'সংখ্যাটা আরও অনেক অনেক বাড়বে। চেনটা না ভাঙলে চলবে না।' কাগজ পড়তে পড়তে নিচু গলায় বলছিলেন তপনবরণ ভট্টাচার্য। এটাই এখন বাজারে চালু কথা। ভারত-জোড়া লকডাউনের আজ দ্বিতীয় দিন।
তপনের বয়স ৭৬। করোনাভাইরাস তো বুড়োদেরই বেশি টার্গেট করছে। সারা পৃথিবীতে গাদা গাদা প্রৌঢ় ও বৃদ্ধ এই ভাইরাসে আক্রান্ত। ইটালিতে করোনা রোগীদের চার জনের তিন জন পঞ্চাশোর্ধ্ব। তবে ভাল খবরও আছে। ১০২ বছর বয়সী এক ইটালীয় মহিলা করোনামুক্ত হয়েছেন। কাগজে এ সব পড়ছিলেন তপনবরণ।
তপন একাই থাকেন এই বাড়িতে। ছেলে সুহৃদ এখানে আর থাকে না। নাহ চিন ইটালি লন্ডন বা দুবাইতে নয়, থাকে ভাড়াবাড়িতে। শুধু ছেলে নয় পুত্রবধূ, নাতনিও থাকে। নাতনির জন্য মনটা টনটন করে তাঁর, এখান থেকে চলে যাওয়ার পর বাড়িটা খাঁখাঁ। এই সেদিন সে পাঁচ বছরে পড়ল। ধুমধাম করে জন্মদিন হল। ভাড়াবাড়িতে গিয়েছিলেন তপন সেই দিন। ওই একবারই। নাতনিটার যেন চোখেনাকেমুখে কথা। দুষ্টুমিতে তার জুড়ি মেলা ভার।
তপনবরণের পৈতৃক এই বাড়িটার বয়স পঞ্চাশ পেরিয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে চলছে রিপেয়ারের কাজ। আসলে মেনটেন্যান্স হয়নি বহু কাল। বাড়িটা ন্যুব্জ হয়ে পড়েছিল। বর্ষায় সিলিং থেকে ঝরনার মতো জল। ভেসে যেত দোতলা। এক তলার ফ্লোর দিয়েও ভেপসে জল ওঠে। সে এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি।
এটা তপনের পৈতৃক বাড়ি হলেও মেরামতির উদ্যোগ কিন্তু ছেলের। এই মেরামতির কারণেই তারা গেছে ভাড়াবাড়িতে। সঙ্গে যেতে বারবার করে ছেলে বলেছিল কিন্তু তপনের পক্ষে স্থানবদল করা সম্ভব হয়নি। প্রতিবেশীদের অনুরোধ উপরোধেও কাজ হয়নি। তপনবাবুর ভয়, ঠাঁইবদলের পর এই স্থায়ী ঠিকানাটা যদি বেহাত হয়ে যায়! নাহ ছেলেকে এতটুকু ভরসা করেন না তপন। অথচ সুহৃদ কখনওই ভরসা ভাঙার মতো কিছু করেনি। অবরে সবরে অনেক ভেবে দেখেছেন, এই অবিশ্বাসের কোনও কারণ নেই, তবুও… ছেলের প্রতি সম্পত্তি নিয়ে তীব্র সন্দেহ। এই সন্দেহ তিনি এনজয় করেন বলা যেতে পারে। যেন তাঁর প্রিয় পোষ্য একটা।
করোনাভাইরাসে বাড়ির মেরামতির কাজ বন্ধ। দিন পাঁচেক হল মিস্তিরিরা আসছে না। করোনাভয়ের মধ্যেও এটা তাঁর অনর্গল শান্তির কারণ। এমনিতেই এত বড় বাড়িতে একা একা কোনও ক্রমে দিন কাটানো। তার উপর ধুলোর জ্বালায় দিশাহারা হচ্ছিলেন। মিস্তিরিদের কাজকর্ম পছন্দ হয় না বলে নিরন্তর ঝগড়া। ছেলে একজনকে সুপারভাইজার রেখেছে। বিরক্তিকর লোকটা। তার সঙ্গে তপনের মতবিরোধ চরমে। সুহৃদকে ফোন করে ওই লোকটার বিরুদ্ধে কত বার যে অভিযোগ জানিয়েছেন, গুনে বলা যাবে না।
সকালবেলায় তপনবাবু খবরের কাগজ পড়ছিলেন। টেবিলের অপর দিকে বসে দেবশঙ্কর। লকডাউন ও সোশ্যাল ডিসটেন্সিংয়ের এই আবহ সত্ত্বেও দেব এসেছে তপনবরণের খোঁজখবর নিতে। দেবশঙ্কর সিপিএমের হোলটাইমার। তপনবাবুও পার্টিকার্ড হোল্ডার। একসময়ে দাপুটে নেতা ছিলেন। এখন বয়সের কারণে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। দেবশঙ্কর তার ছেলের বয়সী। মানে চল্লিশ-বিয়াল্লিশ। পার্টির এই দুরবস্থায় বডি ফেলে সে রাজনীতি করে বলে দেবশঙ্করের প্রতি তপনের একটা টান আছে। নিজের ইয়ং বয়সের কথা মনে করিয়ে দেয় এই ছেলেটা।
কাগজ থেকে মুখ তুলে তপন বললেন, পরিস্থিতি তো ভাল নয় দেব। বাঁচব কিনা জানি না। বৃদ্ধদের রক্ত দেখছি দারুণ ভালবাসে কোভিড নাইন্টিন। এই দেখো এই লেখাটা। কেন এই ভাইরাস এত ভয়ঙ্কর হয়ে উঠল তা নিয়ে লেখা। কাগজটা দেবশঙ্করের দিকে এগিয়ে দিলেন তপনবরণ। দেবশঙ্কর লেখাটা ঝলক দেখে বলল, পড়েছি দাদা। ভাল লেখা। তবে এখানে চিনের বেশি বেশি প্রশংসা করা হয়েছে। চিন কিন্তু এই ভাইরাসটা ছড়ানোর জন্য দায়ী।
-- না, এটা কী করে বলছ? চিন তো আর ইচ্ছে করে ভাইরাস ছড়ায়নি। কেউ তো ইচ্ছা করে এ সব করে না ভাই!
-- না না ইচ্ছে করে ছড়ানোর কথা বলা হচ্ছে না। কিন্তু উহানের ওয়েট মার্কেট থেকেই তো এটা ছড়াল তাই না! দায় চিন ছাড়া আর কার বলুন তো?
-- ওটা তো প্রমাণিত কিছু নয়!
-- হতে পারে। তবে সার্সের কথা ভাবুন, চিনের সেই বন্য মাংসের বাজার। চিন সরকার এই বন্যপ্রাণী ফার্মিংকে উৎসাহ দেয়। এতে তাদের বিশাল লাভ। যদিও সাধারণ চিনাদের পকেটের নাগালের বাইরে এই সব মাংস।
-- মার্সের উৎস কিন্তু সৌদি আরব ভাই।
-- তাতে চিনের অপরাধ এতটুকু কমে না দাদা।প্রতিদিনই তো এসব নিয়ে লেখা পড়ছি কাগজে, সোশ্যাল মিডিয়ায়।
-- হুঁ!
-- ২০০২-এর শেষে সার্সের কেস প্রথম ধরা পড়েছিল। চিনের গুয়াংডংয়ে। ফোশানের বন্য মাংসের বাজার থেকে ছড়িয়েছিল। বাদুড় ছিল উৎস। সরাসরি বাদুড় থেকে নয় অবশ্য। বাদুড় থেকে সিভেট ক্যাট বা গন্ধগোকুল, তারপর মানুষ। আপনি তো জানেন সিভেট ক্যাটের মাংস কী লোভনীয়, চাহিদাও দারুণ। সার্সের পর ওয়াইল্ড অ্যানিম্যাল মার্কেট বন্ধ করে দেয় চিন। এই ফার্মিংয়েও নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কিন্তু পরিস্থিতি একটু থিতোতেই ফের চালু হয়ে যায় ওই ফার্মিং ও বিক্রি। আর এখন বাচ্চারাও জানে, এই করোনাভাইরাস মানুষের শরীরে এসেছে প্যাঙ্গোলিন থেকে। চিনে প্যাঙ্গোলিনের মাংস বেশ দামি ফলে স্টেটাস সিম্বল। তা ছাড়া নানা ওষুধও তৈরি হয় ওই মাংসে। ট্র্যাডিশনাল মেডিসিন। যা আদৌ কোনও উপকারে লাগে কিনা কেউ জানে না। শত শত প্যাঙ্গোলিন মারা হয়। অবশ্য প্যাঙ্গোলিনে ওই ভাইরাস এসেছিল সেই বাদুড় থেকেই।
-- বাব্বা তুমি তো দেখছি অনেক পড়াশুনো করে ফেলেছ। স্মিত একটা হাসি ঝুলিয়ে বললেন তপনবরণ।
-- উপায় নেই দাদা। এ ছাড়া উপায় নেই। করোনাভাইরাস ছাড়া আর কিছুই নেই কাগজে, টিভিতে, নেট দুনিয়ায়।
-- হ্যাঁ। তা তো ঠিকই। তবে তোমায় একটা কথা বলি। তুমি হয়ত জানো যে ২০১২-তে মার্স ভাইরাস ছড়িয়েছিল সৌদি আরবে। উট থেকে এই মার্স মানুষের মধ্যে ঢুকেছিল। আর উটের মধ্যে কার থেকে এসেছিল মার্স? ওই বাদুড় থেকে। তাই বোঝা যাচ্ছে এই সার্স, মার্স ও সার্স-কভ-টু মানে করোনাভাইরাস-- এই তিনের জন্য দায়ী বাদুড়, চিন নয়।
-- নাহ দাদা মানতে পারলাম না। ওয়াইল্ড অ্যানিম্যাল মানুষ কেন খাবে বলুন তো! কেনই বা এর চাষ হবে সরকারি পোষণে? তাই সার্স ও সার্স-কোভিড-টু এই দুটো মহামারির ভিলেন চিনই। সে আপনি যা-ই বলুন না কেন!
তপনবরণ চিনের অন্ধ ভক্ত। চিনের সমালোচনা তিনি একেবারে মেনে নিতে পারেন না। ভারত স্বাধীনতা পেয়েছিল ৪৭-এ। ৪৯-এ মাও জে দঙের হাত ধরে গণপ্রজাতন্ত্রী চিনের জন্ম। কিন্তু এই দেশটির থেকে ভারত এখনও কয়েক দশক পিছিয়ে। কিংবা কোনও দিনই ভারত কাছাকাছি পৌঁছতে পারবে না চায়নার। বিশ্বাস করেন তপন। চিনের ভিডিও মাঝে মধ্যে দেখেন ইউটিউবে। খবর খুঁজে খুঁজে পড়েন। যে উহান থেকে করোনা ছড়ানোর কথা বলা হচ্ছে, এই উহান মধ্য চিনের এক প্রাচীন শহর। তিন হাজার পাঁচশ বছরের ইতিহাস। দুরন্ত আধুনিকও। মধ্য চিনের কেন্দ্রস্থল। কি রাজনৈতিক কি আর্থিক-- উহানের বিরাট ভূমিকা। পরিবহণে এই শহরটি অভাবনীয় উন্নতি করেছে। অনেকেই একে শিকাগো অফ চায়না বলে। এ সব কারণেই গর্ব হয় তপনবরণের। মনে হয় যদি চিনে থাকা যেত। অন্তত জীবনে যাওয়া যেত একটি বার। এতগুলো বছর কমিউনিস্ট পার্টি করেছেন তপন, চিনে যাওয়ার সুযোগই পাননি। ভাবলে চিনচিনে একটা কষ্টও পান তিনি। মন ভারাক্রান্ত হয়। আর এই যে করোনার জন্য চিনকে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে, তাতে দুঃখ পান তপন। উহানের বাজার কিংবা প্যাঙ্গোলিন থেকে এটা ছড়িয়েছে, তা কিন্তু প্রমাণিত নয়, তবুও বলা হচ্ছে কেন! শুধু একটা সন্দেহ বা সম্ভাবনা থেকে চিনের এমন বিরূপ সমালোচনা একেবারে ঠিক নয়। কিছুতেই না।
দেবশঙ্করকে ফ্লাস্ক থেকে কাপে চা ঢেলে দিলেন তপনবরণ। সকালেই চার পাঁচ কাপ চা বানিয়ে ফ্লাস্কে নিয়ে কাগজ পড়তে বসেন। নিজে যেমন খান কেউ এলে তাকেও দেন।
-- দাদা ২১ দিনের এই লকডাউন। এটার হয়তো প্রয়োজন ছিল। কিন্তু প্রথমে গুরুত্ব কম দেওয়া হয়েছিল। ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইটগুলোর যাত্রীদের স্ক্রিনিং করে করোনায় সন্দেহ ভাজনদের বাধ্যতা মূলক কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়নি। লকডাউন হলে দিন-আনা-দিন-খাওয়া ও পরিযায়ী শ্রমিকদের যে প্রবল সমস্যা, তাঁদের নিয়ে কোনও পরিকল্পনাই করেনি সরকার।
কাগজে ফের চোখ রেখে তপন বললেন, শোনো আর কিছু করার নেই দেবশঙ্কর। এ বার কিন্তু কোমর বাঁধতে হবে। চিনের কোথাও কোথাও নাকি কমিউনিস্ট পার্টির মেম্বাররা পাড়ায় পাড়ায় পাহারা দিয়েছে। কেউ বাড়ি থেকে বেরোলেই থার্ড ডিগ্রি। তবে বেরোতেও হয়নি বিশেষ, বাড়ি বাড়ি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র খাবারদাবার পৌঁছে দিয়েছে তারাই। এখন সেখানে হাল বদলেছে। ওরা শুনছি করোনা কন্ট্রোল করে ফেলেছে। ওদের থেকে শিখে এগোতে হবে। পার্টিকেও এটা করতে হবে দেবশঙ্কর।
-- আমরা সেই প্রিপারেশন নিচ্ছি। আজ-কালের মধ্যেই জানিয়ে দেব আপনাকে।
তপনবরণ খবরের কাগজ থেকে মুখ তুলে তাকালেন দেবের দিকে। হ্যাঁ… ভাল… বলেই তিন জোর চমকালেন। দেবশঙ্করের চোখ দুটো যে টকটকে লাল! যেন দুটো জবা ফুল, নাহ জবা নয় জবা নয়, লাল সিগনাল যেন! একটু ভয়ও পেয়ে গেলেন তপন। এ কী দেব তোমার চোখ দুটো অমন লাল কেন? চোখের কোনও সমস্যা হল নাকি ভাই। ডাক্তারের সঙ্গে এখুনি কথা বলো। ওষুধের দোকান তো খোলা আছে। দেরি কোরও না। সময়টা ভাল যাচ্ছে না।
-- তাই নাকি দাদা। লাল হয়ে গেছে চোখ? ঠিক আছে দেখছি কী করা যায়। কোনও পেন বা ইরিটেশন কিন্তু নেই। আচ্ছা এখন চলি।
ঝড়ের বেগে বেরিয়ে গেল দেব। পুরো সুরটা কেটে গেল। দেবের চোখ দুটো ওই রকম লাল কেন হল, কী হল ওর? মনটা উথালপাতাল করছে। কাগজ পড়ার চেষ্টা করতে লাগলেন তপন। হঠাৎ মনে হল, রেড সিগনাল দিয়ে গেল না তো দেব! রেড সিগনাল?
সারা রাত ঘুম হয়নি তাই খানিক কাগজ পড়তে পড়তে আর এই সব ভাবতে ভাবতে তপনবরণ এই সকালেই ঝিমিয়ে পড়লেন। দেবের লাল চোখ দুটো ঘুরতে ঘুরতে কিছুটা দূরে চলে গেল। আবছা হয়ে গেল।
এই সময় দরজায় নক। চটকা ভাঙল তার।
হোম ডেলিভারিতে খান তপনবরণ। খাবার এল মনে হয়।
-- কাম ইন। দরজা খোলা।
নাহ ডেলিভারি বয় নয়। একটা অচেনা লোক ঢুকল। সোজা এসে তার টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে পড়ল লোকটা।
-- কে আপনি? আপনাকে তো ঠিক চিনতে পারলাম না। কথাগুলো বলে তার খেয়াল হল, আরে এ লোকটার তো পুরো দস্তুর মোঙ্গলীয় চেহারা। বাঙালি তো নয়ই।
-- হু আর ইউ?
-- বাংলায় বলতে পারেন। আমি উহানের লোক হলেও বাংলাটা মাতৃভাষার মতোই বলতে ও লিখতে পারি। এখানে বছর বারো-র যাতায়াত।
-- ও, আচ্ছা। কিন্তু আমার বাড়িতে কী মনে করে? কোনও বিশেষ প্রয়োজনে কি?
-- আপনি নাকি চিনভক্ত, চিন দেশকে নাকি পাগলের মতো ভালবাসেন?
-- তা তো বাসিই। চিন বিশ্বের কাছে একটা উদাহরণ।
-- এত চিনকে ভালবাসে যে, তাকে চিনতে এলাম।
-- এখন এই পরিস্থিতিতে। এখন লকডাউন জানেন না? সোশ্যাল ডিসটেন্সিং বজায় রাখতে বলা হচ্ছে। করোনা ভারতকে কব্জা করতে চাইছে! আপনার দেশের কী পরিস্থিতি? কাগজে দেখছি আন্ডার কন্ট্রোল!
-- হ্যাঁ। আন্ডার কন্ট্রোল। চিন দেখিয়ে দিয়েছে কী ভাবে করোনা কন্ট্রোল করা যায়। আমাদের দেশ থেকে সাহায্য নিচ্ছে ইটালি, গোটা ইউরোপ। ট্রাম্প সাহেব তো খুব তাচ্ছিল্য করেছিল প্রথমে, এখন বুঝছে। চিনা ভাইরাস বলছিল। হা হা হা।
-- হুঁ। ঠিকই বলছেন।
-- তা আপনি ভাল খারাপ সবটা নিয়েই চিনকে ভালবাসেন তো?
-- ইয়েস, ইয়েস, হানড্রেড পারসেন্ট। গোলাপের তো কাঁটা থাকবেই। চাঁদের গায়ে গর্ত আছে বলে কি চন্দ্রকলার আকর্ষণ এতটুকু কমে?
-- চন্দ্রকলা মানে কি? আমি পাকা কলা কাঁচা কলা মর্তমান সিঙ্গাপুরী শুনেছি।
-- পৃথিবী থেকে যে অংশটা দেখছেন চাঁদের, চাঁদের কমা-বাড়া, তাকেই চন্দ্রকলা বলে।
-- আচ্ছা আচ্ছা।
এই সময় উল্কার বেগে দরজা দড়াম করে খুলে নভশ্চর ধরনের পোশাক পরা তিন জন ঘরে ঢুকে পড়ল। উহানের লোকটা সঙ্গে সঙ্গে এক লাফ দিয়ে পালাতে চাইলেও কাজ হল না। ওরা জাল ছুড়ে দিয়ে ধরে ফেলল তাকে। তারপর টানতে টানতে বার করল দরজা দিয়ে। তপনবরণ তো এসব দেখে নির্বাক। কাঁপা কাঁপা পায়ে একটু এগিয়ে বারান্দায় পৌঁছালেন। লোকটা জালের ভিতর থেকে চিৎকার করে বলল, তপনবাবু আপনাকে করোনার দুনিয়ায় স্বাগত। আপনি বলেছেন, চিনকে ভাল মন্দ সবটুকু নিয়েই ভালবাসবেন। তাই আপনাকে এই রোগটা দিয়ে গেলাম। চিনা ভাইরাস! ডাক্তার দেখান, বাঁচবেন কিনা বলতে পারছি না!