনে কষ্টও হল যে, গুপ্ত কবির দশ বছর বয়সেই মা মারা যান। জোড়াসাঁকোয় মামাবাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তার পর। প্রথাগত পড়াশুনো তাঁর হয়নি। কিন্তু প্রতিভা এমন, কিছুতেই গুপ্ত থাকে না। নিজের চেষ্টায় শেখেন বাংলা, সংস্কৃত, ইংরাজি। এর পর সংস্কৃত কলেজের অধ্যাপক প্রেমচন্দ্র তর্কবাগীশের প্রেরণায় এবং যোগেন্দ্রমোহন ঠাকুরের অর্থে ১৮৩১ সালে প্রকাশ করেন সংবাদ প্রভাকর। সাপ্তাহিক পত্রিকা ছিল সেটি তখন। তার পর যোগেন্দ্রমোহন ঠাকুরের মৃত্যুতে পত্রিকা বন্ধ হল। পরে ফের চালু হয়, ১০ অগস্ট ১৮৩৬ সালে। এর পর, পাথুরিয়াঘাটার ঠাকুররা এই পত্রিকায় ফের হস্ত উপুড় করলেন, ১৮৩৯ সালের ১৪ জুন থেকে সংবাদ প্রভাকর দৈনিক পত্রিকা হিসেবে প্রকাশিত হতে থাকে। এটিই ছিল বাংলার প্রথম দৈনিক কাগজ। উইকিপিডিয়া থেকে বেরিয়ে গেল সুরেলা।

নাহ, আর পারা যাচ্ছে না। কত ক্ষণ আর এই ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। কলেজ স্ট্রিটে সন্ধে ঘনিয়ে উঠছে। কথা ছিল কফিহাউজে এক কাপ কফি খেয়ে, একটা ট্যাক্সি করে সোজা তারা চলে যাবে মিলেনিয়াম পার্কে। তার পর সেখান থেকে যাবে কোনও একটা রেস্তোরাঁয়। ডিনার সারবে। নাহ আজ আর সে সব কিচ্ছু হবে না। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই সময়টা চলে গেল। মনে হচ্ছে আজ আর আসবে না। পয়লা বৈশাখের দিন এই ভাবে কথা দিয়ে এল না। কেমন একটা কান্না পেল সুরেলার। চোখে জল ভরে গিয়েছে বুঝতে পারল। মোবাইল ফোনটাকে আর সে দেখতে পাচ্ছে না। ঝাপসা হয়ে গিয়েছে। ঠিক এই সময় ফোনটা ভাইব্রেট করে উঠল। বাঁ-হাত দিয়ে চোখটা মুছে নিয়ে সুরেলা দেখল, নম্বর একটা, নাম নেই। সাধারণত সে নম্বর দেখলে ধরে না। আবলতাবল সব ফোন আসতে থাকে। মটকাটা গরম হয়ে যায়। কিন্তু এটা সাম্যব্রতর ফোনও তো হতে পারে! হয়তো অচেনা কোনও নম্বর থেকে ফোন করছে তাকে চমকে দেওয়ার জন্য। কিংবা কোনও ঝামেলা হয়েছে ওর। সুরেলা ফোনটা ধরতে অচেনা গলা। গলাটায় সুর আছে, কিন্তু একটু ভাঙা ভাঙা যেন।
-- কী অনেক ক্ষণ তো অপেক্ষা করছেন?
-- হ্যাঁ, মানে… কে আপনি?
-- কে আমি… হা-হা-হা… বলুন তো কে?
-- না, বুঝতে পারছি না একেবারে, গলাটা অ্যাবসোলিউটলি আননোন। কিন্তু আপনি জানলেন কী করে আমি অপেক্ষা করছি?
-- আমি সবই জানি ম্যাডাম। আমি যে ঈশ্বর!
-- ঈশ্বর, কী ভুলভাল বকছেন! ক'পেগ খেয়েছেন বলুন তো? আর আমাকেই বা বিরক্ত করছেন কেন? জানলেনই বা কী করে আমি কারও জন্য অপেক্ষা করছি!
-- বয়ফ্রেন্ড বলেন তো আপনারা, সে বড় বিষম বস্তু।… শুনুন আপনাকে বেশি আপনি আপনি বলতে পারব না, কারণ তুমি আমার থেকে শতাব্দীরও বেশি ছোট, তাই…। প্রেম করে নিজের বিপদ নিজে ডেকে এনেছ এটা বলতে পারি। তোমরা জানবে না, আমিই লিখেছিলাম, কালগুণে এই দেশে বিপরীত সব। / দেখে শুনে মুখে আর নাহি সরে রব।।/ এক দিকে দ্বিজ তুষ্ট, মোল্লাভোগ দিয়া।/ আর দিকে মোল্লা বসে মুর্গি মাস নিয়া।।… সে প্রেম আর নেই, সে দিন কবেই গিয়েছে।
-- আপনি কে বলুন তো, কে আপনি?
-- আমাকে নিয়ে শিবনাথ শাস্ত্রী তার 'রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ' পুস্তকে লিখেছেন, '… ১৮৮৬ সালে ঈশ্বরচন্দ্র 'পাষণ্ড-পীড়ন' নামক এক পত্রিকা বাহির করেন। 'ভাস্কর' পত্রের সম্পাদক গৌরীশঙ্কর তর্কবাগীশ মহাশয় কর্তৃক প্রকাশিত 'রসরাজ' পত্রের সহিত কবিতাযুদ্ধ ও গালাগালি করা ওই 'পাষণ্ড-পীড়ন'-এর প্রধান কার্য হইয়া ওঠে।' কী অশ্লীল রচনা। ছিঃ। আমার সম্মান একেবারে ধুলিস্যাৎ করে দিয়েছে ছোকরা শিবনাথ। ওর পিতামহ আমার পরম সুহৃদ ছিল। দৈনিক রূপে যখন সংবাদ প্রভাকর প্রকাশিত হতে শুরু করল তখন সে, মানে হল গিয়ে হরচন্দ্র ন্যায়রত্ন আমায় অনেক সহায়তা করেছিল। তার ছেলেটি ছিল দুর্দান্ত, দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ। হরচন্দ্ররা কোথায় থাকত জানো না নিশ্চয়? ২৪ পরগনার চাংড়িপোতায়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার এই অঞ্চলটির এখনকার নাম সুভাষগ্রাম। সেখানেই তো তোমার বয়ফ্রেন্ডের বাড়ি তাই না?
-- মানে আপনি বলতে চাইছেন, আপনি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত? ভগবান আমায় রক্ষা করো! ইনি এমনকি আমার বয়ফ্রেন্ডের বাড়িটা কোথায় তাও জেনে বসে আছেন।
-- বিশ্বাসে মিলায় বস্তু। কিন্তু ওই শিবনাথ আমায় নিয়ে যা লিখেছে, তা নির্জলা ভাবে আবার বিশ্বাস করে বসো না। আর শোনো, জেনে রেখো পয়লা বৈশাখ, মানে নববর্ষ আমার হাতেই জাতে উঠেছে, এই দিনে আমার পুজো করা উচিত। তুমি আমার অনেক কথা পড়লে যন্তরটায়, সেই দেখে তোমার সঙ্গে যোগাযোগ করলাম। আমি তো এ দিন ঘুরে বেড়াই বাংলার বাতাসে বাতাসে। তা ছাড়া আমার প্রিয় বান্ধব হরচন্দ্রের ঠিকানা চাংড়িপোতার সঙ্গে তোমার বয়ফ্রেন্ডের…
-- নাহ ভাবতে পারছি না কিছু। জাস্ট ভাবতে পারছি না। এ হয় না। এটা ইলিউশন। স্রেফ…
-- এর পরেরটা আরও ভাবতে পারবে না মা-জননী!
-- কী ভাবতে পারব না… কী…
-- শোনো তোমাকে যেমন ভাবে বলব এগিয়ে যাবে…
-- কোথায় যাব?
-- প্রশ্ন কোরও না, যে পথ বলছি, এগিয়ে যাও-- ভয় নেই…
কী ভেবে সুরেলা বলল, ঠিক আছে। নিন, বিশ্বাস করলাম।
-- সোজা চলো তা হলে…
ঈশ্বর গুপ্তের নির্দেশ মতো সুরেলা এগিয়ে চলল। খানিকটা এগিয়ে একটা ছোট রেস্তোরাঁয় গিয়ে পৌঁছাল সে। ঢুকতেই দেখল, একটু ভিতরের দিকে বসে রয়েছে সাম্যব্রত। ঈশ্বর বলল, সুরেলা ঠিক পিছনে গিয়ে দাঁড়াও, দেখা দেবে না, ও কিছু বলছে শোনো আগে।
সেই মতো এগিয়ে যেতেই সুরেলা শুনতে পেল, প্রচণ্ড উত্তেজিত হয়ে সাম্যব্রত বলছে, সুরেলা বুঝতে পারছ তো প্রেম করার কষ্টটা কী। অপেক্ষা করতে হবে সুরেলাকে। ওকে দাঁড় করিয়ে রাখতে আমার ভাল লাগে বড্ড। বিশ্বাস করো, আনন্দ পাই।
সাম্যব্রতর সামনে টেবিলে এক কাপ চা রাখা। সামনের দিকে তাকিয়ে সে এমন ভাবে কথা বলছে যেন কেউ বসে আছে। কিন্তু কেউ নেই-- ফাঁকা।

ফোনে নির্দেশ এল, এবার সামনে যাও সুরেলা। গিয়ে বসো। সে নির্দেশ মেনে গিয়ে বসতেই সাম্য হকচকিয়ে গেল একেবারে।
-- একি তুমি, একি, এখানে… দাঁড়িয়ে না থেকে চলে এসেছ! এটা কী করে সম্ভব, আজ পয়লা বৈশাখ একটা পবিত্র দিন। আজকের দিনে তুমি হেরে গেলে সুরেলা। ইউ আর ডিফিটেড।
সুরেলা তখন হাউ-হাউ করে কাঁদছে। ঈশ্বরের ফোনটা কেটে গিয়েছে।

Bengali Literature poila baisakh Bengali New Year Bengali Short Story
Advertisment