---মিঞা। পট নাচনের কাম ছাড়ো । প্যাট চলে না। সব যায় শহর পানে। চলো মিঞা। আমরাও যাই গিয়া।
---তুই কস কি বিবি? পট গায়েন করব ওই কল কারখানার কাজ? আমরা না সয়দাগরের বংশ?
----রাহ তোমার সওদাগর! সে নদী নাই, নাও নাই--লোকের সময় নাই। গান গাইতে গ্যালে , লোক ভাবে ভিখারি। দূর দূর কৈরয়া খেদায়। মিঞা, চলো যাই গিয়া।
----বিবিরে! ওই দ্যাখ, আকাশ। রঙ দ্যাখ রঙ। তোর মাঠ ঘাট , নদীর চর ডুব্যা আছে রঙে। ওই রঙ পটুয়ার জীবন রে সাকিনা।
গনাই মিঞার গলায় হাহাকার উঠে আসে।
আকাশের সূর্য ,ভোরের থেকে বেলার দিকে ঢুলছে। মেলাই কাজ সাকিনার। তার জীবনআকাশ খর রোদে ভরা। রঙের চিন্হ মাত্র নাই।
কালো সাপের নাগিন শরীর ছিল সাকিনার। রাতের বেলা হিস হিস করে উঠত শরীর। তখন ছিল সুসময়। ছবি দেখে দেখে গান বলেন বাপ দাদা। গাজীর গান। হিন্দু মোছলমান --দুই বাড়িতেই দাপটের সঙ্গে , বুক চিতিয়ে , সঙ্গে তিন চার দোহার নিয়ে, ঢোল ধামসা নিয়ে ঢুকত তারা। লোক হাঁ করে শুনত গাজীর গান, গপ্প। চোখে উপছে পড়ত ভয়, ভক্তি।
সে দিন আর নাই। কেউ আর মানে না। অসুখ বিসুখ হলি, গাজীবাবার দ্বারস্থ হয় না। ডাক্তার হাসপাতাল যায়। সাকিনার শরীর আর তেল চিক্কন না। আজ সেখানে খসখস চামড়ায় খড়ি ওঠে। গলায় সুতোর সঙ্গে এক চৌকো মাদুলি। বাসন মাজতে মাজতে,চেরা গলায় বলে-
-খেদ রইল মনে । মিঞা, তুমি আমার কথা বুঝলা না। দ্যাখো ওই আসমানের রঙ নাই আর। পেটের ক্ষুধার জ্বালায় সব পোড়া অঙ্গার গ ।
গণাই বোঝে সব। বছর ভর পেট চালাতে অন্য কাজ কি করে না? করে। করন লাগে। সে বুদ্ধি তার আছে। তবে মন? তাকে শিকল পরানো যায় না। মন যেন বড় ঘরের ঝি চাকরের মত। কাজ করে রাজমহলে, মন পড়ে থাকে নিজের কুঁড়া ঘরে। গনাই মাঝে মাঝেই কুলুঙ্গী থেকে যত্নে নামায পট। তাকিয়ে থাকে, বাঘের পিঠে সওয়ার গাজীবাবার দিকে। ঘোর লেগে থাকে মুখ চোখে। বেদের রক্ত বইছে শিরা উপশিরায়। ভাটি অঞ্চলের তাবৎ মানুষের চোখে থাকত মুগ্ধতা। সে কি এমনি এমনি? হিম পড়লে, শীত পড়লে , চাষার ঘরে ধান উঠলে, বেরিয়ে পড়ত গাজীর আসা’ ( দন্ড) নিয়ে। “অদিনে গাজীর পট” --দেখান যাবে না বাপা। সময় দিন ক্ষণ--সব ঠিক রাখতে হয়। মান্নত পুরলে, হাত খুলে দিত চাষা। তারপরে সারা বছর ওসুদ পত্তর তাবিজ মাদুলি সাপ খোপের খেলা --এই দিয়ে চলে যেত জীবন। এখন সব গ্যাছে। স্বাধীন জীবনের সুখ যে কত সুন্দর-- তাঁবেদার মজুর লোক বুঝবে না। সাকিনার দিকে ফিরে গনাই বলে--
---আজ একবার বাইরণ লাগে। ঘোষবাবুর ছেইল্যা বিমার। গাজীবাবার গান শুনবে কয়। দেহি, যদি অসুক সারে। চাল দেবে। কাপড়ও দেবে।
উত্তরে বিড় বিড় করে সাকিনা-- “ পট নাচাইন্না মিঞা আমার। লোকে কুনো মান দেয় না। ভিখারি কয়। “
--কী কও বিবি? গাল পাড় নাকি?
--- গাল না মিঞা! মূহে জল দাও। পান্তা খাও। তাপ্পর যাও।
---হ হ। তাই করুম। ফিরতে রাত অইব।
সাকিনা নিঃশব্দে মাথা নাড়ে। আশে পাশে দু চার ঘর মুসলমান। সবার অবস্থাই সমান। পুরুষরা
কাজের খোঁজে গঞ্জে যায়। রেলের কুলিগিরি করে। কেউ গনাইয়ের মত পাগল না। সংবৎসর সংসার চালাতে কাজ করে গনাই, কিন্তু মন ? সে পড়ে থাকে ওই পটের দুনিয়ায়। গাজী বাবা! হে ই গাজী বাবা। মরদের মন ঘুরাইয়া ফেল --বিড় বিড় করে সাকিনা।
সংসারে পাঁচটা মুখ ছিল।তিনটে সন্তান। একটা মেয়ে। দুটো ছেলে। আর তারা দুই জন। মেয়ে বিয়ে করে পরঘরি। ছেলেদুটো ও বিয়ে করে পরঘরি। ঘরজামাই। শ্বশুরের জমি চাষ করে। সাকিনা ভাবে। পুকুরের জলে মিশে যায় চোখের পানি। মরদের উপর রাগ হয়। আবার ভালোবাসা জাগে। সে দেখেছে তার শ্বশুরের আমল। পীরগানের দাপরাপ। আজ সোয়ামীর বুকের চামড়ার নীচে হাড় কয়টা গোনা যায়, শুধু চোখ দুইটায় আলো জ্বলে। কিসের আলো বোঝে না সাকিনা। সে শুধু চায়, গনাই অন্য কাম ধরুক। প্যাটে গরম ভাত পড়ুক। পরনে কাপড়।
এক হাত চোখে তুলে সূর্যের তাপ দেখে গনাই মিঞা। খমক বাজনদার জমির আলী বেপারী, বাওয়া বাজান ওয়াজ আলী বেপারী --এরা দুই চ্যালা। আসতে চায়না। যেতি চায়না। হাতে পায়ে ধরে রাজি করায়। গাজীর পট হয় চৌকো পট। এই গান কোথাও লেখা নেই। বংশ পরম্পরা মুখস্ত করতে হয়। মাথায় পাগড়ি, গলায় তসবিহ বা মালা,হাতে চামর। চামর দুলিয়ে দুলিয়ে বাচ্চার গায়ে ঠেকান। অনেক দূরে ওই গঞ্জ। ধান চালের কারবার ঘোষবাবুর। পাকা বাড়ি। বউয়ের গা ভরা গয়না। সব থেকেও সুখ নেই। আজ তিনমাস হল মারণ ব্যাধিতে আক্রান্ত এক মাত্তর ছেলে। ডাক্তার কবিরাজ সব হল। দিনে দিনে ছেলে যেন মিশে যায় বিছানায়। গঞ্জের কে যেন গাজীবাবার মানত করতে বলে। ঘোষবাবু বলেন--
গাঁয়ে আর কেউ আছে না কি? গাজীর গান গায়? পট নাচায়?
----না কত্তা। প্যাটের দায়ে সব ছাড়ছে ওই কাম।”
--- তা বটে। ছোটবেলায় কত রমরমা দেখতাম। যেমন ছবি, তেমন গান। একটু চাল আলু পয়সা পেলেই খুশি। “ হুঁককা টানতে টানতে কত্তা বলেন।
---হ কত্তা। নাই বটে। কেউ কেউ গঞ্জের দোকানে কাম করে, কেউ চোর চক্কর হল। কিন্তু তব্বু আছে একজন।
---তাইলে খপর দাও। চিন্তায় রাতে ঘুম হয় না। ছেলের মা, ঠাকুমা বিছানায়। বাড়িতে রান্না বান্না বন্ধ।
---হ কত্তা।
---চোখের সামনে তিল তিল করে ছেলেটা মরতে বসেছে।
--হ কত্তা।
---কি হ কত্তা হ কত্তা করছ? তুমি নিজে বিশ্বাস করো ওই সব?
---কত্তা। গরীব মানুষ। বিশ্বাস হইল আমাগ ঘর বাড়ি। বিশ্বাসে নিশ্বাস । গাজীবাবা আছেন কি না, জানি না কত্তা। তবে একবার দেখতে দোষ কি?
---বাপ দাদাদের বিশ্বাস ছিল খুব। তা কারে খপর দিবা?
---কত্তা। গনাই মিঞা। তার দু চার স্যাঙ্গাত। সাঁঝের বেলা আইসবে ।
---যোগাড় যন্তর ঠিক আছে।
---আছে কত্তা। তেমন কিছু না তো। মা জননীর বসন লাগে একখান। ছোট কত্তা যেমন আছেন থাকুন। সব লোগ এই উঠানে বসবে কত্তা। চাল, কলা, আলুটা মুলোডা--জয় গাজীবাবা।
তিন লাফে মুন্সী পগার পার। নিস্তরঙ্গ জীবনে এই টুকুর দাম অনেক। গনাই মিঞা বুড়া হলেও, নাচের সময় কি যেন ভর করে। আর শেষে বাতাসা লুঠ হয়। ছেলে বুড়ার জীবনে এই টুকুই কম কি! কারণ যদিও দুঃখের। তবু মানুষ তার মধ্যেও টুকরো সুখ খোঁজে।
সাঁঝবেলায় , ঘোষকত্তাকে গড় করে দাঁড়াল গনাই। বয়স হলেও, পাকানো শক্ত ছিপছিপে চেহারা। গায়ের রঙ কুচকুচে কালো। মাথায় কাঁচা পাকা কোঁকড়া চুল। কপাল আর মুখ মাটির ফাটলের মত রেখাময়। পরণে একখান তালি মারা কালো আলখাল্লা, গলায় মালা, হাতে চামর। মাথায় পাগড়ি। চামর ছুঁইবে রোগা বাচ্চার শরীর। সেরে উঠবে সে। সঙ্গের চ্যালাদের হাতে ধামসা আর ঢোল। মাটি কেটে দরগার মত উঁচু করে রেখেছে এক জায়গায়। লেপেপুছে পরিষ্কার। তিনটে বাঁশ। দুটো লম্বা। একটা ছোট। তিনটার মাথায় লাল কাপড় বাঁধা।
হেই সব্ববিপদভঞ্জন পীর বাবার চরণে গড় হই গ--হেই ই ই----
টং টং টং -- টিন বাজে। ধম ধম ঢোলকে ঘা। পট খোলে ধাপে ধাপে। হলুদ শরীরে কালো ছাপের ডোরাকাটা বাঘের উপর বসে গাজী।
জয় হো গাজী পীর বাবা জয়
হো । খান্দুরা বাঘের জয় হো।
লাল হলুদ নীল রঙের পট, উঠোনে হ্যাজাকের আলোয় ঝলমল করে খুলতে থাকে।
আগেত জানিনা আল্লা গাজী ইমুন পির/ আগে দিতাম দুধ অ কলা পাছে দিতাম ক্ষির।
এবার আসে গাজীর ভাই কালু ও মানিক পীর। হাতের লাঠি দিয়ে পটের ছবি দেখিয়ে দেখিয়ে গান গায় আর নাচে। উঠোনের চারিধারে পাকা ঘরের দেওয়াল জুড়ে ভুতুড়ে ছায়া নাচে। পৌষের সন্ধ্যে,
জড়ো সড়ো ছেলে বুড়োর জুলজুল চোখে--ভয়, বিস্ময়, ভক্তি। রোগা ছেলের মা ঠাকুমা অন্য বউ ঝিরা --গলায় কাপড় দিয়ে বসে, বিশ্বাস বাতাস বইছে চরাচর জুড়ে --
হরদম গাজীর নাম লৈও
পাষাণ মনরে, হরদমে গাজীর নাম লৈও
দমে দমে লাইয় নাম , জিরানিনা দিয়
পাষাণ মনরে, হরদমে গাজীর নাম লৈয়।
পরথমে উত্তরে বন্দনা করি হিমালয় পর্বত
তার ওপরে নাইতো কোন মানুষের বসত
পূবদিকে বন্দনা করি সূজ্যিদেবীর পায়
একদিকেতে ওঠে সুয্যি চৌদিকে পর্ষায়
পশ্চিমে বন্দনা করি হজ্জ্ব মক্কার ঘর
সেইখানে নামাজ পড়লে বান্দার গুণা হয়রে মাপ।
চাইরদিকে বন্দনা করে আসর করলাম ঠিক
মন দিয়ে শোনাবেন আপনার
গাজী দুঃখের গীত।”
তুলসী মঞ্চ আর মক্কা মদিনা একাকার হয়ে ঘনিয়ে আসছে আঁধার।
চ্যালা ঢাকে ঘা দেয়, হাতের টিন বাজায়।
উঠোন জুড়ে জ্বল জ্বল করে তাজ মাথায়, সোনার খড়ম পায়ে, বাঘের উপর গাজী, দুই পাশে মানিক পীর ও কালু পীর। গাজী পীরের ভগ্নী লক্ষী, মকরের পিঠে গঙ্গা দেবী, একদম নীচে যমদূত , কালদূত, যমরাজের মা।
লাফিয়ে লাফিয়ে গাইতে থাকে গনা। আজ তুষ্ট হতেই হবে গাজীবাবাকে। ঘোষবাবুর সন্তান তারই সন্তান যেন। প্রাণ ঢেলে গায়। মনের হাহাকার, বঞ্চনা, অসুস্থের জন্য প্রার্থনা--সব একসঙ্গে উঠে আসে।
আশা হাতে তাজ মাথে সোনার খড়ম পায়
আল্লা আল্লা বলে গাজী ফকির হইয়া যায়।
সক্কলে মন্ত্রমুগ্ধ। উঠোন জোড়া লোক যেন পলক ফেলতে ভুল করে। গান শেষ হয় ধীরে ধীরে।
-এই পজ্জনত বইলা আমি ইতি দিয়া যাই।
আল্লায় বাঁচাইলে আবার আরেক দিন গাই।”
গাজী বলে বিমার ফতে হয়ে যাবে/ তামাম বান্দারা মোর শান্তিতে থাকিবে।।
উঠোন জুড়ে গাজী বাবার জয়ধ্বনি দিয়ে শেষ হয় পট নাচনের পালা। হিন্দু মুসলমান সমবেত ভক্তি জোয়ারে কোনো দুরাগত শক্তির আসন কি টলে? প্রার্থনার জোরে ঠিক হবে কি ঘোষবাবুর রোগে ভোগা ছেলে?
গান শেষে পট গোটাতে থাকে গনাই। এই শীতেও ঘেমে গেছে সে। সাকিনা তার বিবি রাজি হয়না আর পটের গান গাইতে দিতে। কি করে বোঝায় অবুঝ ম্যাইয়ামানুষ রে, এ শুধু প্যাটের তাগিদ না। মনের খুদা। বাপ দাদার আমলে ছিল গাজীর দোয়া। রমরমা বাজার। বাঘের পিঠে সওয়ার গাজী, তার গান গায় যারা, তাদেরও কি ই বা দাপট! বাম হাতে পট ধইরে, ডান হাতে দন্ড খানি--ধরে ধরে ছবিতে মারে টক্কা, আর ভক্তিতে করে প্রচার।
প্রতি গানের পরেই, গনাইএর বাপ ফজল মিঞা এক ঘূর্ণি পাক দিত শরীরে --
হরদম গাজীর নাম লৈও
পাষাণ মনরে হরদম গাজীর নাম লৈও
দমে দমে লইয়া নাম, জিরানীনা দিয়
পাষাণ মনরে, হরদমে গাজীর নাম লৈয়।’
এই এক আল্লাখালা পরে, আসা( দন্ড) দুলিয়ে দুলিয়ে , আসরের চারিদিক ঘুরে ঘুরে গান গাইত, আর দোহাররা তার পুনরাবৃত্তি করত।
পূবেতে বন্দনা করি পূবের ভানুশ্বর। এদিকে উদয় রে ভানু / চৌদিকে পশর। তারপরে বন্দনা করি গাজী দয়াবান / উদ্দেশ্যে জানায় ছালাম হেন্দু মোছলমান।।
পান জল খেয়ে সুস্থির হয়ে বসে। ঘোষ বাবু বলেন
ভালো মন্দ তাঁর কৃপা। তবে মনডা বড় ভালো লাগে বাপা। মনে হয়, ভালো হবে সব।
গনাই উত্তর দেয়, যেন সেই পুরুষটির মত বলে। যে কিনা,
বাঘের সওয়ার গাজী , বিপদে ত্রাতা --
পট নাচাইন্না মোরা লোকের ভালা চাই বাবু। মোর বাপা ফজল মিঞা , চাচা দুর্জন মিঞার কি বা দাপট-- ঢোল , করতাল বাজত। সে পট হয়ে উঠত জীবন্ত ---হাহাকার করে গনাই মিঞার গলা--
“ মোটা কাপড়ের উপর তেঁতুল বিচির বা বেলের আঠা চাইপে চাইপে দিত , এতে জমিন তৈরি হত-- রোদ্দুরে ফেলে শুকিয়ে যেত, তাপ্পর --মশালের উপর উপুড় করা মাটির সরার কালি, শঙ্খগুঁড়া থেকে সাদা, সিঁদুর থেকে লাল, হলুদগুঁড়া থেকে হলুদ, এবং নীল গাছ থেকে নীল রং নিয়া--ছাগল , ভেড়ার লোম দিয়ে তুলি তৈয়ার হত বাপাগণ।
হাঁফায় গনাই মিঞা। পাতলা চাদর জড়ায় হাড্ডিসার শরীরে। উবু হয়ে বসে ধরায় চুটা। ভাঙাচোরা জনতা, ঘোষ পরিবার সম্ভ্রমের চোখে দেখে পট নাচনের শিল্পীকে।
এই তো সেই লোভ, সৃষ্টির লোভ। কোন কাজে এমন রং আছে গো? কোন কাজে হিন্দু মোছলমান এক হইয়ে গড় করে গ। আকাশ থেকে বাতাস থেকে সুর এসে পড়ে পটুয়ার ঘরে। কেবল ভাত ফোটানোর গান জানা নাই তাদের। নিজেদের চান্দ সওদাগরের বংশ কয় এরা--পরণের কাপড় জোটেনা---
কত্তা! মুই হমু শ্যাষ পটুয়া । আর কেউ হইব না। পোলাপান কেউ রাজি না। সব শহরে যায়। নয়ত শহর এইখানে আসে। গ্রাস করে নদী। পটুয়ার পালাগান হারাইয়া যায় কলের গানে।
ছেঁড়া ফাটা আলখাল্লা খুলে, মলিন চাদরে শরীর ঢাকে গনাই। ঠান্ডার মধ্যি যেতে হবে অনেকটা পথ। মন খুলে চাল, পয়সা দ্যান ঘোষবাবু। চ্যালাদের নিয়ে পট গুটিয়ে ঘর পানে রওয়ানা দেয় গনাই।