মেয়াদি বিমা পরিকল্পনা এই মুহূর্তে ভারতে খুবই জনপ্রিয়। কয়েক বছর আগেও কোনও সংস্থাই এই পরিকল্পনা গ্রাহকদের সুপারিশ করত না। কিন্তু কিছু বিমা সংস্থা বিভিন্ন মূল্যের মেয়াদি বিমা পরিকল্পনার সূচনা করতেই পরিস্থিতি পাল্টায়। গ্রাহকরাও এর গুরুত্ব বুঝেছেন, তাই বহু বিমা সংস্থাই এখন মেয়াদি বিমা পরিকল্পনা নতুন গ্রাহকদের কাছে পরিবেশন করে। তুলনামূলক বিচারে বিভিন্ন মেয়াদি বিমা পরিকল্পনা ওয়েবসাইট গ্রাহকদের জন্য সঠিক পরিকল্পনা বেছে নেওয়ার সুযোগ বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে কেন এই পরিকল্পনা বেছে নেবেন, তার জন্য বেশ কিছু কারণ রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলি হল-
যে পাঁচটি কারণে এই মুহূর্তে আপনার মেয়াদি বিমা পরিকল্পনা ক্রয় করা উচিত
১- নিজের প্রিয়জনদের সুরক্ষিত রাখার সেরা উপায়
আমি মনে করি, এ ছাড়া আর কোনও আর্থিক পরিকল্পনা নেই যা আপনাকে এবং আপনার পরিবারকে আর্থিক ও মানসিক সুরক্ষা দেবে। এর থেকে ভাল উপায় শুধুমাত্র যদি ব্যাঙ্কে প্রচুর টাকা থাকে। কিন্তু তাও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তবে জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণে তাও খরচ হয়ে যায়। গৃহঋণ, সন্তানের শিক্ষা, গাড়ি, সন্তানের বিয়ে, ওষুধপত্র, বাড়ি মেরামত, খরচের তালিকা লম্বা। তবে এসব তখনই সম্ভব যদি অবসরের বয়স পর্যন্ত প্রতি বছর আপনার রোজগার বাড়তে থাকে। তাই পরিবারের একমাত্র রোজগেরে মানুষের পক্ষে দুর্ভাগ্যজনক কোনও ঘটনা সামাল দেওয়ার জন্য একটা পরিকল্পনা হলে কেমন হয়? তাই মেয়াদি বিমা পরিকল্পনা ক্রয় করে তিরিশ বছরের একজন ব্যক্তি ৩০ বছরের মেয়াদে প্রতি বছর ৭,৭৮৮ টাকা দিয়ে ১ কোটি টাকা কভার পেতে পারেন। আমি মনে করি, এই মূল্যে যে কেউ তাঁর পরিবারকে সুরক্ষিত রাখতে চাইবেন।
২- অল্প বয়সে কিনলে এটি সস্তা পড়বে
কম বয়সে এই পরিকল্পনা কিনলে অনেক পার্থক্য দেখা যাবে। উদাহরণ স্বরূপ ৩০ বছরে ১ কোটি টাকার জন্য প্রিমিয়াম হওয়া উচিত
৩০ বছর বয়স- বার্ষিক প্রিমিয়াম ৭,৭৮৮ টাকা
৩৫ বছর বয়স- বার্ষিক প্রিমিয়াম ৯,৯১২ টাকা
৪০ বছর বয়স- বার্ষিক প্রিমিয়াম ১৩,২১৬ টাকা
৪৫ বছর বয়স- বার্ষিক প্রিমিয়াম ১৭,৭০০ টাকা
প্রিমিয়ামের পার্থক্য পরিবর্তনশীল। তবে অল্প বয়সে পরিকল্পনা কিনলে অনেক টাকা সাশ্রয় করতে পারবেন।
৩- দামে কম পড়লেও বিমা সংস্থাগুলি চয়নশীল
প্রিমিয়ামগুলি কম থাকায়, বিমা সংস্থাগুলি তাদের গ্রাহকদের যে পরিকল্পনাটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে এই পরিকল্পনাটি দেওয়ার ক্ষেত্রে ক্রমশ সতর্ক হয়ে পড়েছে। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে, জীবনযাত্রার রোগগুলি হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। আমাদের চাকরির প্রকৃতি এবং আমাদের জীবনের গতির কারণে আমরা সকলেই সেগুলির ক্ষেত্রে ক্রমশ প্রবণ হয়ে পড়েছি। একবার আপনার কোনও অসুস্থতা প্রকাশ পায়, বিমা সংস্থাগুলি আপনাকে পরিকল্পনাটি দিতে রাজি হবে না এবং আপনার পক্ষে পরিকল্পনাটি খুব ব্যয়বহুল হবে। কারণ ঝুঁকি নির্ধারণের ভিত্তিতে প্রিমিয়ামগুলি বাড়ানো হবে।
সুতরাং, আপনি যখন তরুণ এবং সুস্থ থাকবেন তখনই পরিকল্পনাটি গ্রহণ করুন।
৪. বিমা গ্রাহকদের সঙ্গে চূড়ান্তভাবে বিস্তৃত কভার
যদিও মৃত্যু কভারটি গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু জীবনে এমন পরিস্থিতি আসে যখন মৃত্যু ছাড়াও জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কভার করা প্রয়োজন। মৃত্যুর আগেই রোজগার বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এটি সবচেয়ে খারাপ সম্ভাবনাময় দৃশ্য - এটি ব্যয়গুলিকে তাৎপর্যপূর্ণভাবে যুক্ত করে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর আসে। গুরুতর অসুস্থতা এবং দুর্ঘটনাজনিত অক্ষমতা গ্রাহকদের এই জাতীয় পরিস্থিতিতে পরিবেশন করে। আমি এই ক্ষেত্রে আপনার মূল কভারের পরিমাণ বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছি।
৫- স্মার্ট নমনীয় সুবিধা
প্রকৃত স্মার্ট সুযোগ সুবিধার তালিকা হল
৯৯ বছর বয়স পর্যন্ত কভার- এটি সবচেয়ে জীবনের সেরা উপহার আপনার এবং প্রিয়জনের জন্য। বিমার টাকা পাওয়াও নিশ্চিত।
সীমিত প্রদান- ৫ বা ১০ বছর পর্যন্ত প্রিমিয়াম দিন এবং জীবনভর বিমার কভারের সুবিধা পান। যেহেতু বর্তমানে চাকরির নিশ্চয়তা খুবই কম, তাই ভাল চাকরি যদি করেন তাহলে প্রিমিয়ামগুলি এই সময়ের মধ্যে দিয়ে দিন আর যেকোনও সময়ে সেটা শেষ করুন নিজের সুবিধামতো।
৬০ বছর পর্যন্ত প্রিমিয়াম প্রদান- এটাও একটি ভাল পরিকল্পনা। অবসরের পর আর কে প্রিমিয়াম দিতে চান? তাই অবসরের আগেই প্রিমিয়াম সব মিটিয়ে ফেলুন। আর বাকি জীবনটা নিশ্চিন্তে থাকুন।
এরপরেও মেয়াদি বিমা পরিকল্পনা কেনার ব্যাপারে নিশ্চিত নন? তাহলে কর সাশ্রয়ী পরিকল্পনাও রয়েছে, সেগুলি বিচার করে দেখতে পারেন। যেখানে প্রিমিয়াম করমুক্ত।
লেখক: দীপক ইওহানন হলেন মাই ইনসিওরেন্স ক্লাবের সিইও।
নিজের প্রিমিয়াম জানুন, টাকা বাঁচান দ্রুত মেয়াদি বিমা পরিকল্পনা যাচাই করে।