Advertisment

হাজার বর্গফুট জুড়ে শুধুই বাংলা বই

হাজার বর্গফুট আয়তনের দুটি ঘরে শুধু যে বইয়ের দেখা মিলবে এমনটা নয়, থাকছে বাংলায় লেখা টি-শার্ট থেকে শো পিস, ও সংযোজন হিসাবে বিভিন্ন ধরণের বুকমার্ক।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

কোণঠাসা বাংলা ভাষাকে মর্যাদা দিতে বাংলা সাহিত্যের নতুন ঠিকানা তৈরি করলেন প্রীতম সেনগুপ্ত। সেলেব দলের কেউ নন ইনি। তবে বাংলা ভাষা পড়তে এবং পড়াতে চান প্রীতম। তাই সম্প্রতি বইপিপাসুদের নতুন হদিশ দেখাবে তাঁর ‘রিড বেঙ্গলি বুক স্টোর’।

Advertisment

৪২এ, সর্দার শঙ্কর রোড। লেক মলের বাঁ পাশ দিয়ে গিয়ে চারুচন্দ্র কলেজের কাছে এই বইয়ের দোকান। যার আদ্যোপান্ত জুড়ে আছে বাংলা ভাষা। হাজার বর্গফুট আয়তনের দুটি ঘরে শুধু যে বইয়ের দেখা মিলবে এমনটা নয়, থাকছে বাংলায় লেখা টি-শার্ট থেকে শো পিস, ও সংযোজন হিসাবে বিভিন্ন ধরণের বুকমার্ক।

নামীদামি প্রকাশক, তাবড় তাবড় লেখকদের বই, রকমারি স্বাদের জিনিস মিলবে একই ছাদের তলায়। শুধু তাই নয়, এই বুক স্টোরের উদ্যোক্তা জানিয়েছেন, বাংলা ভাষার প্রতি নতুন প্রজন্মের যে অনীহা তৈরি হয়েছে, সেটা কেন এবং তা কীভাবে দূর করা যাবে, কীভাবে ভাষায় ও চেতনায় বাঙালিয়ানাকে জাগিয়ে তোলা যাবে, তার দিশা খুঁজে বার করার জন্য গবেষণাও চলবে এখানে।

আরও পড়ুন: ভবানীপুরের স্ট্রীট লাইব্রেরী: যেখানে পথের ধারেই বইয়ের বাসা

যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রয়েছে অনলাইন বই কেনার সুবিধাও। অর্থাৎ দক্ষিণ কলকাতা অবধি এসে পৌঁছতে না পারলে অনলাইনেই কিনে ফেলতে পারবেন আপনার পছন্দের বইটি। তার জন্য চলে যান রিড বেঙ্গলি বুক স্টোরের নিজস্ব ওয়েবসাইটে। এখানে পছন্দমতো লেখকের নাম বেছে নিলেই হাতের সামনে পাবেন তাঁর যাবতীয় বই। ৩০০ টাকার উর্দ্ধে হলে অতিরিক্ত ডেলিভারি চার্জেও মিলবে ছাড়।

কাঠের লম্বা জানলা, এক চিলতে রোদ এসে পড়বে টেবিলের ওপর, ঘড়ঘড় ফ্যানের শব্দ, সর্দার শঙ্কর রোড দিয়ে হাঁক দিয়ে চলে যাবে একের পর এক হকার, ফেরিওয়ালা। টেবিলে রাখা থাকবে রাজ্যের বই। দুটো ঘরের দেওয়াল জুড়ে ২৫ হাজারের বেশি বইয়ের ভীড়। জানালার ধারে বসে ঘাড় ঘোরালেই চোখে পড়বে দেওয়াল জুড়ে আঁকা ছোট্টবেলার টেনিদা, ঘনাদা, পাগলা দাশুর কার্টুন। তাক জুড়ে থাক থাক সাজানো রয়েছে চে গ্যেভারা, সত্যজিৎ, রামায়াণ, মহাভারত। না চাইতেই মুখের কাছে জল চা বিস্কুটের ব্যবস্থা থাকবে গলা ভেজানোর জন্য।

publive-image টেনিদা, হর্ষবর্ধন-গোবর্ধন, আরও কত কে

কর্ণধার প্রীতমের কথায়, "এরকম ফরম্যাটের স্টোর কলকাতায় ছিল না। বাংলা বইয়ের দোকান অনেক থাকে। কিন্তু বাঙালিয়ানাও থাকবে, এমন একটা জায়গা যদি করা যায় তাহলে কেমন হবে, এই ভাবনা থেকেই শুরু।" তিনি আরও বলেন, "এখানে বাচ্চাদের বই পড়ানো নিয়ে অনেক ওয়ার্কশপের প্ল্যানও আছে। সাহিত্য শুধু পড়ার নয়। সাহিত্য আসলে একটা অভ্যেস। আর বাংলা সাহিত্য হল বাঙালির আশ্রয়। তবে এই আশ্রয় চিনে নেওয়ার চোখ সবার তৈরি হতে পারেনি, কারণ সাহিত্য নিয়ে শুধু ব্যবসাই হয়ে এসেছে আবহমান কাল।" রিড বেঙ্গলি বুকস-ও অনলাইন ডেলিভারির ব্যবসাই শুরু করেছিল। তবে প্রীতম স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন একটা কথা। শুধু বাংলা বই-ই থাকবে তাঁর সংস্থার ডেলিভারি তালিকায়।

সোমবার দোকানের উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন লেখক-গায়ক অনুপম রায় ও পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। ফিতে কেটে স্টোরে পা রাখতেই প্রথমেই অনুপম হাতে তুলে নেন সমরেশ মজুমদারের 'উত্তরাধিকার'। এই স্টোরের একটি কোণ বেছে নেওয়া হয়েছে তাঁর লেখনীর জন্য।

publive-image গায়ক অনুপম কে তো চিনতেন, লেখক অনুপমকে কি চিনতেন?

রিড বেঙ্গলি বুক স্টোরে এদিন তিনি ছিলেন লেখক অনুপম রায়। যাঁরা অনুপমের ডাই হার্ড ফ্যান, তাঁরা হয়ত এই পরিচয়টা সম্পর্কে অবগত ছিলেন, কিংবা ছিলেন না। এতদিনে প্রকাশ পেয়েছে তাঁর লেখা বেশ কিছু বই, যেমন 'সময়ের বাইরে', 'ছোঁয়াচে কলম', 'মন ও মেজাজ', এবং এবারের প্রথম সংখ্যা 'জলফড়িং'। তিনি জানান, সময়ে অসময়ে তাঁর সঙ্গী বই, তিনিও বইপিপাসু। কাজেই ভাললাগার লেখক এবং ভাললাগার লেখা, দুইয়ের মেলবন্ধন হয়েছে রিড বেঙ্গলি বুক স্টোরে। সময় বের করে অনায়াসে ঢুঁ মারতে পারেন আপনিও।

ANUPAM ROY
Advertisment