অলচিকিতে সংবিধানের অনুবাদ করে নজির, মোদীর প্রশংসা কুড়োলেন সাঁওতালি অধ্যাপক

'মন কি বাত' অনুষ্ঠানে অধ্যাপক টুডুর প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

'মন কি বাত' অনুষ্ঠানে অধ্যাপক টুডুর প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
professor

সাঁওতালি ভাষায় ভারতের সংবিধান অনুবাদ করা। অধ্যাপক শ্রীপতি টুডুর মাথায় এই ইচ্ছাটা অনেকদিন ধরেই ছিল। বিশ্বের দীর্ঘতম (২৩৫ পাতার) লিখিত সংবিধান। তার অনুবাদ চাট্টিখানি কথা নয়। তবুও অধ্যাপক টুডু কাজে লেগে পড়েন। শুরু করে দেন, সাঁওতালি ভাষায় ভারতীয় সংবিধানের অনুবাদ।

Advertisment

তাঁর কথায়, 'সংবিধানের ভিত্তিতে দেশ চলে। কিন্তু, সাঁওতাল সম্প্রদায় নানা ক্ষেত্রের মত এক্ষেত্রেও বঞ্চিত। সংবিধানে কী লেখা আছে, তা তাঁরা জানেন না। তাঁরা যাতে তাঁদের অধিকার কী, বিধান কী কী এবং সংবিধানের বইয়ে কী লেখা আছে তা জানতে পারেন, সেজন্যই সংবিধান সাঁওতালি ভাষায় অনুবাদ করেছি।'

আর, এই কারণে সাম্প্রতিক 'মন কি বাত' অনুষ্ঠানে অধ্যাপক টুডুর প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। বর্তমানে এই সহকারি অধ্যাপক পুরুলিয়ার সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাঁওতালি ভাষা পড়ান।

২০০৩ সালে, ৯২তম সাংবিধানিক সংশোধনী অনুযায়ী, সাঁওতালি ভারতীয় সংবিধানের অষ্টম তফসিলিভুক্ত হয়েছে। যা বোড়ো, ডোগরি ও মৈথিলি ভাষার সঙ্গে সাঁওতালিকেও ভারতের সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এর ফলে ভারত সরকার সাঁওতালি ভাষার বিকাশের জন্য সচেষ্ট হতে বাধ্য হয়েছে। স্কুলস্তরের পরীক্ষায় এবং সরকারি চাকরির পরীক্ষায় সাঁওতালি ভাষাকে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়েছে।

Advertisment

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, ভারতে ৭০ লক্ষ মানুষ সাঁওতালি ভাষায় কথা বলেন। সাঁওতালি সম্প্রদায় দেশের তৃতীয় বৃহত্তম উপজাতি। পশ্চিমবঙ্গ-সহ সাতটি রাজ্যে সাঁওতালি মানুষের বসবাস। প্রতিবেশী ওড়িশা এবং ঝাড়খণ্ডেও বহু সাঁওতালি মানুষ রয়েছেন। শুধু ভারতেই নয়, সাঁওতালি সম্প্রদায় ছড়িয়ে আছে বাংলাদেশ, ভুটান এবং নেপালেও।

আরও পড়ুন- দিল্লিতে গ্রেফতার কেজরির মন্ত্রী, আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগ

সাঁওতালি ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি নতুন কিছু নয়। এই দাবি দীর্ঘ কয়েক দশকের। শেষ পর্যন্ত সংবিধানের অষ্টম তফসিলে সাঁওতালির সংযোজন এই ভাষা এবং সাঁওতালি সম্প্রদায়কে স্বীকৃতি দিয়েছে। বিশেষ সুযোগ এনে দিয়েছে।

অধ্যাপক টুডু বলেন, 'অষ্টম তফশিলে যুক্ত হওয়ায় এই ভাষার চাহিদা এবং ব্যবহারের সুযোগ সত্যিই বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারি স্কুলে সাঁওতালি ভাষা পড়ানো শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে, আমরা একটি সাঁওতালি একাডেমিও পেয়েছি।'

২০০৫ সাল থেকে ভারতের সাহিত্য আকাদেমি সাঁওতালি ভাষায় অসামান্য সাহিত্যকর্মের জন্য প্রতিবছর পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের সূচনা করেছে। এটি এমন একটি পদক্ষেপ, যা সাঁওতালি সম্প্রদায়ের সাহিত্য সংরক্ষণের ব্যাপারে প্রশাসনকে উত্সাহিত করছে।

Read full story in English

Constituition of India Sahitya Akademi Awarad Mother Language