Advertisment

লাল কেল্লা থেকে, ২০১৯ এর উদ্দেশ্যে

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রাক নির্বাচনী বছরে যে কোনো সরকারের হাত পা বাঁধা অবস্থার প্রতিফলন। কিছু আকাশছোঁয়া মুহূর্ত ছিল, আবার ছিল কিছু ভ্রান্তিও।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

সাল ২০১৪। নিজের প্রথম ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নিজেকে দিল্লির রাজনৈতিক মহলের অলিগলিতে বহিরাগত হিসেবে উপস্থাপন করেন। এই ভাবনা তখন অমূলক মনে হয় নি, যে তিনি কোনো অজ্ঞাতপূর্ব পরিপ্রেক্ষিতের প্রতিনিধি। লাল কেল্লার প্রাকারে দাঁড়িয়ে তিনি স্বাস্থ্যবিধানকে দেশের ভাবনাচিন্তার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এলেন; ভারতের নারীদের সুরক্ষা নিয়ে কথা বললেন, কিন্তু শুধুমাত্র আইনের দৃষ্টিভঙ্গী থেকে নয়। বললেন আমাদের সমাজে পুরুষদের মধ্যে বদ্ধমূল নারী বিদ্বেষ এবং হিংসার সংস্কৃতির মোকাবিলা করতে মেয়েদের সুরক্ষিত থাকার উপদেশ না দিয়ে সংস্কৃতি বদলানোর কথা। এবছর, তাঁর পঞ্চম এবং এযাত্রায় শেষ ভাষণ স্বাভাবিকভাবেই আগামী নির্বাচনের বাধ্যবাধকতায় আবদ্ধ ছিল, ২০১৪ সালের মত আগামী দিনের বিষয়সূচি নির্ধারণ করা নয়।

Advertisment

তাঁর ৭৮ মিনিটের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী কার্যত এনডিএ সরকারের রিপোর্ট কার্ড পেশ করেন, যার মধ্যে ছিল বিভিন্ন স্কিমের সাফল্যের গল্প, যেমন স্বচ্ছ ভারত, প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা, মুদ্রা লোন, ইত্যাদি, কৃষকদের ঋণ মকুবের প্রতিশ্রুতির পুনর্কথন, এবং দেশবাসীকে আশ্বস্ত করা যে দেশ দ্রুত ভ্রষ্টাচার মুক্তির পথে এগোচ্ছে।

আরও পড়ুন: গান্ধীজির হাতেও ঝাড়ু ধরাতে চেয়েছিলেন মোদি!

বিদেশ নীতি নিয়ে আলোচনা ন্যূনতম পর্যায়েই রইল, যেটুকু কথা হলো তা ভারতের অর্থনৈতিক ক্ষমতার পর্যালোচনা করেই শেষ হলো। সার্জিকাল স্ট্রাইক নিয়ে এক লাইন বললেন, সেটুকুই যা পাকিস্তানের উল্লেখ, চিন আমেরিকা বেমালুম বাদ। বক্তব্যের নির্যাস ছিল, স্বাধীনতা পরবর্তী ভারতের ইতিহাসে একটা দৃঢ় রেখা টানা - ২০১৪ সালের আগে এবং পরে। তাঁর মতে এই সরকারের সঠিক উদ্দেশ্য, উচ্চাশা, এবং কার্যকলাপ গত ৭২ বছরের খতিয়ানে অভূতপূর্ব। আয়ুষ্মান ভারত যোজনা এবং সেনাবাহিনীতে মহিলাদের স্থায়ী কমিশন, আপাতদৃষ্টিতে ইতিমধ্যেই ঘোষিত কর্মসূচির পুনরাবৃত্তি মনে হলেও, বাগাড়ম্বর হিসেবে নিঃসন্দেহে আকর্ষণীয়।

প্রকারান্তরে এই নির্বাচনী ভাষণে আকাশছোঁয়া মুহূর্ত ছিল কিছু। প্রথম, কোনো ভারতীয় নারী বা পুরুষকে মহাকাশে পাঠানো, ভারতে তৈরি মহাকাশযানে বসিয়ে। চূড়ান্ত সীমান্তের খোঁজ সমাজের মধ্যে বিদ্যুৎপ্রবাহের কাজ করে, এবং দেশবাসীকে একটা ইতিবাচক জাতীয়তাবাদের আদর্শে উদ্বুদ্ধ করতে সক্ষম হতে পারে। দ্বিতীয়, গোটা ভাষণে মোদী মহিলাদের অধিকার এবং সমাজে সম অবস্থানের বিষয়গুলির ওপর থেকে চোখ সরালেন না। তৃতীয়, তিনি নিজেকে এবং তাঁর পার্টিকে দরিদ্র এবং প্রান্তিক মানুষের বন্ধু হিসেবে প্রচার করলেন।

কিন্তু বিচ্যুতিও ছিল অনেক। তিনি দলিত, আদিবাসী, এবং ওবিসি নিয়ে কথা বললেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিয়ে নয়। ধর্ষণ, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ফাঁসির ভূমিকা, আইনি শাসনের প্রয়োজনীয়তা, নিয়ে অনেক কিছু বললেন, কিন্তু দেশজোড়া গণপ্রহার এবং প্রকাশ্য হিংসা, যা বহু রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর কলঙ্ক লেপন করেছে, তা নিয়ে নীরবই রইলেন।

narendra modi swachh bharat Independence Day PM Narendra Modi
Advertisment