সামনের বার থেকে জেইই (জয়েন্ট এন্ট্রান্স এক্সামিনেশন) মেইনস-এ (দেশজোড়া বেশ কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রযুক্তিবিদ্যার স্নাতকস্তরে ভর্তির পরীক্ষা) প্রশ্ন থাকবে ইংরিজি, হিন্দি আর গুজরাটিতে। টিক দেবে পরীক্ষার্থী। প্রতিটি প্রশ্নের চারটে উত্তর দেওয়া থাকবে। তার মধ্যে একটা ঠিক আর বাকি তিনটে ভুল। ঠিকটা খুঁজে পেলে পুরো নম্বর, কিন্তু ভুলক্রমে অন্য খোপে দাগ দিয়ে ফেললেই কিছু নম্বর বাদ। সাধারণভাবে আমাদের দেশে যে ধরনের পরীক্ষা নেওয়া হয়, তাতে ঠিক উত্তর দিলে চার, উত্তর না দিলে শূন্য আর ভুল করলে ঋণাত্মক ১।
একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। ধরা যাক, পঁচিশটা প্রশ্ন আছে। আপনি ঠিক করলেন দশটা, ছেড়ে দিলেন পাঁচটা, আর ভুল করলেন দশটা। নম্বর হবে দশ গুণ চার বিয়োগ দশ গুণ এক, অর্থাৎ চল্লিশ বিয়োগ দশ, মানে তিরিশ। এরকম করার কারণ, যাতে আপনি আনতাবড়ি উত্তর বেশি না দেন। এখান থেকে বোঝা যাবে যে সত্যিই আপনি বুঝে পরীক্ষা দিয়েছেন কিনা। এইভাবেই আমাদের দেশে অত্যন্ত মেধাবী পড়ুয়াদের খুঁজে নেওয়া হয়।
উচ্চমাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হওয়ার পর সারা দেশের যে সমস্ত ভীষণ প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা, তার নিয়ম মোটামুটি এই রকম। কোথাও সামান্য এদিক ওদিক হতে পারে, কিন্তু মূল ভাবনাটা একই। অর্থাৎ মারো টিক, বাগাও নম্বর। পড়াশোনার শ্রাদ্ধশান্তি শেষ, দেশের কোণে কোণে বারো ক্লাসে পড়া ছেলেমেয়েরা বুঝে কিংবা না বুঝে স্নাতক কিংবা স্নাতকোত্তর স্তরের অঙ্ক, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, আর জীববিজ্ঞানের প্রশ্নে যখন তখন টিক মারছে। এক বেচারি তো অক্ষর লিখতেই ভুলে গেছে। নিজের নাম লেখার জায়গায় টিক-টিক-টিক-টিক-টিক চিহ্ন দিয়ে কাজ সেরেছে।
আর পরীক্ষারও বলিহারি। ধরুন নিজের রোল নাম্বার লিখতে হবে ১০৪৩২১। সেটাও লেখার উপায় নেই। খাতার কালো গোল্লায় পেন্সিল ঘষে কিংবা কম্পিউটারে টিক দিয়ে সেটা বোঝাতে হবে। ছয় অঙ্কের সংখ্যা, প্রত্যেকটা জায়গায় ০ থেকে ৯ পর্যন্ত বিকল্প আছে। সেই ছটা জায়গায় একটা করে বেছে রোল নম্বরের ছটা সংখ্যা পেশ করতে হবে।
এমন কেন হচ্ছে? উত্তর সহজ। দেশে উচ্চমাধ্যমিক পাস করার সময় অন্তত ত্রিশ লক্ষ ভালো ছাত্র-ছাত্রী লড়ে যায় প্রযুক্তি বা চিকিৎসাবিজ্ঞান নিয়ে স্নাতকস্তরে পড়াশোনা করার জন্যে। এবার তারা যদি খাতায় বড় প্রশ্নের উত্তর লেখে তাহলে তার বিচার করার লোক নেই। সময়ও লাগবে অনেক। তাই একমাত্র উপায় টিক। তাই দিয়েই ঠিক হয় নম্বর। এখানে একটা অদ্ভুত অঙ্ক লুকিয়ে আছে। ধরুন তিনশোর মধ্যে পরীক্ষা, আর সেই পরীক্ষা দিচ্ছে ১৫ লক্ষ প্রতিযোগী। জেইই-মেইনসে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় এরকম জায়গাতেই পৌঁছে যাচ্ছে। এমনটা হলে এক একটি নম্বরে গড়ে পাঁচ হাজার করে পরীক্ষার্থী থাকবে। অর্থাৎ একই নম্বর পেয়ে আপনার স্থান (বাংলায় র্যাঙ্ক) পাঁচ হাজার পিছিয়ে যেতে পারে।
সেখানে আবার কোন প্রশ্নের উত্তর ঠিক করলে আপনার কৃতিত্ব বেশি সেই ধরনের গোপন গল্প থাকে, যা পরীক্ষার্থীর আগে থেকে জানতে পারার কোন সম্ভাবনাই নেই। অর্থাৎ আপনি তিন নম্বরের উত্তর ঠিক করেছেন আর পাঁচের ভুল। অন্যজন করেছে ঠিক উল্টোটা, অর্থাৎ পাঁচেরটা ঠিক আর তিনেরটা ভুল। দেশের সব থেকে নামীদামী প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষককুল মনে করেছেন, পাঁচের প্রশ্নটা মেধা নির্ণয়ে অধিক উচ্চমানের। তখন অন্যজনকে আপনার আগে বেছে নেওয়া হবে।
অর্থাৎ মূল্যায়নের ক্ষেত্রে যে পদ্ধতিই নেওয়া হোক না কেন, প্রচুর পরীক্ষার্থী থাকলে মেধাতালিকা বানানোর সময় বিবিধ সমস্যা থাকবেই। দেশে আসন কম, ভালো ছাত্রছাত্রী বেশি। সমালোচনা করাই যায়, কিন্তু বর্তমান ব্যবস্থাটা পরিবর্তিত হলেই যে ভালো হতো এমনটাও নয়। জনবিস্ফোরণের চাপ এবং দেশের সামগ্রিক আর্থসামাজিক পরিস্থিতিতে এটাই বাস্তব।
প্রেক্ষিত তো বোঝা গেলো। এবার আসা যাক যারা পরীক্ষা দিচ্ছে তাদের সুবিধে অসুবিধের কথায়। সাধারণ নিয়ম হলো, প্রতিটি পরীক্ষার্থী সমান সুযোগ পাবে। পুঁজিবাদী ব্যবস্থাতে সেরকম যে হয় না তা সকলেই জানেন। যার বেশি সম্পদ সে অধিক শিক্ষা কিনতে পারে। এমনকি খুব সাম্যবাদী সমাজেও সমস্ত পরীক্ষার্থীর জন্যে অঙ্ক কষে সমান সুযোগ সুবিধা দেওয়া শক্ত, কারণ সুবিধের বিষয়টি অনেক রকম হতে পারে।
পরীক্ষাকেন্দ্র যদি হয় আপনার বাড়ির কাছে, তাহলে ভোরবেলা বেরোতে হয় না বা আগের রাতে অন্য কোথাও গিয়ে থাকতে হয় না। কিন্তু যাঁরা পরীক্ষা নেন, তাঁরা অত ভাবেন না। তাই বরানগরের ছাত্রীর পরীক্ষাকেন্দ্র ঠিক হয় বারুইপুরে আর বিধাননগর থেকে যেতে হয় কোন্নগর। কম্পিউটার আর ইন্টারনেটের যুগে প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে তার বাড়ির কাছাকাছি কোনো কেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়াই যেতে পারে। অন্তত শহরের আশেপাশে এটা করা একেবারের সরল। কিন্তু একটু ভেবে দায়টা নেবে কে?
আজকাল আবার বেশির ভাগ পরীক্ষা কম্পিউটারে, তাই বিশেষ পরিকাঠামো না থাকলে যেকোনো স্কুলে পরীক্ষাকেন্দ্র বানানো মুশকিল। ফলে আপনি যদি থাকেন পশ্চিম মেদিনীপুরের কোনো গ্রামে, সেখানে তো আদৌ জেইই-মেইনস পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা যাবে না। ফলে বৈষম্য থাকবেই।
এই সমস্ত গোলমাল সত্ত্বেও শেষমেশ পরীক্ষা হয় এবং মোটের ওপর খাটিয়ে এবং মেধাবী পড়ুয়ারাই সফল হয়। মুশকিল হলো, প্রস্তুতি না নিলে শুধু বুদ্ধিতে আজকের দিনে বিশেষ কাজ হয় না। আর কে না জানেন যে বুদ্ধিমান লোকেরা কিছুটা ফাঁকি দিতে পছন্দ করেন। আজকের পরীক্ষাব্যবস্থায় এই ফাঁকিবাজ বুদ্ধিমানেরা কিন্তু একেবারে বাদ পড়ে যাচ্ছে। আর একইরকমভাবে বাদ পড়ে যাচ্ছে খেলাধুলো কিংবা সাংস্কৃতিক বিষয়ে কিছুটা উৎসাহী মেধাবী পড়ুয়ারা।
পড়াশোনার প্রতিযোগিতা যে জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে, তাতে অন্য কিছু করার সময় নেই। শুধু খাওয়া, প্রাকৃতিক কাজকর্ম, পড়াশোনা আর যতটা কম সম্ভব ঘুম। এই নিয়মানুবর্তিতায় সফল হয়ে যারা সুযোগ পাচ্ছে, ব্যর্থ হচ্ছে তার থেকে অনেক অনেক বেশি সংখ্যক বুদ্ধিমান পড়ুয়া। এই নিয়ে শিক্ষামহলের এক অংশ অবশ্যই চিন্তিত, যে খবর পাওয়া যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন নামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যাপকদের কাছ থেকে। সমস্যা এখানে বহুমাত্রিক, এবং সে আলোচনায় আপাতত দাঁড়ি টানা যাক।
এই ধরনের প্রতিযোগিতায় আজকাল যারা সফল হয়, তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ইংরিজিতে পড়াশোনা করে। এর আগেও জেইই-মেইনস এর পরীক্ষা হয়েছে ইংরিজি এবং হিন্দিতে। দেশের উঁচু মানের সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হওয়া যায় এই পরীক্ষায় সফল হলে। এখানে প্রশ্ন হলো, নিজের মাতৃভাষায় প্রশ্ন এলে কি কোন সুবিধে হয়? এর সাধারণভাবে উত্তর কিন্তু ‘না’। ইংরিজি সারা পৃথিবীতে বিজ্ঞান পাঠের পক্ষে খুব উপযুক্ত ভাষা, কারণ বেশ সংক্ষেপে সমস্যাগুলোকে পেশ করা যায় এই ভাষার মাধ্যমে। আর বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শব্দ ইংরিজিতেই বহুল ব্যবহৃত। এর কারণ লিখতে গেলে ইতিহাস হয়ে যাবে। তবে এটাই ঘটে গেছে। বিশেষ করে ইংরেজদের উপনিবেশ হিসেবে আমাদের দেশে ইংরিজির চল বেশ ভালো।
সুতরাং হিন্দি বা গুজরাটিতে পরীক্ষা নিয়ে সত্যি যে ইংরিজি না জানা এবং শুধু মাতৃভাষা জানা কোনো মেধাবী পরীক্ষার্থীকে খুঁজে পাওয়া যাবে, এমন সম্ভাবনা বেশ কম। গুজরাটির কথা জানি না, কিন্তু হিন্দিতেও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে ভালো বিজ্ঞান বইয়ের সংখ্যা অপ্রতুল। সবাই পড়াশোনা করে ইংরিজিতেই। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো, বিজ্ঞানের তো সেভাবে কোন ভাষা লাগে না, লাগে কিছু যুক্তিগ্রাহ্য চিহ্ন (যা কিনা সাধারণভাবে ইংরিজিতেই লেখা হয়) এবং তা মনে রাখা অথবা বিশ্লেষণ করার কৌশল।
হিন্দিতেই লিখুন কী গুজরাটিতে, লোহাকে সেই ফেরাম-ই বলতে হবে আর চিহ্ন হবে Fe (বাংলায় এফই লিখলে চলবে না)। অনেক সময় ইংরিজি থেকে অদ্ভুত কিছু পরিভাষা (টারমিনোলজি) অন্যান্য ভাষায় রূপান্তর করা হয়। চিন, জাপান কিংবা কোরিয়া সে ব্যাপারে অনেকদিন ধরে বিশেষ দক্ষ। তবে আমাদের মতো বিভিন্ন ভাষাভাষীর দেশে সেরকম প্রচেষ্টা সফল হওয়ার সম্ভাবনা কম। আর সবশেষে পরীক্ষা তো টিক মারার, ফলে নিজের ভাষায় বিশদে ব্যাখ্যা করার সুযোগ একেবারেই নেই।
মূল সমস্যা আসলে একেবারে অন্য জায়গায়। যাঁরা এই ধরনের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশ্ন নিয়ে কাজ করেন, তাঁরা জানেন যে অনেক সময়ই প্রশ্ন বেশ দীর্ঘ হয়। এবার সেগুলোকে কোন এক ভাষায় অনুবাদ করার সময় প্রশ্নের ঢঙ কিছুটা বদলে যায়। আজকের দিনে পরীক্ষার্থীরা সবসময় ঠিক উত্তর খুঁজে বার করে না, বরং ভুল উত্তরগুলোকে বাদ দেয়। ইংরিজির বদলে অন্য ভাষায় প্রশ্ন হলে সেখান থেকে হয়তো আর একটু ভালোভাবে প্রশ্নটাকে বোঝা যাবে, যা দিশা দেখাবে সঠিক উত্তরের।
মনে রাখতে হবে, একটি প্রশ্ন সমাধানের সময় অনেকগুলি ধাপ পেরিয়ে যেতে হয়। অর্থাৎ প্রশ্নটিকে যেমন পিছিয়ে নেওয়া যায়, এগিয়েও নেওয়া যায় কিছুটা। অন্য ভাষায় যদি প্রশ্নটিকে বোঝানোর জন্যে বেশি করে ব্যাখ্যা করতে হয়, সেক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীর কিছুটা সুবিধে পাওয়া সম্ভব। তবে প্রশ্নের ভাষান্তর অনেকসময় বিষয়টাকে গুলিয়েও দিতে পারে। মোটের ওপর গুজরাটিতে প্রশ্ন হলেই সেখানকার পড়ুয়ারা খুব বেশি সুবিধে পাবে এমনটা নয়, কিন্তু যেখানে এক-দুটো নম্বর দশ হাজার র্যাঙ্কের এদিক ওদিক করে দিতে পারে, সেখানে এই বিষয়টি বৈষম্য হিসেবে গণ্য হবে বৈকি।
প্রতিবাদে আমাদের রাজ্য থেকে বাংলা ভাষায় প্রশ্ন ছাপানোর দাবি উঠছে। সেটাও কতটা যুক্তিযুক্ত তা ভেবে দেখা জরুরি। মুশকিল হলো, প্রশ্ন করায় যদি অনেক মানুষ যুক্ত হয়ে যান তাহলে অন্য বিপদ আছে। প্রশ্নের মূল্য নির্ভর করে প্রশ্নকর্তার সততার ওপর। একটা ভাষায় যদি দশজন মিলে প্রশ্ন করেন, তাহলে তাকে আমাদের দেশের আরও কুড়িটা ভাষায় ভাষান্তর করতে গেলে অনেক বেশি মানুষ প্রশ্নগুলো জেনে যাবেন। গোপনীয়তার ক্ষেত্রে তাই বিপুল সমস্যা তৈরি করতে পারে প্রশ্নপত্রের একাধিক ভাষান্তর।
গোটা বিষয়টায় রাজনীতির ব্যাপারটা সবচেয়ে বেশি ঝামেলার। বিজেপি দল হিসেবে দক্ষিণপন্থী। ফলে সমাজ সংসারের বিভিন্ন বিষয়ে তাদের দখলদারির প্রয়াস থাকবেই। আজকের দিনেও মূলত উত্তর এবং পশ্চিম ভারত ভিত্তিক দল তারা। তাদের দলের দুই সর্বোচ্চ নেতা গুজরাটে রাজনীতি করে বড় হয়েছেন। তাই জেইই-মেইনসে গুজরাটি ভাষায় প্রশ্ন বানানোর মধ্যে পড়াশোনার সুবিধের থেকেও অনেক বেশি প্রকট দাদাগিরি।
বাংলায় যাঁরা প্রতিবাদ করছেন (তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেস), তাঁদের মতেও বিশেষ বিজ্ঞান নেই, আছে রাজনীতি। সোজাসাপটা বক্তব্য এখানে একটাই। ভারতের মতো ভাষা বৈচিত্র্যের দেশে বিজ্ঞানের ভাষা হিসেবে ইংরিজিকেই মানতে হবে। ছোটবেলা থেকে ভালোভাবে ইংরিজি শেখার সুযোগ পৌঁছে দিতে হবে সকলের কাছে। প্রশ্নপত্র হবে শুধু ইংরিজিতেই। শুধু গুজরাটি নয়, বৈষম্য কমাতে গেলে হিন্দি অনুবাদও বাদ দিতে হবে প্রশ্নপত্র থেকে। শিক্ষিত সমাজকে বুঝতে হবে, রাজনীতির ভাষা আর বিজ্ঞানের ভাষা আলাদা।
তবে গল্পের একটা শেষ অংশ বাকি আছে। ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ), যারা নাকি বর্তমানে জেইই-মেইনস পরীক্ষার দায়িত্বে, তারা দাবি করেছে যে, কোনো রাজ্য তাদের কাছে কোনো একটি বিশেষ ভাষায় প্রশ্নপত্র তৈরি করতে বললে তারা উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে। গুজরাট নাকি এই দাবি তুলেছিল, আর অন্য কোনো রাজ্য কিছুই বলে নি। সেই কারণেই গুজরাটিতে এবার প্রশ্ন হবে, ইংরিজি আর হিন্দি ছাড়াও।
একটাই ভয়ের ব্যাপার। রাজনৈতিক কারণে এরপর হয়তো দেশের বিভিন্ন ভাষায় এই পরীক্ষা চালু হবে। আর সবশেষে কোন রাজ্য না চাওয়ায় বাদ পড়ে যাবে ইংরিজিটা। সেখানেই ভাষা আন্দোলনে টিক দিয়ে রাজনীতির হাঁড়িতে সেদ্ধ হবে অঙ্ক আর বিজ্ঞান। চালে-ডালে সে খিচুড়ি পেশাদার রাজনীতিবিদদের সুস্বাদু লাগারই কথা!
(লেখক ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক, মতামত ব্যক্তিগত।)