Advertisment

কোভিড-১৯: লকডাউন বনাম হার্ড ইমিউনিটির তত্ত্ব

করোনা-পর্বকে ভবিষ্যৎকাল হয়ত বিচার করবে স্বাস্থ্য-ব্যবস্থা এবং প্রধানত বয়স্কদের চিকিৎসা-সংকট বনাম অর্থনীতির মহা-বিপর্যয়ের এক জটিল সন্ধিক্ষণে পৃথিবী কী সিদ্ধান্ত নিল, পৃথিবীর কোন দেশ কোন দিকে ঝুঁকে পড়ল তার নিরিখেই।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Herd Immunity, Pandemic

কলকাতার রাস্তায় (ছবি- শশী ঘোষ)

করোনাভাইরাসের অভিঘাতে বিপর্যস্ত পৃথিবীর চিকিৎসা-পরিকাঠামো। অজানা ভাইরাসকে কী করে প্রতিহত করা যাবে, অজানা সবার। তাই কোথাও কোনও আশার আলো দেখলেই তা আঁকড়ে ধরতে চাইবে দুনিয়া, এটাই স্বাভাবিক। এই যেমন, প্রথম থেকেই প্রচুর করোনার "টেস্ট" করে করে পরিস্থিতিকে আয়ত্তে নিয়ে এসেছে দক্ষিণ কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়া তাই একটা 'মডেল'ই হয়ে গেল বাকি পৃথিবীর কাছে। কিন্তু মুশকিল হল সেই 'মডেল'কে অনুকরণ করা দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়। 'টেস্ট' করার জন্য প্রয়োজনীয় কিটের জোগান পেতেই হিমশিম অন্যরা।

Advertisment

আপাতভাবে করোনা-দানবকে খানিকটা বাগে আনতে, অর্থাৎ ওই যাকে টেকনিক্যাল ভাষায় বলে 'ফ্ল্যাটেনিং অব দ্য কার্ভ', সেটা অর্জন করতে এবং একটা সামাল দেওয়ার চেষ্টায় কোন না কোনও ধরণের লকডাউন অথবা কোয়ারিন্টিনের খোলসে ঢুকে পড়েছে প্রায় ৮৭ শতাংশ দুনিয়া। এ প্রেক্ষিতেও সম্প্রতি আবার 'সুইডেন মডেল' নিয়ে বেশ হইচই হচ্ছে। করোনা-কালে সুইডেনের পদ্ধতিটাও ছিল বেশ ব্যতিক্রমী। সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট প্রধানমন্ত্রীর পরিচালনায় সুইডেন কিন্তু লকডাউন করেনি দেশকে, জোর করে চাপিয়ে দেয়নি সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিংও। পরিবর্তে বয়স্কদের ঘরে থাকতে পরামর্শ দিয়েছে, ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম'-এর পরামর্শ দিয়েছে কর্মীদের, সবাইকে পরামর্শ দিয়েছে নিয়মিত হাত ধুতে, সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং করে যেতে, এবং অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ না করতে। এবং লোকজন মোটামুটি কথা শুনেছে। সে দেশের লোকজন এভাবেই অভ্যস্ত। কিন্তু ব্যবসা-বাণিজ্য খোলা রেখেছে সুইডেন, খোলা রেখেছে ১৬ বছরের কমবয়সীদের স্কুলও। মার্চের শেষে এবং এপ্রিলের গোড়ায় করা সমীক্ষা অনুসারে রাজধানী স্টকহোমের আড়াই শতাংশ মানুষ নাকি সে সময়েই আক্রান্ত হয়েছে করোনাতে, যাদের অনেকেই ছিল উপসর্গ-হীন। আর এখন বলা হচ্ছে স্টকহোমের ২০ শতাংশ মানুষ নাকি ইতিমধ্যেই করোনার ইমিউনিটি বা প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করে ফেলেছে। স্টকহোমে থাকেন সে দেশের এক-চতুর্থাংশ লোক। এবং আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই স্টকহোম নাকি অর্জন করে ফেলবে "হার্ড ইমিউনিটি", যে হার্ড ইমিউনিটি এসে গেলে মহামারীর ভয় থাকবে না আর।

হার্ড ইমিউনিটিই কি অনিবার্যতা?

'হার্ড ইমিউনিটি' গড়ে তোলার পক্ষে বড় যুক্তি হল, লকডাউনের সাহায্যে মহামারীর বিস্তারকে খানিক শ্লথ করা যায় ঠিকই। কিন্তু যতক্ষণ না দেশের একটা বড়সড় অংশের মধ্যে সংশ্লিষ্ট অসুখের জন্য ইমিউনিটি গড়ে ওঠে, সংক্রমণ চলতেই থাকবে। ওদিকে দেশের মোটামুটি ৬০-৭০ শতাংশ জনতার যদি এই ইমিউনিটি গড়ে ওঠে, তবেই থেমে যাবে ভাইরাসের বিজয়রথ। এটাই সংক্রমণের অন্তর্নিহিত বিজ্ঞান। যে কোন মহামারীর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য এই কথা। আমেরিকার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনসনের হিসেব বলছে এই সংক্রমণটা অবশ্য ৮৫ শতাংশেরও হতে পারে হার্ড ইম্যুনিটি গড়ে ওঠার আগে। এই তত্ত্ব অনুসারে, যদি একটা দেশের ৭০-৮০ শতাংশ লোকের অসুখটা হবার সম্ভাবনা না থাকে, তবে বাকি ২০-৩০ শতাংশ মানুষ অনেকটা সুরক্ষিত থাকবে, তাদের অন্যদের থেকে সংক্রামিত হবার সম্ভাবনা কমে যাবে। এখানে অবশ্য ধরে নেওয়া হয়েছে, কারও কোভিড-১৯ নামক অসুখটি হলে তার শরীরে থেকে যাবে এই অসুখের জন্য প্রতিরোধ ক্ষমতা। ভাইরাস-ঘটিত অনেক ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য হলেও, সর্বক্ষেত্রে নয়। সাধারণ সর্দিকাশিই তো লোকের বারবার হয়। যাই হোক, মানুষের মধ্যে এই ইমিউনিটি কিন্তু গড়ে উঠতে পারে দু'ভাবে-- এক, যদি ভ্যাকসিন দেওয়া হয়; অথবা, যদি তাদের অসুখটা হয়। করোনার ভ্যাকসিন তৈরি করতে উঠেপড়ে লেগেছে গোটা দুনিয়া, ঠিকই। কিন্তু এটা এখন প্রায় সবাই জেনে গিয়েছে যে, ভ্যাকসিন তৈরি হয়ে বাজারে আসতে অন্তত এক বছর লাগেই। বেশিও লাগতে পারে। তাই যে কোনও দেশের পক্ষে এই মুহূর্তে হার্ড ইমিউনিটি গড়ে তোলার একটাই উপায় দেশের লোকদের মহামারীর সময়ে স্বাভাবিক দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে দেওয়া। হয়ত খানিকটা নিয়ন্ত্রিত ভাবে। তার ফলে জনগণ আক্রান্ত হবে, এবং এর ফলেই তাদের মধ্যে গড়ে উঠবে  প্রতিরোধ ক্ষমতা। এই কাজটাই করে গিয়েছে সুইডেন।

তবে 'হার্ড ইমিউনিটি' এসে গেলেই যে এই অসুখটা আর কারও হবে না, ব্যাপারটা সে রকম নয়। লোকজনের অসুখ হবে, এমনকি অসুখে লোকজন মরবেও, তবে তা আর মহামারীর আকার নেবে না, এই যা। এটা ঠিকই যে করোনাভাইরাসের প্রবল প্রকোপের মধ্যেও ইতালি, স্পেন বা জার্মানির মত দেশগুলি একটু একটু করে খুলে দিচ্ছে তাদের অর্থনীতিকে, পূর্ণ লকডাউন হয়ে উঠছে আংশিক লকডাউন। অর্থনীতিকে বাঁচাতে গেলে এটুকু হয়ত করতেই হবে। কারণ অর্থনীতিকে কিছুটা হলেও রক্ষা না করতে পারলে শুধুমাত্র ধনীরা নয়, চূড়ান্ত বিপদে পড়বে অসংখ্য সাধারণ মানুষ। জীবিকার সমস্যায়, খাদ্য-সমস্যায় দিশাহারা হয়ে পড়বে তারা।

আসলে লকডাউন না হার্ড ইমিউনিটি-- এনিয়ে দ্বন্দ্বটা আপাতদৃষ্টিতে অর্থনীতির অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িয়ে। ধনী দেশগুলিও ভয় পাচ্ছে, তাদের জমাটি অর্থনীতির দড়ি ধরে টান পড়তে পারে এর ফলে। কথাটা একদম ঠিক। কিন্তু করোনার ক্ষেত্রে বিশেষ করে, এই তত্ত্বের মধ্যে একটা অন্য সুর রয়েছে, দেশের অল্প বয়সী জনতা করোনার ঝড়ঝাপটা সামলে উঠবে। কিন্তু কী হবে ষাট কিংবা সত্তরের উপরে থাকা জনগণের? ৬০ বছরের বেশিদের যে করোনায় মৃত্যুর সম্ভাবনা বেশি, সেটা প্রতিষ্ঠিত সত্য। বয়স্কদের কি করে সামলে রাখা সম্ভব এই অতিমারীর মধ্যে, সেটা একেবারেই পরিষ্কার নয়। ব্রিটেনের অভিজ্ঞতা বলছে, হার্ড ইমিউনিটি তত্ত্ব আঁকড়ে পড়ে না থেকে আগে লকডাউনের বন্ধ দরজার ওধারে ঢুকলে ব্রিটেনে বেঁচে যেত অনেক প্রাণ। যাদের অধিকাংশই কিন্তু বৃদ্ধ।

চিকিৎসক ও সমাজ – মহামারীর দ্বিপ্রহরে 

সুইডেন ছাড়াও যে দেশগুলো হার্ড ইমিউনিটির পক্ষে জোরদার সওয়াল করে গিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে আমেরিকা এবং ব্রিটেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প করোনাভাইরাসকে মোটামুটি সাধারণ ফ্লু-র চাইতে বেশি গুরুত্ব দিতে নারাজ ছিলেন। তারপর আমেরিকা জুড়ে লকডাউন করতে হলেও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমেরিকাকে মুক্ত করে দিতে তিনি উদগ্রীব। এটা আমেরিকার নির্বাচনের বছর। আর পুনর্নির্বাচনের লড়াইতে টিঁকে থাকতে গেলে অর্থনীতিকে চনমনে রাখতেই হবে ট্রাম্পকে। রিপাবলিকানরা প্রকাশ্যেই বলেছেন, অর্থনীতির স্বার্থে প্রয়োজনে বলিদান দিতে হবে দাদু-ঠাকুমাদের। প্রতিবাদ করছেন ডেমোক্র্যাটরা। বাদ-প্রতিবাদ উভয়ই যেন রাজনৈতিক তরজা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও 'হার্ড ইমিউনিটি'র পক্ষে সওয়াল করে গেছেন প্রথম দিকে। তারপর মৃত্যু মিছিলের চাপে পড়ে ঢোক গিলে দেশ জুড়ে লকডাউন করতে হয়েছে তাঁকে। ইতিমধ্যে টেমস দিয়ে বয়েছে অনেক জল। জনসন নিজে করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন। ব্রিটেনের লকডাউনের মেয়াদ আরও বেড়েছে।

হল্যান্ড আর একটি ইউরোপীয় দেশ যারা প্রথম দিকে হার্ড ইমিউনিটির তত্ত্বে ভর করে এগোতে চেয়েও ধাক্কা খেয়েছে পরে। মার্চের মাঝামাঝি ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট্টে ঘোষণা করেন তাঁদের আশাবাদী প্রকল্প। সমাজের নড়বড়ে অংশকে, অর্থাৎ বয়স্কদের, যতটা সম্ভব আগলিয়ে রেখে নিয়ন্ত্রিত উপায়ে ভাইরাসকে তার প্রভাব বিস্তার করতে দেওয়াই ছিল হল্যান্ডের প্রাথমিক পরিকল্পনা। হল্যান্ডের জনতার মধ্যে অল্পবয়স্কদের সংখ্যাও বেশ বেশি। তাতেও কিন্তু শেষ রক্ষা করা যায় নি। পরিস্থিতি ক্রমে খারাপ হতে থাকলে, হার্ড ইম্যুনিটির তত্ত্ব ঝেড়ে ফেলে শেষে কিন্তু লকডাউনের মধ্যে সিঁধিয়ে গিয়েছে হল্যান্ড।

ওদিকে ব্রাজিলের অতি-দক্ষিণপন্থী প্রেসিডেন্ট জেয়ার বলসোনারো-ও অনবরত করোনাভাইরাসকে 'ছোটখাট ফ্লু' বলে গিয়েছেন। প্রায় ট্রাম্পের সুরে সুর মিলিয়ে। বলসোনারো-র দৃষ্টিভঙ্গিও অনেকটাই বরিস জনসনের 'হার্ড ইমিউনিটি' তত্ত্বের মতই ছিল। কিন্তু এই মুহূর্তে ব্রাজিলও স্বস্তিতে নেই করোনার প্রকোপে।

পুঁজিবাদের কবর খুঁড়তেই যেন করোনাভাইরাসের আবির্ভাব

আসলে লকডাউন না করে স্বাভাবিকভাবে ভাইরাসকে বিস্তৃত হতে দিলে একসাথে বিপুল সংখ্যক জনতা অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া তখন উন্নত দেশগুলিরও ক্ষমতার বাইরে চলে যায়, তাদের জমাটি স্বাস্থ্য-পরিষেবা সত্ত্বেও। আর যে সব দেশের চিকিৎসা-পরিষেবা ততটা উন্নত নয়, তাদের কথা তো বলাই বাহুল্য। সুইডেনের মত ধনী কিন্তু ছোট দেশ, যার জনসংখ্যা মাত্র এক কোটি, জনঘনত্ব বেশ কম-- প্রতি বর্গ কিলোমিটারে মাত্র ২৫, এবং যে দেশের লোকজন স্বাভাবিকভাবেই সরকারি অনুশাসন আর বিধিনিষেধ মেনে চলতে অভ্যস্ত, সেখানে এই 'হার্ড ইমিউনিটি'র তত্ত্ব প্রয়োগ করা হয়ত তুলনায় সহজ। তবু, লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, সুইডেনের করোনাতে মৃত্যুহার কিন্তু অন্যান্য নর্ডিক দেশগুলির মধ্যে বেশ বেশি। হয়ত এই হার্ড ইমিউনিটি তত্ত্বের প্রয়োগের জন্যই, লকডাউন না হবার কারণেই। সুইডেনে এই মৃত্যুহার মিলিয়নে ১৩১। ওদিকে ডেনমার্কের ক্ষেত্রে তা ৫৫, আর ফিনল্যান্ডে ১৪। সুইডেন প্রথম থেকে করোনা নিয়ে একটা গয়ংগচ্ছ ধরণের আলগা মনোভাব দেখালেও, পরের দিকে সে দেশেও ৮০-ঊর্ধ্বদের, এমনকি অনেক ক্ষেত্রে ৮০-র কম বয়সীদেরও, কিছু হাসপাতালে আইসিইউ-তে ভর্তি নেওয়া হয় নি বলে খবর!

ভারতবর্ষের মত দেশ এই হার্ড ইমিউনিটির তত্ত্বের উপর ভর করে এগোয়নি স্বাভাবিক কারণেই। ১৩৫ কোটি জনতার এই দেশের জনঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৪৬৪, সুইডেনের ১৮ গুণ। একসাথে বেশি করোনা রোগী হয়ে গেলে চিকিৎসা পরিষেবা, প্রয়োজনীয় আইসিইউ কিংবা ভেন্টিলেশনে টান পড়বে ভারতবর্ষের। ধ্বসে পড়বে সিস্টেম। তবু, লকডাউনকে হয়ত আস্তে আস্তে আলগা করতেই হবে কোন না কোনও সময়। অর্থনীতিকে ভেন্টিলেশন থেকে বাইরে আনবার জন্য।

দূর ভবিষ্যতে, হয়ত একশ বছর পরে, কখনও করোনা-কালীন 'ইতিহাস' পড়বে সেদিনের পৃথিবী। সেদিনের মানুষ কিভাবে কাটাছেঁড়া করবে এই করোনা-পর্বকে, এই পর্বে বিভিন্ন দেশের সাড়া দেবার ধরনধারণকে, বলা কঠিন। কে জানে, ২০২০ সাল নাগাদ পৃথিবীর একটা অংশে লকডাউন আর অন্য একটা অংশে হার্ড ইমিউনিটি গড়ে তোলার ইচ্ছা বা চেষ্টা, এই দ্বন্দ্বই হয়ত প্রধান উপজীব্য হয়ে উঠতে পারে সে সময়কার মানুষের কাছে। করোনা-পর্বকে ভবিষ্যৎকাল হয়ত বিচার করবে স্বাস্থ্য-ব্যবস্থা এবং প্রধানত বয়স্কদের চিকিৎসা-সংকট বনাম অর্থনীতির মহা-বিপর্যয়ের এক জটিল সন্ধিক্ষণে পৃথিবী কী সিদ্ধান্ত নিল, পৃথিবীর কোন দেশ কোন দিকে ঝুঁকে পড়ল তার নিরিখেই। একটা অংশে হার্ড ইমিউনিটি গড়ে তোলার এই দৃষ্টিভঙ্গি কি ধনতান্ত্রিক দুনিয়ার প্রতিচ্ছবি হিসেবে চিহ্নিত হবে, নাকি অর্থনীতি ধ্বসে পড়লে দরিদ্ররা অনেক বেশি সমস্যায় পড়ত-- কাজ হারাত, না খেয়ে মরত-- এই যুক্তিতে এটা অনেক বেশি জনমুখী হিসেবে বিবেচিত হবে? বয়স্কদের খানিকটা করোনার কাছে উৎসর্গ করে অর্থনীতি বাঁচানো, নাকি প্রয়োজনে অর্থনীতিকে বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলেও দেশের সমস্ত জনতাকে সমানভাবে রক্ষার প্রয়াস দেখানো, কোনটাকে তারিফ করবে ভবিষ্যতের দুনিয়া? আসলে চিন্তা-ভাবনা, দৃষ্টিভঙ্গি তো বদলায় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে।

বর্তমানকালের পৃথিবী কিন্তু দ্বিধা-বিভক্ত। এবং বিতর্ক এবং দ্বন্দ্ব চলতেই থাকবে। আপাতত।

(অতনু বিশ্বাস ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট, কলকাতার রাশিবিজ্ঞানের অধ্যাপক। মতামত ব্যক্তিগত)

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

coronavirus COVID-19
Advertisment