TMC Organizational Reshuffle 2021: বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে গত বছর ২৩ জুলাই তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্য ও জেলা সংগঠন ঢেলে সাজিয়ে ছিল। জেলা পর্যবেক্ষক পদ তুলে দিয়েছিল তৃণমূল নেতৃত্ব। ভোট-যুদ্ধ জয়ের পর ফের বড় ধরনের সাংগঠনিক রদবদল করল ঘাসফুল শিবির। যেখানে বামপন্থী মনস্কদের দলের বেশ কয়েকটি শাখা সংগঠনের মাথায় বসিয়েছে তৃণমূল। পাশাপাশি কালীঘাটেই থাকল দলের দুই শীর্ষপদ। সরাসরি ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু। তৃণমূলের শীর্ষ স্তরে ট্যাঁ-ফু বা গোঁসা করার দিন কার্যত একেবারেই শেষ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এই মুহূর্তে রাজ্য় বিধানসভায় তৃণমূলের আসন সংখ্য়া ২১৩। রাজ্য়ের ৬ কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে। স্বভাবতই বিধানসভায় তাদের শক্তি আরও বৃদ্ধি পাবে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। বিধানসভা নির্বাচনের মুখে একটা বড় অংশ দল ছেড়ে দেওয়ায় প্রকাশ্যে বিদ্রোহ করার কোনও অবকাশ এই মুহূর্তে নেই। বরং এটা স্পষ্ট যাঁরা থাকবে তাঁদের সম্পূর্ণ আনুগত্য নিয়েই থাকতে হবে। দলে থেকে বেঁফাস মন্তব্য় বরদাস্ত করবে না নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন- Abhishek Banerjee: জাতীয়স্তরে দলের আরও বড় দায়িত্বে অভিষেক, তৃণমূলের সংগঠনে ব্যাপক রদবদল
অভিনেত্রী সায়নী ঘোষকে যুব তৃণমূলের সভানেত্রী করা হয়েছে। সিপিএম থেকে আসা ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে করা হয়েছে দলের শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি। দলের যুব সংগঠনে একাধিক সহসভাপতি থাকা সত্বেও এক অভিনেত্রীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, এভাবে সাংসদ বা বিধায়কের মতো সাংগঠনিক ক্ষেত্রেও একই ধারা বজায় রাখলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় নেতৃত্বের একাংশ যেভাবে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, তারকা সাংসদ-বিধায়করা তা করেননি। অন্যদিকে বিজেপিতে সাংগঠনিক দায়িত্ব সামলেছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়, অগ্নিমিত্রা পল সহ অনেকেই। সেই পথে হাঁটল তৃণমূলও।
অভিজ্ঞ মহল মনে করছে, দলের কোনও যুব নেতাকে সংগঠনের দায়িত্ব দিলে লবি, অনুগামী নিয়ে একটা শঙ্কা থাকতই। অতীতে এমন ঘটনা প্রত্যক্ষ করা গিয়েছে। অবশ্য তাঁদেরও ভিন্ন মত রয়েছে। এক্ষেত্রে সেই আশঙ্কা অনেক কম। বিধানসভায় প্রার্থী হওয়া আর সংগঠন সামলানো এক বিষয় নয়। সংগঠন বুঝতেই অনেকটা সময় চলে যাবে।
আরও পড়ুন- ভোটে হারলেও তৃণমূলে বড় পদ পেলেন ‘সায়ন্তিকা’, গুরুদায়িত্বে বিধায়ক ‘রাজ চক্রবর্তী’
এদিকে দলের একসময়ের সাংগঠনিক নেতা মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারীরা বিরোধী শিবিরে। ট্যাঁ-ফু করার মতো দলে এখন আর কেউ নেই। তাছাড়া রাজ্য ব্যাপী পরিচিতিও কারও নেই। মমতা বনদ্যোপাধ্যায়ের পর এখন তৃণমূলে ঘোষিত ভাবে সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ডায়মন্ডহারবারের সাংসদের ঝুলিতে এখন অভিজ্ঞতাও বেড়েছে। বিশেষত এবারের বিধানসভা নির্বাচন পরিচালনার মূল দায়িত্বে ছিলেন পিকে ও অভিষেক। নির্বাচনে ব্যাপক সাফল্য আসায় আড়ালেও দলের মধ্যে কোনও কথা ওটার সম্ভাবনা নেই।
সর্বভারতীয় স্তরে তৃণমূল কংগ্রেসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে নতুন নেতৃত্ব ঘোষণার মধ্যে। অভিষেক তিনবারের সাংসদ। তাছাড়া সাংসদ হওয়ায় এখন দিল্লি রাজনীতির অনেকের সঙ্গেই পরিচিত কাকলি ঘোষ দস্তিদার। তাঁকে মহিলা তৃণমূলের প্রধান করা হয়েছে। দোলা সেন রাজ্যসভার সাংসদ। তাঁকে শ্রমিক সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি করা হয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন