সাবস্ক্রাইব
  • প্রতিবেদন
  • পশ্চিমবঙ্গ
  • খেলা
  • Tech-পুর
  • রাশিফল
  • বিনোদন
  • রাজনীতি
  • কী-কেন?
  • সাতকাহন
  • পড়াশোনার খবর
  • ওয়েব গল্প
  • Photos
  • Videos
ad_close_btn
  • খেলা
  • সিনেমা-টিনেমা
  • Photos
  • পশ্চিমবঙ্গ
  • সাতকাহন
  • Tech-পুর
  • Share নিকেতন
  • রাজনীতি
  • Explained
  • কলেজ স্ট্রিট

Powered by :

আপনি সফলভাবে নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করেছেন.
সম্পাদকীয়

করোনা জাগিয়ে তুলছে আমাদের মরে যাওয়া মানবিকতা

মানুষের সাহায্যে পথে নেমেছেন মানুষ। আর এই মানুষ কোনও সেলিব্রিটি, কর্পোরেট, রাজনৈতিক গোষ্ঠী বা নেতা নন। একেবারে সাধারণ মানুষ।

Written by IE Bangla Web Desk

মানুষের সাহায্যে পথে নেমেছেন মানুষ। আর এই মানুষ কোনও সেলিব্রিটি, কর্পোরেট, রাজনৈতিক গোষ্ঠী বা নেতা নন। একেবারে সাধারণ মানুষ।

author-image
IE Bangla Web Desk
13 May 2020 19:50 IST

Follow Us

New Update
coronavirus social service

যাঁরা এই সেবা করছেন, তাঁরা কিন্তু আপনার-আমার মতোই সাধারণ

বয়স মাত্র চার বছর। বাড়ি অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়ওয়াড়া। কী বা সাধ্য তার? তিল তিল করে জমানো মাত্র ৯৭১ টাকা। তাতে কী? সেই টাকাই সে তুলে দিল করোনাভাইরাস আক্রান্ত দুর্গতদের চিকিৎসার স্বার্থে। ছোট্ট এই শিশুর কাজে সকলেই চমৎকৃত ও আপ্লুত। কথায় বলে, শিশুর মধ্যেই ঈশ্বর বাস করেন। আদতে, এই ঘোর সংকটে, চরম অসহায়তায় আমরা কোনও পথ খুঁজে না পেয়ে অগতির গতি ঈশ্বরকেই বারবার ডাকি। ঈশ্বরকে ডাকি, নাকি মানুষের মধ্যে ঈশ্বরকে খুঁজি? আরও একটু প্রাঞ্জলভাবে বলা যায়, ঈশ্বর মাথায় থাকুন। আজ মানুষের সংজ্ঞা প্রায় ভুলে যাওয়া সমাজে নতুন করে যে মানবিক উত্তরণের ছবি মাঝে মাঝেই দেখতে পাচ্ছি আমরা, এও কি এই অন্ধকার সময়ের হিসেবে কম প্রাপ্তি?

Advertisment

ভাইরাসের আক্রমণ, সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন, এবং তৎপরবর্তী আর্থিক সংকট আমাদের আজকের জীবন-প্রেক্ষিত। পৃথিবী এখন আক্ষরিক অর্থেই গভীর অসুখে। এহেন এক পটভূমিতে অত্যাশ্চর্য সেই পরশপাথর আমাদের সামনে। মানুষের নতুন রূপ দর্শন। এ যেন পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনা। একদিকে রোগের আতঙ্ক, মৃত্যুভয়ে দিশাহারা মানুষ। অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কায় বিনিদ্র। রোজ টিভি বা খবরের কাগজের পাতা খুললেই এই খবর। অন্যদিকে ঠিক উল্টো এক ছবি। মানুষের সাহায্যে পথে নেমেছেন মানুষ। আত্মকেন্দ্রিক সমাজ হঠাৎ করেই যেন এক অনির্বচনীয় মানবিক সূর্যের আলোয় উদ্ভাসিত। মানুষ আপন হতে বাহির হয়ে বাইরে দাঁড়িয়েছেন। আর এই মানুষ কোনও সেলিব্রিটি, কর্পোরেট, রাজনৈতিক গোষ্ঠী বা নেতা নন। একেবারে সাধারণ মানুষ।

আরও পড়ুন: ঈদ হোক বা পুজো, করোনা আতঙ্কে উৎসব বিমুখ দুই বাংলাই

সেদিন খবরে দেখলাম মেদিনীপুরের এক সংশোধনাগারের কয়েকজন আবাসিকের কথা। নিজেদের জেলবাসকালীন শ্রমের বিনিময়ে উপার্জিত জমা অর্থের সম্পূর্ণটাই তাঁরা তুলে দিয়েছেন করোনা ত্রাণ তহবিলে। হৃদয় পরিবর্তনের অনুপম উদাহরণ বোধহয় একেই বলে। রাজ্যের আশাকর্মী, কত টাকাই বা বেতন পান। চিকিৎসা পরিষেবার ক্ষেত্রে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফ্রন্টলাইনে দাঁড়িয়ে কাজ করছেন ওঁরা। ওঁদেরই একটি দল, তাঁদের জমা পুঁজির পুরোটাই দান করেন মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে। অর্থাৎ, এঁরা কেউই নিজেদের অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে হাহুতাশ করছেন না। বরং তুলনায় যাঁদের বেশি প্রয়োজন, তাঁদের হাতে তুলে দিচ্ছেন নিজেদের কষ্টার্জিত সম্পদ।

Advertisment

coronavirus social service তুলনায় আর্থিকভাবে দুর্বলদের হাতে ত্রাণ তুলে দিচ্ছেন অনেকেই

মন ভালো হয়ে যায় যখন খবরে দেখি, মেদিনীপুরের ছয়জন কিশোরী তাদের 'কন্যাশ্রী'র টাকা ব্যয় করে খাবার তুলে দেয় নিরন্ন মানুষের মুখে। বা ফেসবুকের পাতায় কোনও অভিভাবক তাঁর ছেলে বা মেয়ের গল্প শোনান, যারা অন্য সময়ে নিছক কেরিয়ার বা স্মার্টফোন মুখী। তারা আজ ভিন্ন পথে, যথাসাধ্য মানুষের পাশে। মা-বাবারাও নিছক স্বার্থান্বেষী বৃত্ত ছেড়ে ওদের উৎসাহ দিচ্ছেন। এ যেন বিচ্ছিন্ন আত্মসুখী মানুষ ফিরছে চিরন্তন মনুষ্যত্বের ছন্দে।

জামালপুরের অরিজিৎ ও সঙ্গীতার বিয়ে ঠিক। যাবতীয় আয়োজন শেষ। হঠাৎই ভাইরাসের আক্রমণ। লকডাউনে নিমন্ত্রিতদের এনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা কঠিন। ফলে, পরিকল্পনার পরিবর্তন। খাওয়াদাওয়া থেকে শুরু করে আনুষঙ্গিক অন্যান্য খরচ বাতিল করলেন হবু দম্পতি। সেই টাকা খরচ করলেন লকডাউনে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের খাদ্য সামগ্রী দেওয়ার কাজে। কাজ হারিয়ে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে হেঁটে ফিরছিল পরিযায়ী শ্রমিকের দলটি। শেষে জামালপুরের মুক্তকেশী বিদ্যালয়ে আশ্রয়। সেখানেই ওঁদের খাদ্য সামগ্রী দেওয়ার ব্যবস্থা করেন অরিজিৎ-সঙ্গীতা। কোনওমতে সারেন অনাড়ম্বর বিয়ের অনুষ্ঠান।

চৌভাগার পঞ্চান্নগ্রামের দীপাঞ্জন পাল ও তাঁর কিছু পাড়ার বন্ধু মিলে দেড় মাসের বেশি সময় ধরে প্রতিদিন প্রায় ৩,৫০০-৪,০০০ গরিব মানুষকে রান্না খাদ্য ও খাদ্য সামগ্রী বন্টন করছেন। এতজন মানুষের রান্নার দায়িত্ব, কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে সেটাও নিজের কাঁধেই তুলে নিয়েছেন দীপাঞ্জনের মা। এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওঁদের দেওয়া খাদ্য সামগ্রীতে পেট ভরছে ক্ষুধার্ত মানুষের। এদের অধিকাংশই শ্রমজীবী নিম্নবিত্তের মানুষ।

আরও পড়ুন: সাপ্লাই লাইন, মদ কিংবা ছড়িয়ে থাকা রুটি

এই মুহূর্তে হোটেল ও রেস্তোরাঁ ব্যবসা সম্পূর্ণ শুয়ে পড়েছে। এই ব্যবসাকে স্বাভাবিকভাবেই জরুরি পরিষেবার মধ্যে ধরা হয় না, সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকবে না, সেই আশঙ্কাতেই। কবে খুলবে কোনও গ্যারান্টি নেই। বলছি সেইসব ছোটমাপের হোটেলের কথা, যাদের নিজেদের ডেলিভারি সিস্টেম নেই বা কোনও বড় ডেলিভারি সংস্থার সঙ্গেও চুক্তিবদ্ধ নয়। আর্থিক নিরাপত্তার দিক থেকে চরম সংকটে এরা। কিন্তু তার জন্য হাত গুটিয়ে বসে থাকা নয়। বেশ কয়েকটি মফঃস্বল ও জেলা শহরের হোটেল মালিকরা সংগঠিত হয়ে ভবঘুরে, ফুটপাথবাসী, নিম্নবিত্তের মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করছেন নিয়মিত। নিজেদের ভবিষ্যৎ নয়, ওঁদের কাছে অধিক গুরুত্ব পেয়েছে অসহায় মানুষের ক্ষুধা।

বেলেঘাটার তরুণ অভিষেক তেওয়ারি। বছর দুয়েক হল বিয়ে হয়েছে। বাড়িতে সাত মাসের বাচ্চা। নিম্নবিত্ত পরিবারের অভিষেক একটি বেসরকারি সংস্থার সেলসম্যান। অভিষেকের আয়েই সংসার চলে। সদিচ্ছা থাকলে যে উপায় হয়, তা দেখিয়ে দিয়েছেন অভিষেক। যবে থেকে এ রাজ্যে করোনা ভাইরাসের আক্রমণের খবর মিলেছে, তখন থেকে নিজের জমানো টাকা আর তার সঙ্গে অসংখ্য শুভানুধ্যায়ীর সাহায্য নিয়ে কাজ করে চলেছেন তিনি। প্রতিদিন বহু পুলিশকর্মী উপকৃত হচ্ছে অভিষেকের কর্মকাণ্ডে। স্ত্রীকেও পাশে পেয়েছেন। বাড়িতেই কাপড় কেটে মাস্ক তৈরি করছেন তিনি, যাতে অভিষেকের কষ্ট কিছুটা লাঘব হয়। বেলেঘাটা আইডি, এনআরএস, এমআর বাঙুর, এসএসকেএম, এবং আরও কয়েকটি হাসপাতালে চরকিপাক খাচ্ছে অভিষেকের মোটরবাইক। লকডাউনের আগে থেকেই বিভিন্ন জায়গা থেকে চেয়েচিন্তে মাস্ক জোগাড় করেছেন। সঙ্গে বিভিন্ন দোকান থেকে সংগ্রহ করেছেন জলের জার। দিনের বেলা অফিস। সন্ধের পর থেকে বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে যে সমস্ত পুলিশকর্মী কাজ করছেন, তাঁদের মাস্ক বিতরণ করছেন অভিষেক। তার সঙ্গে বিশুদ্ধ পানীয় জলও পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি।

coronavirus social service শিলিগুড়িতে 'জনতা ডেলিভারি' স্রেফ পরিষেবা দিচ্ছে না, কর্মসংস্থানও করছে

সম্প্রতি শিলিগুড়ির তরুণ শিব বনসলের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। তাঁর প্রতিষ্ঠিত সংস্থা 'জনতা ডেলিভারি'-র পরিষেবা ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছে এলাকাবাসীর। লকডাউনের আগে কর্মসূত্রে বেঙ্গালুরুতে ছিলেন শিব। করোনার আক্রমণ, লকডাউন ইত্যাদি পরপর ঘটতেই প্রৌঢ় বাবা-মায়ের দেখাশোনার তাগিদে তড়িঘড়ি শিলিগুড়ি ফেরেন তিনি। ওঁর কথায়, "ফিরেই লক্ষ্য করি, লোকজন লকডাউনের নিয়ম বেমালুম ভুলে মুদি দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন। এই বিষয়টা আটকাতেই আমার এই সার্ভিস। একদিকে লোকজন বাড়িতে বসে চাহিদামতো জিনিস পাচ্ছেন। এতে রোগ ছড়ানোর ব্যাপারটা আটকানো যাচ্ছে। এছাড়া প্রবীণ মানুষদের পক্ষেও সাহায্যকারী হচ্ছে এই পরিষেবা। অন্যদিকে বেশ কিছু কর্মহীন তরুণকে ডেলিভারি বয়ের পেশায় এনেছি। তাদের মধ্যে ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকও আছেন।"

আরও পড়ুন: অতি প্রচারে বিভ্রান্তি, তা থেকে উৎপন্ন অমানবিকতা

শিলিগুড়িতে দুটি বিখ্যাত খাবার ডেলিভারি সংস্থা কাজ করছে বেশ কিছুদিন। কিন্তু মুদি দোকানের জিনিস অর্থাৎ চাল, ডাল, আটা, তেল, মশলা ইত্যাদি অতি জরুরি সামগ্রী ডেলিভারি এখনও শুরু হয়নি। এক্ষেত্রে শিবের 'জনতা ডেলিভারি' যে দারুণ সাহায্যকারী হয়ে উঠেছে, তাতে আর সন্দেহ কী? ন্যূনতম ডেলিভারি চার্জের মাধ্যমে বাড়ির দরজায় অর্ডার অনুযায়ী সামগ্রী পেয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা। একটি নির্দিষ্ট নম্বরে হোয়াটসঅ্যাপ বা ওদের ওয়েবসাইটে যোগাযোগ করে অর্ডার দেওয়া যাচ্ছে। এর সঙ্গে এই কঠিন সময়ে কিছু মানুষকে কাজের সুযোগ করে দেওয়াটাও বলা যায় যথেষ্ট অভিনন্দনযোগ্য এক পদক্ষেপ।

সীমিত শব্দ সংখ্যায় কতজনের কথাই বা বলা যায়? অথচ বলতে ইচ্ছে করে। আজকাল সমাজে ইতিবাচক ঘটনা বড় কম ঘটে। কদাচিৎ ভালো কিছু ঘটলে মন সত্যিই আপ্লুত হয়। মানুষের প্রতি বিশ্বাস ফিরে আসে। মানুষ চাইলে কী না পারে? সে তার হৃদয়কে আকাশের মতো উদার করে দিতে পারে। এই মুহূর্তে ভাইরাস আক্রমণের আতঙ্ক ছাড়িয়ে ক্রমশ প্রসারিত মানুষের সংবেদনশীল হাত। তারা সংখ্যায় ক্রমশ বাড়ছে। পাড়ায়, জেলায়, গ্রাম-শহরে বহু মানুষ নিজেদের উজাড় করে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন অসহায়ের সেবায়। খাদ্য, ওষুধ, জামাকাপড়, অর্থ, যে যেমন সাধ্য অনুদানের ব্যবস্থা করছেন। একা অথবা সাংগঠনিক ভাবে। যেভাবেই করুন, ওঁদের সবাইকে আমাদের কুর্ণিশ।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

আমাদের নিউজলেটার সদস্যতা! একচেটিয়া অফার এবং সর্বশেষ খবর পেতে প্রথম হন
logo

সম্পর্কিত প্রবন্ধ
পরবর্তী প্রবন্ধ পড়ুন
সর্বশেষ গল্প
আমাদের নিউজলেটার সদস্যতা! একচেটিয়া অফার এবং সর্বশেষ খবর পেতে প্রথম হন

Powered by


Subscribe to our Newsletter!




Powered by
ভাষা নির্বাচন কর
Bangla

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন

আপনি যদি এই নিবন্ধটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন
তারা পরে আপনাকে ধন্যবাদ জানাবে

ফেসবুক
Twitter
Whatsapp

কপি করা হয়েছে!