Advertisment

দেশের মুসলিমরা মোদী-অমিতের বিরুদ্ধে, হিন্দুবিদ্বেষী নন

অমিত শাহ উত্তরপ্রদেশে একজনও মুসলমান প্রার্থী দেননি কেন? রাজনাথ সিং পর্যন্ত প্রশ্ন করলে অমিত শাহ তাঁকে বলেন, যারা আমাদের ভোট দেবে না তাদের বিজেপি প্রার্থী করবে কেন?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Hindu Muslim Unity

ছবি- ফেসবুক

আমি ভারতবাসী। ভারতের সমাজে বসবাস করি। এরপর সেই সমাজের চলতি টানাপোড়েন নিয়ে লিখতে বসলে আমি নিরপেক্ষ থাকতে পারি কি? নিরপেক্ষতা খুব সহজ কাজ নয়। দার্শনিক দেরিদা বলেছিলেন ডিকনস্ট্রাকশন অর্থাৎ বিনির্মাণের কথা। নিরপেক্ষতার ইউটোপিয়া কে ভাঙতে গেলে নিজেকেও বিনির্মাণ করতে হয়।

Advertisment

আজ হঠাৎ নয়, বহু বছর ধরে অখণ্ড ভারতের সমস্ত মানুষকেই চেতনার প্রতীক হিসেবে দেখার চেষ্টা চলছে। আজ এত বছর পর নাগরিক পঞ্জির বিতর্ক নিয়েও বলা হচ্ছে হিন্দু নাগরিক ভারতীয় নাগরিক, উদ্বাস্তু হলেও ভারত তাকে ঠাঁই দেবে কিন্তু অনুপ্রবেশকারী বহিরাগত মুসলমান নাগরিক হতে পারবেন না। আবার জিন্না তো বারবার প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন যে মুসলমানরা হলো ভিন্ন এক মানব গোষ্ঠী। তাঁদের এক পৃথক জাতিসত্তা আছে।

মার্কিন সাংবাদিক এডগার স্নো তার চীন বিপ্লবের অভিজ্ঞতায় স্নাত ‘রেড স্টার ওভার চায়না’ এবং ‘দ্য লং রিভলিউশন’ গ্রন্থের মধ্যে দিয়েই বেশি পরিচিত। কিন্তু তিনি দু-দুবার ভারতেও এসেছিলেন। নেহেরুর মত ব্যক্তিত্বের সাক্ষাৎকার নেন। ‘People on Our Side’ নামক গ্রন্থে তিনি তাঁর দেখা তৎকালীন ভারত নিয়েও বেশকিছু অধ্যায়ে লেখেন। সেই এডগার স্নো কিন্তু লিখেছিলেন, জিন্না যতই চেষ্টা করুন মুসলমানরা বা হিন্দু জাতিসত্তা দুটি পৃথক জাতিসত্তা আদৌ নয়। এ হল হিটলারের ‘জার্মান পুরাণকথার মতই রঞ্জিত অতিকথন’।

আঁতকে উঠবেন না, এ লড়াই মুসলমানদের

স্নো লিখছেন হাজার বছরও হয়নি উত্তরের বিজয়ী সুলতান বাদশাহরা ইসলাম ধর্মকে এনে ভারতের মাটিতে রোপণ করছে। তারা এবং তাদের অনুগামীদের অনেকেই দেশীয় হিন্দুদের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হয়ে এদেশেই রয়ে গেছে। আর বলা যায়, আজকের বিশাল আয়তন মুসলমান জনসমষ্টি তাদের উত্তরসূরী এবং ধর্মান্তরিত হিন্দু পূর্বপুরুষদেরই বংশধর। দেশের উত্তর-পশ্চিম প্রান্ত দিয়েই আরব-পাঠান-তুর্ক-মোগল আক্রমণকারীরা ভারতে ঢুকেছিলেন। বহু শতাব্দী ধরে অনেক মুসলমান শাসক দিল্লি ও তার চারপাশে রাজত্ব করেছে। তবু ভারতের তুলনায় বাংলায় এত মুসলমান জনসমাজ কেন বা কিভাবে গড়ে উঠল তা নিয়ে আজও গবেষণা চলছে। ৮০০ বছর ধরে বাংলায় মুসলমান শাসন হয়েছে, তাই বাংলার নবজাগরণের ইতিহাস রচনা আমরা রাজা রামমোহন রায়ের সময় থেকে শুরু করতে পারি বটে, কিন্তু বাঙালির মননে হিন্দু ও মুসলমান সমাজের মেরুকরণ করার কাজটা কিন্তু সহজ নয়।

তাই বাঙালি হিন্দু জাতি ও সমজাতীয় একটি গোষ্ঠী নয়। বাঙালির চার মধ্যে প্রধান জনগোষ্ঠীর রক্ত রয়েছে। সেগুলি হল (১) অস্ট্রিক ভাষাভাষী আদি অস্ট্রেলীয় যাদের বর্তমান বংশধর সাঁওতাল, মুন্ডা, লোধা, শবর, হো প্রভৃতি উপজাতি; (২) দ্রাবিড় ভাষী মেলানিড, যাদের বংশধর দক্ষিণ ভারতের তামিল এবং কোল, ওঁরাও, মালপাহাড়ি প্রভৃতি কোন কোন উপজাতি; (৩) মধ্য এশিয়ার নর্ডিক বা অ্যালপাইন, যারা ভারতে আর্য সভ্যতা প্রতিষ্ঠা করেন; (৪) আরবি, ইরানি, তুর্কি, পাঠান, মুসলমান শাসনের সূত্রে যারা এদেশে এসেছিলেন। তাই বাঙালির মধ্যে এত রক্ত এত সংস্কৃতির মেলামেশা হয়েছে যে এই বাঙালি হিন্দু সমাজের আর্য অহংকারের কোন মানে হয় না। বাঙালি সে দাবি কখনো করেও নি। তাই বাঙালির আর অভিমানের কোন মানেই হয়না।

এরকম ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে আজকের নাগরিক বিল নিয়ে চলতে থাকা বিদ্রোহ দেখে আমি উদ্বিগ্ন। নাগরিকত্ব সংবিধান সংশোধন আইন, সংক্ষেপে যার নাম এখন ‘ক‌্যা’, তার বাস্তবায়ন নিয়ে দেশজুড়ে আন্দোলন-বিক্ষোভ শুরু হয়ে গিয়েছে। নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহ বারবার আশ্বাস দিচ্ছেন যে, এই আইন কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন‌্য নয়। তবু এ দেশের বিপুল মুসলমান জনসমাজে এক ধরনের নিরাপত্তার অভাববোধ দেখা যাচ্ছে। এই জনসমাজ যে মোদিকে বা বিজেপিকে ভোট দেবে এমনটা নয়, কিন্তু এই সংখ‌্যালঘু-বিচ্ছিন্নতা কি দেশে অনেক দিন পর আবার হিন্দু-মুসলমান সাম্প্রদায়িক বিভাজন বাড়াচ্ছে?

বিজেপির হিন্দু উদ্বাস্তু প্রেম একটি ব্রাহ্মণ্যবাদী রাষ্ট্রীয় মিথ্যাচার

এই বিভাজিকা-রেখাটি তীব্র হয়ে উঠলে তার সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করবেই দেশ ও বিদেশের নানা কায়েমি শক্তি। এ দেশের বেশ কিছু রাজনৈতিক দল বিজেপিকে খতম করতে আবার রাজ্যে রাজ্যে এই মুসলমান ভোট ও তার সহযোগী হিসাবে বাম উদারবাদী তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকেও সঙ্গে পাওয়ার চেষ্টা করবে। এই শক্তি সংসদে ভোটের রাজনীতিতে সংখ‌্যার নিরিখে খুব বেশি না হলেও, ভারতের রাজনীতিতে এই বাম-উদারবাদী কনস্টিটিউয়েন্সির একটা মস্ত বড় ভূমিকা আছে, সেই জওহরলাল নেহরুর আমল থেকেই!

অবশ‌্য এখনও পর্যন্ত হিন্দু এবং মুসলমান সমাজের মধে‌্য যে  প্রবল বৈরিতা সৃষ্টি হয়েছে, তা নয়। ভারতের ১৩৫ কোটি জনসমাজের মধ্যে হিন্দু ও মুসলমান কৌম আছে। এই দুই সমাজের মধ্যে যে কোনও দ্বন্দ্ব বা সংঘাত শুরু হয়ে গিয়েছে, তাও কিন্তু নয়। তবে মুসলমান সমাজ ক্ষুব্ধ, শঙ্কিত– এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু তাদের এই ক্ষোভ হিন্দু জনসমাজের বিরুদ্ধে নয়, মূলত মোদি সরকারের বিরুদ্ধে। বিজেপির চেয়েও এই ক্ষোভ মোদী এবং অমিত শাহর বিরুদ্ধেই বেশি।

আবার এই আইনটি নিয়ে মুসলিম সমাজে অনেক ভুল বোঝাবুঝি আছে। অতীতে কংগ্রেস সরকার অর্থাৎ, মনমোহন সিং বা রাহুল গান্ধী এমনকী, চিদম্বরম যখন নাগরিকপঞ্জি, অসমে ডিটেনশন ক‌্যাম্প গঠন করেন, তখন কিন্তু এই প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়নি। উলটে চিদম্বরমের যে ফুটেজ এখন বিজেপি প্রচার করছে, বিজেপি মুখপাত্ররা উল্লেখ করছেন, তাতে তাঁরা দেখাতে চাইছেন এই সরকার নতুন কিছুই করছে না, এসব তো কংগ্রেসই আগে করে গিয়েছে!

তারপরও কিন্তু বিজেপি সম্পর্কে সন্দেহ-শঙ্কা কাটছে না। কাটছে না কারণ, কংগ্রেস বা ইউপিএ নিয়ে মুসলমান সমাজের কোনও শঙ্কা ছিল না। আবার বিজেপি, এই বিল আনার বহু বহু বছর আগে থাকতেই মুসলমান জনসমাজের কাছে ‘খলনায়ক’ হয়ে আছে। বিজেপি না হয় জন্মেছে ১৯৮০ সালে। কিন্তু ‘জনসংঘ’-র জন্ম ’৫১ সালে। ’৭৭ সাল পর্যন্ত জনসংঘ ছিল; ’৭৭ থেকে ’৮০– এই তিন বছরে ‘জনতা দল’-এর সঙ্গে মিশে যায় জনসংঘ। জয়প্রকাশের আন্দোলনে কংগ্রেসের বিরোধিতার জন‌্যই এই মিশেল।

আবার ‘আরএসএস’-এর জন্ম হয় ১৯২৫ সালে। ‘আরএসএস’ ও ‘জনসংঘ’-র মতাদর্শ ছিল হিন্দু জাতীয়তাবাদ। ’৮০ সালে বিজেপি নতুন দল হিসাবে যাত্রা শুরু করলেও তাদের অবস্থান ছিল হিন্দুত্ববাদী, দক্ষিণপন্থী। বিজেপির দলীয় ইস্তাহারের প্রধান তিনটি কর্মসূচি: কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা অনুচ্ছেদ উচ্ছেদ, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি এবং রাম মন্দির নির্মাণ। বাজপেয়ী- আদবানির সরকার ছিল জোট সরকার। সেই জোট সরকারের জন‌্য শুধু নয়, বাজপেয়ী নিজেও আরএসএসের চাপে নতিস্বীকার করে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে এসব কমর্সূচিকে দ্রুত রূপায়ণ করতে চাননি। কিন্তু মোদীর বিজেপি যে শুধু সরকারিভাবে উগ্র হিন্দুত্বের লাইন নিয়েছে, তা-ই নয়, মোদী এবং অমিত শাহ নিজেরাও ব‌্যক্তি হিসাবে এই মতাদর্শকে রূপায়ণ করতে বিশ্বাসী। একদিক থেকে দেখতে গেলে, এ ব‌্যাপারে তারা কিন্তু বাজপেয়ী-আদবানির চেয়ে বেশি সৎ। তারা দলীয় কর্মসূচি– যা ভোটে প্রচার করেন, যার জন‌্য ভোট পান, তাকেই বাস্তবায়িত করতেই চাইছেন।

আজাদি শ্লোগান: উত্তর-আধুনিক রামধনু স্বর

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই মতাদর্শ রূপায়ণ করতে গেলে এই অখণ্ড ভারতের বহুত্ববাদ কি ধ্বংস হয়ে যাবে?

ভারতীয় রাজনীতিতে হিন্দু ও মুসলমান সম্পর্কের অতীত ইতিহাসের যদি দ্রুত পর্যালোচনা করি, তাহলে কিন্তু দেখা যায় মুগল আমলেও হিন্দু ও মুসলমান সমাজের ঘাত-প্রতিঘাত ছিল। মুসলিম শাসক ও হিন্দু প্রজাদের মধ্যে বেশ কিছু সম্রাটের সময় অর্থনৈতিক শোষণ হয়েছে, কিন্তু ব্রিটিশ শাসনের দীর্ঘ সময় কর্তৃত্বে হিন্দু এবং প্রজা অবস্থানে মুসলমান, এমন হয়নি। ব্রিটিশ শাসনকালে প্রশাসক বিদেশি কিন্তু ক্রমশ মুসলমান সমাজ ‘সংখ‌্যালঘু’ সমাজেই পরিণত হয় এবং হিন্দুরাই দেশের প্রধান পরিচালিকা শক্তি হয়ে ওঠে। ব্রিটিশদের ‘ডিভাইড অ‌্যান্ড রুল’ এই পরিস্থিতি সৃষ্টিতে আরও বড় ভূমিকা নিয়েছিল।

১৯০৫ সালে লর্ড কার্জনের ‘বঙ্গভঙ্গ’ হয় প্রশাসনিক কারণে, কিন্তু এর ফলে ১৯০৬ সালে ‘মুসলিম লিগ’-এর জন্ম হয়েছিল। ১৯০৯ সালে মর্লে-মিন্টো সংস্কার হয়। মুসলিমদের জন্য পৃথক ভোটার তালিকা তৈরি হয়। এই পৃথক ইলেকটোরেট তৈরির কারণ বলা হয়েছিল, যাতে হিন্দু-মুসলমান সাম্প্রদায়িকতা কমানো হয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল এর ফলেই সাম্প্রদায়িকতা আরও বাড়ল।

১৯১৬ সালে লখনউ চুক্তির মাধ‌্যমে কংগ্রেস এই নীতি মেনে নেয়। বলা হয়েছিল, এর ফলে জাতীয় ঐক‌্য বাড়বে। এরপর আসে খিলাফত আন্দোলন। গান্ধী এই আন্দোলনকে মেনে নেন। ১৯২১ সালে moplah দাঙ্গা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে হলেও এটি হিন্দুবিরোধী সেন্টিমেন্টের জন্ম দেয়।

নেহরু ভেবেছিলেন, গণপরিষদ গঠনের মাধ‌্যমে, একটা সুষ্ঠু সংবিধান তৈরির মাধ‌্যমেই এ দেশের হিন্দু-মুসলমান সমস‌্যার সমাধান হয়ে যাবে। বাস্তবে কিন্তু তা হয়নি।

গান্ধী বাস্তববাদী ছিলেন। তিনি রামরাজ‌্য ও রামধুনকে ব‌্যবহার করেছেন, আবার হরিজন ও মুসলমান সমাজকে পৃথকভাবে ঐক‌্যবদ্ধ করতে সচেষ্ট হন। সেদিক থেকে দেখতে গেলে আজ যে ‘কাট অ‌্যান্ড পেস্ট’ সংহত সমীকরণের কথা আমরা বলি, সে কৌশলের জনক কিন্তু কিয়দংশে স্বয়ং গান্ধী! নেহরুর জীবনে, লন্ডনে অধ‌্যয়নের সুবাদে, ব্রিটিশ ও ইউরোপীয় প্রভাব ছিল, আর তাই তিনি যখন রাজনীতিতে অংশ নেন, তখন তিনি ব্রিটিশ চোখ দিয়েই অনেকটা ভারতের রাজনীতিকে দেখছেন।

আজ মনে হচ্ছে, সেই বিষবৃক্ষের ফসল নিয়ে সমস‌্যা থেকেই যাচ্ছে। অমিত শাহর সঙ্গে যদি আপনি কথা বলেন, তবে বুঝতে পারবেন তিনি আদপে দিবালোকের মতো স্পষ্ট এক ব‌্যক্তিত্ব। অমিত শাহ উত্তরপ্রদেশে একজনও মুসলমান প্রার্থী দেননি কেন? রাজনাথ সিং পর্যন্ত প্রশ্ন করলে অমিত শাহ তাঁকে বলেন, যারা আমাদের ভোট দেবে না তাদের বিজেপি প্রার্থী করবে কেন?

ঠিক এই প্রশ্নটাই যখন আমি আদবানিকে করেছিলাম, কেন সিকন্দর বখতকে বিদেশমন্ত্রী করছেন? কেন মুসলিম নেতাদের দলের প্রার্থী করছেন? ওঁরা তো বিজেপিকে ভোট দেয় না। আদবানি আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তুমি তো হিন্দু। তুমি কি অ‌্যান্টি-মুসলিম? আমি বললাম, এক্কেবারেই না। তার উপর আমি তো রামকৃষ্ণ মিশন। হাসতে হাসতে আদবানি বলেছিলেন, এ জন্য তো মুসলিম নেতা দু-একজন থাকা উচিত, কিছু প্রার্থীও থাকা উচিত। যাতে মডারেট হিন্দুরাও চটে না যায়, আমাদের ভোট দেয়।

এখন ভাবি, এভাবে টোকেনইজম কি সততা, না কি রাজনৈতিক কৌশল? আপনি পছন্দ করতে না-ও পারেন, সমর্থনও করতে না-ও পারেন, কিন্তু অমিত শাহ তো নিজে যা মনে করেন, তাঁর দল যা মনে করে, তা-ই বলছেন। বাজপেয়ীর মতো লাহোর বাস ডিপ্লোমেসি বা আদবানির মতো জিন্নার সমাধিতে যাচ্ছেন না। আর মোদীকে তো আজও মুসলিমদের টুপি পরানো সম্ভব হয়নি। নেহরুবাদী রাজনীতির আলে্খ্যে মুসলিম তোষণের বিরোধিতা করেন বাজপেয়ী-আদবানি, কিন্তু মোদি-শাহ এবার ২০১৯-এ জেতার পর যেভাবে অল্প সময়ে একের পর এক হিন্দুত্ব কর্মসূচি প্রয়োগ করছেন, তাতে নাগপুর খুশি হতে পারে, ভোটার সমাজে রাজনৈতিক মেরুকরণ বাড়তে পারে, কিন্তু পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনে কি এর ফলে ‘হিন্দুরাষ্ট্র’ গঠনের জোর হাওয়া বইতে শুরু করবে, না কি আবার সেই পুরনো নেহরুবাদী ধর্মনিরপেক্ষ বহুত্ববাদী আলেখ‌্য বুমেরাং হয়ে বিজেপিকেই কুপোকাত করবে, সেটাই দেখার!

আশার কথা, একটাই: এখনও মুসলমান সমাজ যতটা মোদি-শাহ বিরোধী, ততটা কিন্তু হিন্দু সমাজ বিরোধী নয়।

Delhi Theke Bolchi Citizenship Amendment Act
Advertisment