Advertisment

বছরের শুরুতেই পরীক্ষার মুখে ভারত, অপেক্ষায় নিউজিল্যান্ড

বছরের প্রথম কলামে ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার শরদিন্দু মুখোপাধ্যায়ের নজরে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, সাউথ আফ্রিকা, এবং বাংলার ক্রিকেটও বটে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
india new zealand series

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতকে রোখার ক্ষমতা রাখে নিউজিল্যান্ড। প্রতীকী ছবি।

সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে হারলেও তাদের নিজেদের মাটিতে যথেষ্ট শক্তিশালী দল নিউজিল্যান্ড। ফেব্রুয়ারিতে ভারতের বিরুদ্ধে বেশ কিছু টি-২০, একদিনের ম্যাচ, ও দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলবে তারা। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে অপ্রতিরোধ্য ভারতকে রোখার ক্ষমতা রাখে কিউইরা। তাই একটা হাড্ডাহাড্ডি সিরিজ আশা করব আমরা।

Advertisment

অবশ্য ভারত নতুন বছর শুরু করবে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টি-২০ সিরিজ দিয়ে। টিমে ফিরে এসেছেন ছোট ফরম্যাটের এক নম্বর বোলার জসপ্রীত বুমরা, এবং শিখর ধাওয়ান। সনজু স্যামসন, মনীশ পাণ্ডে, শিবম দুবে, নভদীপ সাইনি, ওয়াশিংটন সুন্দরদের আন্তর্জাতিক আঙিনায় পরখ করার আরও একটা সুবর্ণ সুযোগ। তারপর আছে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মতো কঠিন সিরিজ। আশা করি নতুন বছর জয় দিয়েই শুরু করবে ভারত।

চেনা মেজাজে ফিরছে অস্ট্রেলিয়া, সাউথ আফ্রিকা

শীতের প্রবাহে যখন ভারতের উত্তরভাগ তথা পশ্চিমবঙ্গ জবুথবু, তখন কিন্তু পৃথিবীর অন্য প্রান্তে সাউথ আফ্রিকার ও প্রধানত অস্ট্রেলিয়ার, 'সামার'-এ উত্তরণ বেশ ভালোভাবেই শুরু হয়ে গেছে। ভারতের মাটিতে এবং ২০১৯ বিশ্বকাপে পর্যুদস্ত হওয়ার পর, সাউথ আফ্রিকা একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে দেশের মাটিতে সেঞ্চুরিয়ন পার্কে সিরিজের প্রথম টেস্টে মূলত কাগিসো রাবাদা, ভার্নন ফিল্যান্ডার, এবং আনরিখ নর্টিয়া-র দাপটে ১০৭ রানে হারিয়ে দুর্দান্তভাবে শেষ করল বছরটা।

সাউথ আফ্রিকা তাদের ক্রিকেট বোর্ডে নিয়ে এসেছে তাদের ক্রিকেট ইতিহাসের সফলতম অধিনায়ক গ্রেম স্মিথকে। ডাইরেক্টর অফ ক্রিকেট হিসেবে। স্মিথও কিন্তু এতটুকু সময় নষ্ট না করে নিজের দলে নিয়ে এলেন সাউথ আফ্রিকার আরও দুই কিংবদন্তি ক্রিকেটারকে - হেড কোচ হিসেবে মার্ক বাউচার, এবং ব্যাটিং কোচ হিসেবে জাক কালিস। তিন ক্ষুরধার মস্তিষ্কের সাহায্যে শুরু হয়েছে সাউথ আফ্রিকান ক্রিকেটের নতুনভাবে পথচলা।

অপরদিকে নিউজিল্যান্ডকে পার্থ ও মেলবোর্নে বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজ জিতে নিয়ে সিডনি টেস্টকে স্রেফ নিয়মরক্ষার ম্যাচে পরিণত করল অস্ট্রেলিয়া, যদিও বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নিরিখে এই ম্যাচের মূল্য অসীম। মেলবোর্নে 'বক্সিং ডে' টেস্ট ম্যাচের লক্ষণীয় বস্তু ক্রিকেটীয় ব্যাকরণের বাইরে দুটি - এক, প্রচুর দর্শক সমাগম (৮০ হাজারের উপর), যা টেস্ট ক্রিকেটের পক্ষে অত্যন্ত ইতিবাচক ও আশাব্যঞ্জক। দুই, বিশ্বের এক নম্বর বোলার প্যাট্রিক কামিন্স এবং ভয়ঙ্কর মিচেল স্টার্ক দ্বিতীয় ইনিংসে উইকেট না পাওয়া সত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়ার বিশাল জয়।

এই দৃষ্টান্ত প্রমাণ করে দিচ্ছে যে পৃথিবীর দুই অতি দ্রুতগতিসম্পন্ন শক্তিশালী বোলার অসফল হলেও অস্ট্রেলিয়া আবার টেস্ট জেতার রাস্তা খুঁজে পেয়েছে। তারা আবার এক স্বয়ংসম্পূর্ণ টিম হয়ে উঠছে। ভারতের চেয়ে ১০৪ পয়েন্টে পিছিয়ে আছে অস্ট্রেলিয়া (২৫৬ পয়েন্ট, ৯টি টেস্ট), যদিও ভারতের হাতে আছে দুটি বেশি ম্যাচ (৩৬০ পয়েন্ট, ৭টি টেস্ট)। তবে ২০১৯-এর অ্যাশেজ সিরিজের পর থেকে অস্ট্রেলিয়া কিন্তু এক অন্য 'ব্র্যান্ডের' ক্রিকেট খেলছে। ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভ স্মিথের সঙ্গে ট্র্যাভিস হেড, মার্নাস লাবুশানে, ম্যাথু ওয়েড, নেথান লায়ন ও তাদের পেস ব্যাটারি ধীরে ধীরে দলকে তার পুরোনো শক্তি ফিরিয়ে দিচ্ছে।

ঝগড়া ভুলে উন্নতি করুক বাংলার ক্রিকেট

বাংলা দলের ক্রিকেট সিজন ভালো শুরু হলেও তাদের নিজেদের অন্তরদ্বন্দ্ব যথেষ্ট ভোগাচ্ছে বাংলার ক্রিকেটের ভাবমূর্তিকে। সিএবি চেষ্টার ত্রুটি রাখছে না, এই কলহের অবসান ঘটাতে। বাংলার সিনিয়র খেলোয়াড়দের আরও পরিণত মনোভাব দেখাতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না, "ক্রিকেট সবার উপরে, কোনও এক ব্যক্তি তার উপরে নয়"। অ্যাসোসিয়েশন, টিম, ও ক্রিকেট যদি একত্রিত হয়, বাংলার ক্রিকেটের হৃতগৌরব ফিরে পেতে বেশি সময় লাগবে না। বাংলায় প্রতিভার অভাব নেই, দরকার টিম হিসেবে খেলার। গুজরাতকে যদি তাদের মাটিতে হারাতে পারে, বাংলা নক-আউট পর্যায়ের কোয়ালিফিকেশনের দিকে নিশ্চিত এগিয়ে যাবে।

শরদিন্দু মুখোপাধ্যায়ের নিয়মিত কলাম পড়ুন এখানে

Cricket Kahon
Advertisment