(বাংলাদেশে বাস চাপায় ছাত্র মৃত্যুর জেরে আন্দোলন চলছে, যে আন্দোলনে দেখা যাচ্ছে অপ্রাপ্তবয়স্কদেরই। সহপাঠী মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেল এই অল্পবয়সীদের রোষ নিয়ে লিখলেন বাংলাদেশের ব্লগার ও লেখক হাসান মাহবুব)
আজ আপনাদের যা বলবো তা আপনাদের কাছে রূপকথা মনে হতে পারে। আপনারা হেসে উড়িয়েও দিতে পারেন। আমাদের যুক্তিবাদী মনের চুলচেরা বিশ্লেষণে এই ঘটনাগুলি বাস্তব মনে হবার কোনো কারণই নেই। হয়তো বা গল্পের শেষটা খুব অসুন্দর এবং ট্রাজিক হবে, হয়তো দানবরা অট্টহাসি দিয়ে প্রমাণ করে দেবে পৃথিবীতে রূপকথারা আর কখনই ফিরে আসবে না। তবে অল্প কয়েকদিনের জন্যে হলেও এসেছিলো, এখনও চলে যায় নি। আপনারা যখন এ লেখা পড়বেন, তখন পরিস্থিতি কী থাকবে জানি না, প্রার্থনা থাকবে এই অসম্ভব সুন্দর তখনও ছুঁয়ে থাকবে আমাদের। তা না হলে কী আর করা, তখন এটা একটা এপিটাফ হিসেবেই পড়ে নিয়েন।
২৯শে জুলাইয়ের ঘটনা। ‘তিলোত্তমা’ নগরী ঢাকার এয়ারপোর্ট রোডে খুব দুঃখজনক এক ঘটনা ঘটলো। দুটি বাসের যাত্রী ওঠানোর পাল্লায় বাসের জন্যে দাঁড়িয়ে থাকা দুই কিশোর-কিশোরী চাপা পড়ে গেলো। স্পটডেড। আপনারা এটাকে দুর্ঘটনা ভাবতে পারেন, কিন্তু প্রকৃত সত্য হলো, এটি ছিলো হত্যা। ঠান্ডা মাথায় হত্যা। আমাদের এই ‘তিলোত্তমা’ নগরীতে (কোনো এক কালে আদর করে এ নামে ডাকা হতো ঢাকাকে), এ ধরণের ঘটনা মাঝেমাঝেই ঘটে থাকে। বা বলা যায়, ঘটানো হয়ে থাকে।
কিছুদিন আগেই বাসের গেটে দাঁড়িয়ে থাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র রাজীবের হাত কেটে নিয়ে যায় পাল্লা দিয়ে চলা এক বাস। অনেকদিন ভুগে ছেলেটি মারা যায়। বাসে বাসে পাল্লা, ওভারটেকিংয়ের নেশা, ঠোকাঠুকি এসব খুব সাধারণ ঘটনা এখানে। পরিবহন শ্রমিকরা কোনোকিছুর পরোয়া করে না। কারণ তাদের আশ্রয় হয়ে আছেন একজন অতি ক্ষমতাধর মানুষ। তার কথা পরে বলছি।
পরিবহণ শ্রমিকেরা শুধু দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ক্ষান্ত হয় না। স্টপেজের আগে সব যাত্রী নামিয়ে দিয়ে বাস টেনে নিয়ে গিয়ে নারী যাত্রীকে ধর্ষণ করে মেরে ফেলার ঘটনাও ঘটেছে। কিছুদিন আগে চিটাগাং রোডে ঘটলো আরেক অভূতপূর্ব নিষ্ঠুরতার কাহিনী। পায়েল নামের এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র বাড়ি ফিরছিলো। ভোরের দিকে গাড়ি জ্যামের মধ্যে পড়লে সে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে নেমে যায়। সে যখন ফিরছে, তখন জ্যাম ছুটে গেছে। গাড়ি চলা শুরু করেছে। সে দৌড়ে উঠতে গিয়ে দরজার সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যায়। রাস্তায় পড়ে থাকে। বাস কিন্তু থামে নি। তাকে উঠিয়ে নেয় নি। যাত্রীরা তখন ছিলো ঘুমে। তাই কেউ বোঝেও নি। গাড়ি কিছুক্ষণ চলার পর ড্রাইভার এবং হেল্পারদের মনে হলো, ছেলেটি যদি বেঁচে থাকে, তাহলে তো সমস্যা! তাই তারা গাড়ি থামিয়ে পায়েলের কাছে গিয়ে তার মুখ থেতলে দিয়ে ব্রিজ থেকে পানিতে ফেলে দিয়ে মেরে ফেললো।
এই যে ঘটনাগুলি পড়লেন, এগুলোকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে মানা সম্ভব হয় নি আর আমাদের পক্ষে। নির্দিষ্ট করে বললে, স্কুলের ছাত্রদের পক্ষে।
এয়ারপোর্ট রোডের ঘটনার পর প্রতিবাদ শুরু হলো। রাস্তায় নামলো ছাত্ররা। প্রথমে এলো মৃত শিক্ষার্থীদের স্কুল, রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট পাবলিকের ছেলে মেয়েরা। এরপরে আশপাশ থেকেও আসতে শুরু করলো। তার কাঁদলো সহপাঠী হারানোর বেদনায়। তারা চিৎকার করলো। আকুতি জানালো বিচারের।
তারপর ঘটলো এক অভূতপূর্ব ঘটনা। এমন ঘটনার কথা আপনারা কল্পনাও করতে পারবেন না। কী ভাবছেন, রাতারাতি সব বদলে গেলো? খুনী ড্রাইভারদের ফাঁসি হলো? মৃতেরা জীবিত হয়ে উঠলো?
জ্বী না। এসব কিছুই ঘটে নি। যার ছত্রছায়ায় পরিবহণ শ্রমিকেরা উন্মত্ত হয়ে উঠেছিলো, তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে হেসে দিলেন ঘটনার বিবরণ শুনে। হাসতে হাসতে বললেন, এরকম হতেই পারে, দু-তিনটি মৃত্যু নিয়ে এত প্রতিক্রিয়া দেখানোর কিছু নেই। ভারতে কিছুদিন আগে এক দুর্ঘটনায় তেত্রিশজন মারা গেলো, কই সেখানে তো এতকিছু হয় নি! হাসতে হাসতে অবশ্য সিরিয়াস মুখে ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দেয়ার আশ্বাসও দিলেন। কিন্ত ততক্ষণে গুলি বেরিয়ে গেছে মুখপিস্তল দিয়ে! বিদীর্ণ করে গেছে সবার বুক। বিশেষ করে সেই বুকগুলির, যেখানে এখনও মালিন্য আসে নি। হ্যাঁ, সেই কিশোর-কিশোরীদের কথাই বলছি, যাদের সহপাঠীদের হত্যা করা হয়েছে। দানবের হাসি থেকেই শুরু হলো রূপকথার। এই দানবের নাম শাজাহান খান। তিনি বাংলাদেশের নৌ পরিবহণ মন্ত্রী। পরিবহণ শ্রমিকদের নেতা তথা অভিভাবকও বটে।
তার এই দানবীয়, পৈশাচিক হাসির মুখ বুঁজে সয়ে নেয়ার মত মানসিক অক্ষমতা আমাদের এখনও হয় নি। প্রবল প্রতিবাদ হলো সবখানে। বিশেষ করে সোশাল মিডিয়ায়। খবর ছড়াতে ছড়াতে, ক্ষোভ দানা বাঁধতে বাঁধতে, বারুদ জমতে জমতে রাত হলো। পরের দিন ঘটলো বিস্ফোরণ!
ঢাকার প্রতিটি পয়েন্টে স্কুলের ছাত্ররা নেমে এলো। তাদের কোনো নেতা নেই, দল নেই, সাংগঠনিক কাঠামো নেই, আছে শুধু বুক ভরা অভিমান আর ক্ষোভ। তাদের মূল স্লোগান ছিলো- “We want Justice”
সহপাঠীর মৃত্যুতে রাস্তায় নেমে আসার ঘটনা খুব বিরল কিছু না। প্রায়ই ঘটে এরকম। বাংলাদেশে এর আগে অনেকবার এমন হয়েছে। ভারতেও হয়েছে নিশ্চয়ই। না হবার কারণ নেই। কিন্তু এই আন্দোলনের প্রকৃতি ছিলো একেবারেই ভিন্ন! স্লোগান, মানববন্ধন, ব্যানার, ফেস্টুন, এসব তো হয়েই থাকে। তারা করলো কী জানেন? এই ১৩ থেকে ১৭ বছর বয়সী ছেলেমেয়েগুলো কয়েকদিনের জন্যে সিস্টেমই পালটে দিলো! আন্দোলনের সিস্টেম না, পুরো দেশের যাতায়াত ব্যবস্থার সিস্টেম!
তারা ঠিক করলো লাইসেন্সবিহীন কোনো গাড়ি চলতে পারবে না। ঢাকার সবচেয়ে মেধাবী ছাত্ররা যেখানে পড়ে, সেই নটরডেম কলেজের ছেলেরা মতিঝিলের শাপলা চত্বর অবরুদ্ধ করে রাখলো। আপনি আপনার বিলাসবহুল গাড়ি নিয়ে হাওয়া খেতে বেড়িয়েছেন? ভালো। লাইসেন্স দেখান। লাইসেন্স না দেখালে কোনো ছাড় নেই। গাড়ি যাবে না। আপনি কে, ব্যবসায়ী? নেতা? পুলিশ? মন্ত্রী? কিচ্ছু এসে যায় না। তারা আপনাকে আইন মেনে চলা শেখাবে।
চোখ রাঙাচ্ছেন? ক্ষমতা দেখাচ্ছেন? আদব শেখাচ্ছেন? আপনাকেও ওরা শিখিয়ে দেব। আইনগুলো তো আপনারাই বানিয়েছেন, তাই না?
এই কদিনে আমাদের অথর্ব ট্রাফিক সিস্টেম যা করতে পারে নি, ওরা তাই করে দেখালো। আর আমরা দেখলাম রুমাল থেকে কীভাবে বেড়াল বের হয়! পুলিশের গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে যে ড্রাইভার, তার লাইসেন্স নেই। গাড়িতে বড় করে লিখে দেয়া হলো “লাইসেন্স নাই”। নিন, এবার যান!
উল্টোপথ দিয়ে মন্ত্রী গাড়ি করে যাচ্ছিলেন। তাকে এই বিচ্ছুরা বললো, “স্যার, আপনি তো বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলনের সময় ছিলেন। আপনিই রায় দিন, উলটো দিক দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাওয়া উচিত কি না”। মন্ত্রী মহোদয় মুখ চুন করে গাড়ি ঘুরিয়ে চলে গেলেন।
একজন সার্জেন্টের কাছে হেলমেট ছিলো না। তাকে নিজের বিরুদ্ধে নিজেরই মামলা করতে হলো। বুঝুন!
সবকিছু যে খুব শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে তা নয়। কিছু গাড়ি ভাংচুর হয়েছে। তবে ভাংচুর শেষে তারাই আবার ঝাড়ু দিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করেছে। ভাবা যায়!
প্রতিটা রিকশাকে বাধ্য করা হলো লাইন ধরে চলতে। আমরা অবাক হয়ে দেখলাম ঢাকা শহরের চেহারা বদলে যাচ্ছে! আসলেই তিলোত্তমা মনে হচ্ছে!
ছাত্রদের প্রতিবাদের ভাষা ছিলো ব্যতিক্রমী এবং অভিনব। একজন বলছিলো, "যত যাই হোক, যত প্রেসার দেওয়া হোক, আমরা রাস্তা ছাড়বো না। দোষ আমাদের না। দোষ হইতেছে সালাম, জব্বার, রফিকের। তারা শিখাইছে ছাত্রদের প্রতিবাদ করতে হবে। দোষ হইতেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। তিনি আমাদের শিখাইছেন, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। কিন্তু আমাদের মুক্তি নাই। আমাদের সব দাবি মানতে হবে। নইলে আমরা রাস্তা ছাড়ব না। আমাদের গায়ে হাত তোলা হলো কেন?”
ওরা লিখেছিলো, “যদি তুমি ভয় পাও তবে তুমি শেষ/ যদি তুমে রুখে দাঁড়াও তবেই তুমি বাংলাদেশ”।
আরো লিখেছিলো- “হয় নি বলে আর হবে না, আমরা বলি বাদ দে,
লক্ষ তরুণ চেচিয়ে বলে পাপ সরাবো, হাত দে”
শুধুমাত্র এমন সব ক্রিয়েটিভ এবং কাব্যিক স্লোগান ছিলো তা না, ছিলো বেপরোয়া এবং অপ্রমিত ব্যানার, প্ল্যাকার্ড।
যেমন, “ঠিকমত গাড়ি চালাবি, নাহলে পুঁতে ফেলবো”।
কেউ এর থেকেও এক কাঠি সরেস, “আমার ভাইয়ের রক্ত লাল, ...” এবং “...টাইম নাই” জাতীয় পোস্টার সকলেরই নজরে পড়েছে।
এমন অপ্রমিত কথাবার্তায় অনেকে আহত হয়েছেন, কিন্তু আমরা বেশিরভাগই এটিকে ক্ষোভ প্রকাশের সোজাসাপটা মাধ্যম হিসেবে দেখেছি। যারা সরকারের গোঁড়া ভক্ত, তারা এটাকে ইস্যু করে দু-চারকথা লিখে জল ঘোলা করার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু হালে পানি পান নি।
তবে সুখের কথা হলো, শ্রমিক সিন্ডিকেটের নেতা, নৌ পরিবহণ মন্ত্রী শাজাহান খান অবশেষে ক্ষমা চেয়েছেন। তবে ছাত্ররা, আমরা কেউ শুধু এতে সন্তুষ্ট না। দাবি উঠেছে পদত্যাগের।
এই আন্দোলনের রাজনৈতিক ফায়দা লোটা বড়ই দুষ্কর হয়ে উঠেছে সবার জন্যে! একদিকে সরকারের ইগো প্রবলেম। তারা ভেবেছিলো এই বাচ্চাদের বুঝিয়ে শুনিয়ে দুটো তিতে-মিঠে কথা বললেই তারা বাড়ি ফিরে যাবে। তারা ফিরছে না। দাবীতে অটল। এদিকে এই কদিনেই বদলে দিয়েছে অথর্ব সব সিস্টেম। সরকার এখন কোথায় যাবে? এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলনে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা রাস্তায় নেমেছিলো, তখন সহজেই তাদের সরকারী ছাত্র সংগঠন দিয়ে শায়েস্তা করা গিয়েছিলো, আন্দোলনকারীদের বিরোধী দলের ট্যাগ দিয়ে সরকার পতনের ষড়যন্ত্র করছে বলে আখ্যায়িত করা হয়েছিলো। কিন্তু এই বাচ্চাদের গায়ে স্কুলের পোষাক। পিঠে ব্যাগ। এদের কে কী বলা যায়! ওসব ট্যাগ এখানে খাটবে না, কী মুশকিল!
এদিকে বিরোধী দলদেরও সমস্যা। তারা এই ইউনিফর্ম পরা বাচ্চাদের মাঝে ঢুকে পড়ে দুটো আলু পুড়িয়ে খাবে, সেই মওকা পাচ্ছে না। সাধারণ জনগণ নজরে রেখেছে সব।
এতক্ষণ সব রূপকথার মত লাগছিলো, তাই না? ভেবেছিলেন সব দৈত্য-দানোরা মরে গেছে? তারা আর ফিরে আসবে না? তা কী হয়!
বৃহস্পতিবার বিকেলে মিরপুর ১৩তে ঘটে গেলো এক অবর্ণনীয় জঘন্য ঘটনা। হঠাৎই পুলিশের সঙ্গে যোগ দিলো কিছু সরকারী ছাত্র সংগঠনের পাণ্ডা। খালি হাতে না, লাঠিসোঁটা নিয়ে। বিপুল বিক্রমে তারা ঝাঁপিয়ে পড়লো। ধাওয়া করলো বিদ্রোহী শিক্ষার্থীদের। ওরা ফুটওভারব্রিজে দৌড়ে উঠে আশ্রয় নিলো। সেখানে তাদেরকে অবরুদ্ধ করে পেটানো হলো।
সেটা শেষ বিকেলের কথা। আজ সরকারী ঘোষণায় সব স্কুল বন্ধ ছিলো। তারপরেও তারা কার্যক্রম চালিয়েছিলো বিকেল ৫টা পর্যন্ত। মিরপুর ১৩ কালো হয়ে যাবার কিছুক্ষণ পর তাদের ফেরার সময় হয়। এখন চারপাশে থমথমে নিস্তব্ধতা। আমরা জানি না কাল কী হবে। দেবদূতেরা রাস্তায় নামবে? জন্ম দেবে নতুন রূপকথার? না কি দানবেরা জেগে উঠবে? সর্বশক্তি দিয়ে আকাশ থেকে নামিয়ে আনবে দেবরথ?
এই রাতটা অস্বস্তিকর। এই রাতটা দুর্ভাবনার। আপনারা যখন এই লেখাটি পড়বেন, ততক্ষণে অনেক কিছুই ঘটে যেতে পারে। আন্দোলন নতুন বাঁক নিতে পারে, স্থবির হয়ে যেতে পারে। আজ রাতটা প্রার্থনার, আজ রাতটা সংকটের।
কী হবে শেষ পর্যন্ত বলার উপায় নেই, তবে আমার ব্যক্তিগত উপলব্ধি হলো, আমরা যদি এই সাহসী ছেলেমেয়েগুলোর দেখিয়ে দেয়া পথে অনুসরণ করতে পারি, যদি প্রত্যেকেই নিজের জায়গায় সৎ থাকি তাহলে এই রূপকথাটি কল্পকাহিনী বা মিথ হিসেবে পরিচত না হয়ে সত্যিকারের এক পালাবদলের সূচনা করবে। যদি আমরা রাস্তা পারাপারের সময় ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার করি, যদি বেয়াদব বাস ড্রাইভারকে ওভারটেকিং করতে দেখলে ভেজা বেড়ালের মত চুপসে না যাই, যদি রিকশাওলাকে লাইন ধরে চলতে বাধ্য করি, তাহলেই আমরা এই বিদ্রোহী দেবদূতদের সম্মান দিতে পারবো। নাহলে ওদের অভিশাপ আমাদের জীবন্মৃত করে রাখবে।
আপাতত এখন উৎকণ্ঠার প্রহর গুনছি একটি সুন্দর আগামীকালের জন্যে! শেষের শুরুর জন্যে না, একটা সত্যিকারের শুরুর জন্যে! আমাদের জন্যে, আমাদের অস্তিত্বের জন্যে।