গত কয়েক পর্বে আমরা আলোচনা করেছি আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি, বিজ্ঞানের মধ্যে লুকিয়ে থাকা বিশ্বাস, বাণিজ্যের স্বার্থে বিজ্ঞানের ব্যবহার, ভারতের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেসরকারিকরণ, দ্রুত মূল্যবৃদ্ধি, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বিমা প্রকল্পের প্রবেশ এবং এসবের পিছনে আইন ও প্রশাসনের ভূমিকা সম্বন্ধে আলোচনা করেছি।
আমরা দেখেছি চিকিৎসার বিপুল খরচ সামলাতে মানুষ বিমার ওপরেই ভরসা রাখতে বাধ্য হচ্ছেন, কারণ এছাড়া অন্য উপায় ব্যক্তির হাতে নেই। যেখানে চিকিৎসার খরচের ধাক্কায় প্রতি বছর কিছু পরিবার দারিদ্র্যসীমার নীচে নেমে যাচ্ছে, সেখানে ব্যক্তিগত স্তরে এর প্রতিকার হিসেবে বিমার কথাই মনে পড়বে। ব্যক্তিগত স্তরে এই সিদ্ধান্ত নেবার বিরুদ্ধে কোনো আপত্তি থাকতে পারে না। বস্তুত পরিচিতদের স্বাস্থ্যবিমা করিয়ে নেবার পরামর্শই দেব, কিন্তু ব্যক্তির সঙ্গে সমষ্টিকে ধরলে লাভ লোকসানের একটা সহজ অঙ্ক মনে রাখা জরুরি, যা বস্তুত ব্যক্তির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
বাঞ্ছনীয়: অমর্ত্য সেনের কাছ থেকে যা নতুন করে শেখা গেল
এই সহজ অঙ্কটির প্রসঙ্গ গত পর্বেই উত্থাপন করা হয়েছিল। বিমার প্রিমিয়াম দেবার সময়ে সব বিমাকারীই ভাবেন যে এতে চিকিৎসা সংক্রান্ত খরচ কমবে। বিমার সাহায্যে সব মানুষের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ব্যয় কমানোর স্বপ্ন দেখি আমরা। বাস্তবে তা কি সম্ভব? তাহলে তো বিমা কোম্পানিগুলো লোকসানে চলবে এবং কদিন পরে উঠে যাবে। এদিকে বাস্তবে বিমা ব্যবসা হল পৃথিবীর অন্যতম সেরা লাভজনক ব্যবসা। তাহলে আমাদের সরল সামাজিক স্বপ্নটা হল এই যে বিমার মাধ্যমে সকলের খরচ কমবে আর একইসঙ্গে বিমা সংস্থার লাভও বাড়বে? এরকম পরস্পর বিরোধী দুটো অর্থনৈতিক ব্যাপার একসঙ্গে ঘটা কি সম্ভব? শেষ পর্যন্ত হয় এই যে বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং বিমা ব্যবসা, দু-দুটো লাভজনক ব্যবসার মুনাফার টাকা আপনি দিতে থাকেন নিজের পকেট থেকে। হঠাৎ একবারে অনেক বড় অঙ্কের অপ্রত্যাশিত ব্যয়ের ধাক্কা আপনাকে একেবারে শুইয়ে দেবে না, এটাই আপনার একমাত্র প্রত্যাশা। বস্তুত এটুকু পাবার জন্য আপনি বহু বছর ধরে প্রিমিয়াম দিয়ে একবারের খরচটাকে অনেকগুলো বছরওয়াড়ি টুকরোয় ভাগ করে নিতে চান।
সেটুকুও কি বাস্তবে সম্ভব? দেশ বা পৃথিবী জাতীয় বিশাল পরিসরে কোনো বিষয় বুঝতে গেলে অনেক সময় গুলিয়ে যায়, তাই ছোট পরিসরে বোঝার চেষ্টা করি। দেশের বদলে নিজের পাড়ার কথা ভাবুন, যার প্রত্যেক বাসিন্দাকে আপনি চেনেন এবং যাদের লাভ-লোকসানের হিসেব আপনাকে কিছুটা হলেও স্পর্শ করতে সক্ষম। মনে করা যাক আপনার পাড়ার পরিসরের মধ্যে ব্যবসা করতে নেমেছে একটি বিমা কোম্পানির একটি ডিভিশন, যার দায়িত্বে আছেন একজন ম্যানেজার। কোম্পানির এই অংশটির লাভ-লোকসানের হিসেব হবে শুধু আপনার পাড়ার মধ্যে। ডিভিশনটি থাকবে না উঠে যাবে, ম্যানেজারের চাকরি থাকবে না যাবে, সবকিছু নির্ধারিত হবে আগামী পাঁচ বছরে আপনার পাড়ায় তাদের মুনাফার ভিত্তিতে।
মনে করুন আপনারা প্রত্যেকে বাৎসরিক পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকা প্রিমিয়াম (বয়স অনুসারে প্রিমিয়ামের পরিমাণ আলাদা হয়) দিয়ে ব্যক্তিগতভাবে অথবা সমগ্র পরিবারের জন্য বাৎসরিক পাঁচ লক্ষ টাকার বিমা কিনলেন। মোট তিনশটি বিমাপত্র বিক্রি হল, যা বাবদ বাৎসরিক সংগ্রহ ধরা যাক মোট বাইশ লক্ষ টাকা। এজেন্টদের কমিশন, কর্মচারী ও ম্যানেজারের বেতনবাবদ কোম্পানির খরচ বাদ দিয়ে মনে করা যাক কোম্পানির হাতে থাকল ষোলো লক্ষ টাকা (ছোট জায়গা বলে মাইনেও কম ধরা হয়েছে)। পাঁচ বছরে মোট সংগ্রহ এক কোটি দশ লক্ষ টাকা, যার মধ্যে কোম্পানির হাতে থাকে আশি লক্ষ টাকা।
জেএনইউ-তে দীপিকা পাড়ুকোন, তাতে হ’লটা কী?
ধরা যাক পারিবারিক বিমাগুলো ধরে মোট ছয়শ জন ব্যক্তি বিমার আওতায় এলেন এবং মোট তিন হাজার 'পার্সন-ইয়ার' নিয়ে ব্যবসা করার পর পাঁচ বছরে পাড়া থেকে মোট দুশ আশিটি খরচের 'ক্লেম' হল, অর্থাৎ ক্লেমের হার দশ শতাংশেরও কম। প্রত্যেক ক্ষেত্রে দেয় টাকার পরিমাণ আলাদা। এর গড় যদি সাড়ে তিন লক্ষ টাকা করে হয় (অর্থাৎ প্রতিশ্রুত অঙ্কের সত্তর শতাংশ), তাহলে পাঁচ বছরে কোম্পানির ওপর মোট আর্থিক দায় বর্তাবে নয় কোটি আশি লক্ষ টাকার, যা কোম্পানির মোট আয়ের বারো গুণেরও বেশি।
অর্থাৎ একটি বিমা কোম্পানি বাণিজ্য করতে নেমে যে দায় নেবার প্রতিশ্রুতি দেয় তার ০.৫ শতাংশের বেশি প্রতিশ্রুতি মেটাতে তারা অক্ষম। ব্যবসায়ে লাভবান হতে হলে বাস্তব প্রতিশ্রুতিপূরণের লক্ষ্যমাত্রা হবে আরও কম। তাহলে নিজেরা ব্যবসায় টিকে থাকতে চাইলে এই বিমা কোম্পানিগুলো কী পদ্ধতি অবলম্বন করবে?
প্রথমে অপেক্ষাকৃত কম প্রিমিয়ামে বিমাপত্র বিক্রি করবে এবং বেশিরভাগ ক্লেম ঠিকমতো মেটাবে, যাতে বিমাটি জনপ্রিয় হয়। তারপর যখন ক্রেতার সংখ্যা বাড়বে এবং এমন জনমত তৈরি হবে যে স্বাস্থ্যবিমা করানো অত্যাবশ্যক, অর্থাৎ গ্রাহক টানার জন্য আর খুব বেশি লোভনীয় প্রকল্পের প্রয়োজন হবে না, তখন ক্রমশ বিমার প্রিমিয়ামের পরিমাণ বাড়তে থাকবে। ভারতে সবে বাড়তে শুরু করেছে, মার্কিন মুলুকে বিমা মহার্ঘ। কয়েক বছর পর এদেশেও হয়ত চিকিৎসা বিমার জন্য আপনাকে বছরে চল্লিশ-পঞ্চাশ হাজার টাকা ব্যয় করতে হবে।
তীর্থজল-কথা
পাশাপাশি প্রয়োজনে টাকা পেতেও ক্রমশ অসুবিধে বাড়বে। চাকরির সূত্রে চাকুরিদাতা বড় কোম্পানির তরফে করিয়ে দেওয়া "গ্রুপ ইনশিওরেন্স"-এর ক্ষেত্রে অসুবিধে একটু কম হবে, কারণ তাহলে একবারে কয়েক হাজার খদ্দের হাতছাড়া হবার সম্ভাবনা এবং সেই কোম্পানির তরফে মামলা হতে পারে, কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে কেনা বিমার ক্ষেত্রে সমস্যা লক্ষণীয় হবে। ক্যাশলেস প্রকল্পের ক্ষেত্রে প্রায়শই দেখা যাবে যে আপনার রোগে হাসপাতালে ভর্তি হবার প্রয়োজন ছিল কিনা এমন সন্দেহ প্রকাশ করে ক্যাশলেস সুবিধা দিতে গররাজি হবে বিমা সংস্থা। আপাত অবিশ্বাস্য হলেও ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় দেখেছি, এমনকি স্ট্রোক রোগীর ক্ষেত্রেও বিমা সংস্থার তরফে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়, হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন নিয়ে। প্রায়শই এদের তুষ্ট করার জন্য রোগের গুরুত্ব প্রমাণ করতে দু'একটা বাড়তি পরীক্ষা করাতে হয় (যা এঁরা চেয়ে পাঠান), যেগুলো হয়ত চিকিৎসক করাতে চাইছিলেন না। এরপরেও যদি বিমা সংস্থা তুষ্ট না হয়, তাহলে তখনকার মতো সমস্ত টাকা আপনাকেই মেটাতে হবে নিজের পকেট থেকে। তারপর ক্লেম ফর্ম জমা দিয়ে লাগাতার তদ্বির করে গেলে হয়ত ছয় মাস পরে টাকা পেতে পারেন। এতে বিমা কোম্পানির লাভ ওই ছয় মাসের সুদ এবং কিছু ব্যক্তি লেগে থাকতে না পেরে হাল ছেড়ে দিলে তাঁদের টাকা আর দিতে হবে না।
বেশ কিছু ক্ষেত্রে নানারকম অজুহাতে আদৌ আপনাকে কোনো টাকা দিতে রাজি হবে না বিমা সংস্থা। যেমন ধরুন আপনার পলিসিটি ছয় বছরের পুরনো, কিন্তু দেখা যাচ্ছে সাড়ে ছয় বছর আগে আপনার প্রথম ডায়াবেটিস ধরা পড়েছিল। সেটাকে বলা হবে প্রিএগজিস্টিং ডিজিজ, যার দায় নেবে না বিমা সংস্থা। এখন যদি আপনি কিডনির অসুখে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন, তাহলে আপনাকে জানানো হবে যে এই কিডনির রোগ ডায়াবেটিসের কারণে, তাই এর দায় বিমা কোম্পানি নিতে অপারগ। এর সপক্ষে অর্থনৈতিক যুক্তি আছে। সত্যিই তো, যদি কেউ ক্যান্সার ধরা পড়ার পর ক্যান্সারের চিকিৎসা পাবার উদ্দেশ্যে বিমা করেন এবং মাত্র সাত-আট হাজার টাকা প্রিমিয়াম জমা দিয়েই কয়েক লক্ষ টাকা দাবি করে বসেন দুই মাসের মধ্যে, তাহলে কীভাবেই বা কোনো ব্যবসায়িক সংস্থার পক্ষে সেই দাবি মেটানো সম্ভব নয়। সমস্যা হল, এই সরল যুক্তিটি জটিল হতে হতে লোক ঠকানোর হাতিয়ার হয়ে ওঠে।
একটা উদাহরণ দিই। আমার পরিচিত এক মার্কিন নাগরিক টানা চোদ্দ বছর বিমার প্রিমিয়াম দিয়েছেন এবং কখনো নিজের চিকিৎসা বাবদ একটি ডলারও দাবি করেননি। ২০১২ দালে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। তাড়াতাড়ি নিকটবর্তী ভালো হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা করান এবং চিকিৎসান্তে বিমা কোম্পানির কাছে টাকা চেয়ে আবেদন করেন। কয়েকদিনের বিমা সংস্থার তরফে চিঠি দিয়ে তাঁকে জানানো হয় যে বিমাটি কেনার সময় যেসব তথ্য তিনি দিয়েছিলেন, তার মধ্যে একটি ভুল তাঁরা খুঁজে পেয়েছেন। তার ফলে তাঁর পলিসিটি বাতিল ঘোষণা করা হল। এই কথা কেন আগে জানানো হয়নি? এত বছর কেন টাকা নেওয়া হল? সেই টাকা কেন ফেরত দেওয়া হবে না? এসব প্রশ্নের কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
শাহিনবাগের পক্ষে এবং ওমব্যাটদের প্রতি ভালোবাসায়
যেহেতু একজন অসংগঠিত ব্যক্তি প্রতারিত হলে মাত্র একজন খরিদ্দার হাতছাড়া হবে (যাকে তখন ছেড়ে দিতেই আগ্রহী বিমা সংস্থা) এবং একজন ব্যক্তির পক্ষে বড় উকিল নিয়োগ করে বিমা সংস্থার দুঁদে উকিলে বিরুদ্ধে দীর্ঘ মামলা চালানো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সম্ভব নয়, তাই ব্যক্তি মানুষকে প্রতারণা করা ছাড়া এই সংস্থাগুলোর উপায় নেই দীর্ঘ মেয়াদে টিকে থাকতে ও লাভবান হতে হলে। মার্কিন ভদ্রলোক যদি মাইক্রোসফটের কর্মী হতেন, তাহলে সম্ভবত এই অভিজ্ঞতা তাঁর হত না, কারণ মাইক্রোসফট পাল্টা চাপ দেবার ক্ষমতা রাখে। ভারতের মতো দেশে অধিকাংশ মানুষ ছোট সংস্থা বা অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করেন। তাঁরা কি এই লড়াই লড়তে সক্ষম? বিমা ক্রেতাদের শক্তিশালী সংগঠন থাকলে কিছুটা সুরাহা হতে পারে, কিন্তু পথটি কঠিন।
বেশিরভাগ বিমা শুধুমাত্র ভর্তি হয়ে চিকিৎসার খরচ দিতে প্রতিশ্রুত। আউটডোর চিকিৎসার খরচ পাওয়া যায় না। এদিকে চিকিৎসার বেশিরভাগটাই হয় আউটডোর ভিত্তিতে। সামগ্রিকভাবে চিকিৎসা বাবদ খরচের সিংহভাগ এখানেই। অর্থাৎ মানুষের চিকিৎসার খরচের বেশিরভাগটাই চিকিৎসা বিমার আওয়াতায় নয়। নির্দিষ্ট কয়েকটি রোগের ক্ষেত্রে আউটডোর চিকিৎসার খরচও দেবার শর্তে কিছু নতুন ধরণের স্বাস্থ্যবিমা বিক্রি হচ্ছে ইদানীং। এগুলোর প্রিমিয়াম অনেক বেশি এবং শর্ত জটিল। না বুঝে এগুলো কিনলে প্রত্যাশা ভ্রান্ত বলে প্রমাণিত হতে পারে।
কিছু সংখ্যক বিমা ক্রেতার মধ্যে এমন কিছু প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়, যা সমর্থনযোগ্য নয়। বিমা সংস্থার কাছে অনেক তথ্য গোপন করেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, চিকিৎসকের কাছেও তথ্যগুলো লুকোন, যাতে বীমার টাকা পেতে অসুবিধে না হয়। ধূমপান বা মদ্যপানের কথা অনেকেই গোপন করেন। প্রচুর মদ্যপানের ফলে সৃষ্ট অ্যালকোহলিক প্যাংক্রিয়াটাইটিসের রোগীর পরিজনেরা যদি টাকার লোভে ঘোষণা করেন যে তিনি কোনোদিন পানীয় স্পর্শই করেননি, তবে রোগীর চিকিৎসা বিপথগামী হয় এবং প্রাণ বাঁচানো কঠিনতর হয়ে পড়ে। হয়ত কেউ ডায়াবেটিসের জন্য নিয়মিত ইনসুলিন নেন। তাঁর পরিজনেরা জানালেন ডায়াবেটিস নেই। ব্যস! চিকিৎসকদের চোখের সামনে সুগার বেড়ে হল সাতশ (ইনসুলিনের ডোজ না পাবার ফলে) এবং রোগ হল জটিলতর। মনে রাখা কর্তব্য যে মূল লক্ষ্য বিমার টাকা নয়, আরোগ্য। টাকার জন্য রোগীকে মেরে ফেলা বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
কেউ কেউ আবার খরচসাপেক্ষ পরীক্ষা করানোর জন্য হাসপাতালে ভর্তি হতে চান, যাতে টাকা পাওয়া যায়। তাঁদের জানানো হয় যে শুধু পরীক্ষার জন্য ভর্তি হলে বিমার টাকা পাওয়া যায় না। তাঁরা তখন চিকিৎসককে চাপ দেন মিথ্যে কিছু লিখে দেবার জন্য। তাঁদেরকে আমরা বারবার নিষেধ করি এরকম করতে, বিভিন্ন কারণে। প্রথমত চিকিৎসা সংক্রান্ত মিথ্যা কথা লেখা অনৈতিক। দয়া করে এটা করার জন্য চিকিৎসককে চাপ দেবেন না। অধিকাংশ চিকিৎসক রাজি হবেন না। যদি কেউ রাজি হন, তাহলেও সমস্যা আছে। হয়ত আপনার একটি এম আর আই প্রয়োজন ছিল। মিথ্যা ইমার্জেন্সি দেখিয়ে ভর্তি করতে গেলে আরও পাঁচটা পরীক্ষা করাতে হবে। তার খরচ আছে। হাসপাতালের বেড ভাড়াও লাগবে। উপরন্তু আপনাকে কিছু ইনজেকশন দিতে হবে (জোর চিকিৎসা চলছে বোঝানোর জন্য), যা আপনার প্রয়োজন ছিল না। এত কিছুর পরেও যদি বিমা সংস্থা সন্তুষ্ট না হয়, তবে আপনার খরচ হবে পাঁচগুণ এবং চিকিৎসক কোনোভাবে সেই খরচ কমাতে পারবেন না।
এভাবে পাশ কাটিয়ে ফাঁকতালে নিজেরটুকু গুছিয়ে নেবার বদলে স্বাস্থ্য পরিষেবার মডেল কী হওয়া উচিত তা ভাবা এবং তা আদায়ের জন্য সমবেতভাবে সক্রিয় হওয়া অনেক ভালো। সরকারের কিছু স্বাস্থ্য প্রকল্প আছে। সেসব নিয়ে আলোচনা করা যাবে পরবর্তী পর্যায়ে।
(কৌশিক দত্ত আমরি হাসপাতালের চিকিৎসক, মতামত ব্যক্তিগত)
এই কলামের গুরুত্বপূর্ণ লেখাগুলি পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে