শামুকেরা
কতো চক্কর দিয়েছি, কতো ছটফট!
ফুলদানির ভিতর জল ছিল তাজা, চোখটি সরস
নরম জামার ঙিতর ঘামে ভেজা স্তন
সমভাবনায় ঢেকে যেত রাতভোর।
খাট ভঙ্গুর এখন, বিবর্ণ বিছানা চাদর-
ভ্যাপসা দুপুর অলস বেড়ালের মতো,
শুধু নিজের ভিতর গুটিসুটি মেরে আনে।
একেকটা দিন শামুকের জলছাপ যেন,
মন্থর, দাগ না রেখে হেঁটে চলে আনমনে।
আরও পড়ুন, সুমন মান্নার দুটি কবিতা
বরফ বিষয়ে-
বরফের ভিতর একটা অতীত ভরা আছে
সে টাটকা ও জীবন্ত ভাবে সংরক্ষণ করে
কটা জিভ, কৃমির ক্ষুদ্রান্ত্র, প্রেমিকার পাঁজর
সে পোষ্য বা মা বোনের মৃতদেহ দীর্ঘদিন
স্মৃতি ও শরীরসহ সামান্য কুঁচকে রেখে দেয়,
পরিচ্ছন্ন ও স্পষ্টতার সঙ্গে সে ঐতিহাসিক বীর্য
সংরক্ষণ করে তুলে দেয় হিংসার উত্তরাধিকার
বরফ সাধারণত পাথরের মতো ভাবলেশহীন,
হর্ষ বিষাদ মিলনের আকাঙ্ক্ষায় কাতরও কখনো,
বরফ মানুষের মতো কখনো রোমাঞ্চকর-
ভাপ বেয়ে উঠলে সাড়া দেয় উরু বেয়ে তরলতায়-
এই স্খলন বাসী রক্তকে তাজা করে বাষ্প হয়ে
উড়ে যায় শ্রমণের মতো পিছুটান ধুয়ে মুছে।
বরফের কোনো ভবিষ্য নেই যতটা অতীত থাকে!
আরও পড়ুন, দুটি কবিতা: ফেরদৌস নাহার
সহ্য
অপেক্ষার জন্য একটা
দীর্ঘ শীতকাল পেরোতে হবো।
প্রেতকালও বলা যাবে তাকে-
নিজেরা নিজেদের খেয়ে ফেলেছি তখন,
আত্মারা কেটে নেওয়া গাছের শ্মশানে
হতভম্ব হয়ে বসে আছে!
শরীরই পাচ্ছে না য়ে আবার থিতু হবে।
মাটি জল ফুল সব চেপ্টে গলে
মণ্ড পাকানো পাঁক!
আহা! একটা কাম ক্রোধ দুঃখময়
শরীর না পেলে আত্মার চলে, বলো?
খলবল করা মুণ্ড, না শিশ্ন,
না হৃদয়ের বালকদল-
খিলখিল করা, না স্তন, না জন্মদ্বার,
না মুঠির আঙুল বালিকা-
তোমার ঘাড় কামড়ে ধরছে,
তোমার গর্ভ ফাঁক করে উঁকি দিচ্ছে
শেষ ট্রেন ছাড়ার মতো,
সীমান্ত দেশভাগে গাদাগাদি করা
শোক আর ক্ষমা বিবাগী দুই ভাইবোন,
ছেড়ে চলে যাচ্ছে এই শরীর,
পারো তো ধরে রাখো,
পারো তো তুমিই একটা ফাটল হয়ে
ওদের টেনে নাও,
সারাদিনমান এমন ধ্বংসের অপেক্ষা,
এতো সহ্য, সোজা আর কী বলো?