রুশ হামলায় ত্রস্ত ইউক্রেন, শুধু একটু বাঁচার আশায় প্রাণ নিয়ে ছুটে বেড়াচ্ছেন সকলে। আজকে রোমানিয়া তো কালকে পোল্যান্ড - ইতিমধ্যেই বাড়ি ফিরেছেন ভারতের অনেক নাগরিক তথা পড়ুয়ারা। এদিকে কলকাতা বইমেলায় প্রতিবারের মতো এবারেও রয়েছে বিভিন্ন দেশের স্টল, তার মধ্যে রাশিয়ার বইয়ের স্টলও রয়েছে। রাশিয়ান ভাষার পুস্তকের সম্ভার এবং বেশ কিছু ইংরেজি অনুবাদের সম্ভার দেখা গেল সেখানে। তবে আন্তর্জাতিক স্তরে যখন রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে সরগরম চারিদিক, তখন এই দেশে বসে থেকে সেখানকার নাগরিকদের মনের অবস্থা ঠিক কী?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সদস্যকে জিজ্ঞাসা করতেই, ভ্রু নামিয়ে আতঙ্কের বার্তাই তিনি দিলেন। তাহলে কি অজানা কোনও ভয়? তিনি বললেন, "যেই সময় থেকে এই যুদ্ধ শুরু হয়েছে তাঁর বেশ কিছুদিন আগে থেকেই আমি কলকাতায়, বইমেলা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। প্রথম কথা, যে সেখানে আসলে কী হচ্ছে, সেই নিয়ে সঠিক তথ্য আমরা পাচ্ছি না, রাশিয়ান সংবাদ দেখা হয়ে ওঠে না আর। শুধু এটুকু জানি, আমার পরিবার ওখানে আছে। মা, ভাই সকলেই আছে, তাঁদেরকে নিয়ে চিন্তায় আছি, সবথেকে খারাপ লাগছে- চাইলেও ওদের সাহায্য করতে পারব না, সেই ক্ষমতা এখন নেই। পরিবার সকলের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ, কে না ভয় পায়!"
তাহলে কি সরকারের ওপর ভরসা রাখছেন? সেই সদস্যের বক্তব্য, "সরকার যাই-ই করে নিজেদের রাজনৈতিক মতাদর্শকে ভিত্তি করেই করে। যখন ওই দেশের নাগরিক তখন একটু হলেও ভরসা তো রাখতেই হবে। আর কোনও উপায় নেই…রাশিয়া বেশ উন্নত একটি দেশ, এর সংস্কৃতি, শিল্প বেশ উন্নত- অনেকেই আছেন যাঁরা রাশিয়াকে নিয়ে গবেষণা করতে ভালবাসেন, মস্কোতে পড়াশোনা করতেও যান…এখন দেশের উপর আস্থা রাখা ছাড়া আর কিছুই নেই।"
যুদ্ধ বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন? বললেন, "কোনওভাবেই একে সমর্থন করার প্রশ্নই ওঠে না। প্রভাব বিস্তার করার কোনও অর্থ নেই…সেই দেশেও কারওর পরিবার রয়েছে, অনেক অন্য দেশের মানুষ রয়েছেন, তাদের পক্ষে সত্যিই কষ্টের বিষয়। অনেকেই খাবার পাচ্ছেন না, ঘরবাড়ি হারাচ্ছেন - যেন এক ভয়ঙ্কর পরিবেশ।" তবে কলকাতা বইমেলার সদস্যরা একটাই দাবি করছেন, অন্যদেশে বসে থেকে এমন এক সুন্দর মুহূর্তে যতটা সম্ভব যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা না করলেই ভাল। সময়ের সঙ্গে যা হবে দেখা যাবে। কিন্তু যুদ্ধ কোনও সমাধান নয়।
একথা পরিস্কার তাদের কথায় বোঝা গেল, দেশের এই কর্মকাণ্ড নিয়ে বিস্তারিত ভাবে মুখ খুলতে তারা নারাজ। কিছু মাত্রায় হলেও আশঙ্কা কাজ করছে, এবং দুই দেশের পরিবারকে নিয়েই আতঙ্কে তাঁরা।