রোদ্দূর রায়ের প্রথম বাংলা উপন্যাস শুক্রবার প্রকাশ পেল দক্ষিণ কলকাতার এক আর্ট গ্যালারিতে। এদিনের অনুষ্ঠানের শুরুতে নিজেকে দর্শককুলের কাছে পরিচয় করিয়ে দেন লেখক স্বয়ং। প্রাথমিক কথোপকথনে শ্রোতাদের মধ্যে থেকে উঠে এসেছিল রবীন্দ্রনাথ প্রসঙ্গ। জিজ্ঞাসা ছিল, তিনি রবীন্দ্র বিরোধী কিনা। এ প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে রোদ্দূর রায় বলেন, ব্যক্তিগত পরিচিতি না থাকলে অসম্মান করা যায় না। "কেউ যদি আমার বই ছিঁড়ে ফেলেন, তাহলে তিনি আমাকে অসম্মান করছেন বলে আমি মনে করি না। আমি রবীন্দ্রনাথকে আমার মত করে গাইছি, তাতে কেউ যদি মনে করেন, রবীন্দ্রনাথকে অসম্মান করা হচ্ছে, তাহলে সে ভাবনা তাঁর। আমি রবীন্দ্রনাথকে অসম্মান করছি কিনা তা তিনি বলে দিতে পারেন না।"
সাহিত্যে ও শিল্পে অশ্লীলতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "এক শ্রেণির মানুষ সম্পদহীনতার কারণে ভাল করে বাঁচতে পারছেন না, আরেক দল মানুষ বিলাসব্যসনে বাঁচছেন, সমাজের পক্ষে এটাই চূড়ান্ত অশ্লীলতা। এনআরসি করে লোকজনকে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে বলা হচ্ছে, তাতে একদল লোক খুশি। কেউ কেউ আবার বলছে, হ্যাঁ ওদের তাড়িয়ে দিলে আমরা ভাল থাকব। আমার এটাকে মনে হয় সব থেকে বেশি অশ্লীল।"
অভিনেতা নির্দেশক জয়রাজ ভট্টাচার্য, প্রকাশক সৌরভ মুখোপাধ্যায় ও রোদ্দূর রায়
এদিনের বই প্রকাশ অনুষ্ঠানের অন্যতম বক্তা অভিনেতা ও নাট্য নির্দেশক জয়রাজ ভট্টাচার্য বলেন, "ইতিহাসের যে পুনরাবৃত্তি প্রথমবার ট্র্যাজেডি ও পরেরবার প্রহসন হয়ে ওঠে, তাকে যদি স্মরণে রাখা যায়, তাহলে এখন যা ঘটছে, তা সপ্তম বা অষ্টমবারের পুনরাবৃত্তি। ফলে এই পুনরাবৃ্ত্তির ভাষ্য রচনা করতে গেলে তা প্রহসন হবে না, 'খিল্লি' হয়ে যাবে।" জয়রাজের মতে, তেমনটাই ঘটাচ্ছেন রোদ্দূর রায়।
রোদ্দূরে নিজেই এদিন শ্রোতাদের জানালেন, তাঁর প্রথম সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলায়। এদিনের অনুষ্ঠানে শ্রোতাদের মধ্যে হাজির ছিলেন সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষ, বাংলা পক্ষের গর্গ চট্টোপাধ্যায়। মূলত তরুণ প্রজন্মের সামনে রোদ্দূর একটি গানও গাইলেন। সঙ্গে বাজালেন উকুলেলে।
সপ্তর্ষি প্রকাশন থেকে প্রকাশিত মোক্সা রেনেসাঁ বইটির একটি অংশ পাঠও করেন তিনি।
আলতামিরা আর্ট গ্যালারিতে একইসঙ্গে এদিন শুরু হল রোদ্দূর রায়ের আঁকা ছবির প্রদর্শনীও। এই ছবিগুলি মূলত তেলরং ও অ্যাক্রিলিকে আঁকা। প্রদর্শনী চলবে আগামী রবিবার পর্যন্ত।