আজ চিকিৎসক দিবস। করোনার আবহে। অন্যান্য বছর খুব ঘটা করে পালন হতো। নানান সংগঠন উদ্যোগ নিত। হয়তো সম্বর্ধনা, হয়তো আলোচনা সভা, হয় তো রক্তদান!
এবার সেসব অনেক কিছুই হবে না। শুধু ওষুধ কোম্পানির সেলসের ছেলেমেয়েরা এবছরও ডাক্তারদের ইনবক্স ভরে দেবে বাধ্যতামূলক শুভেচ্ছা বার্তায়।
আমি ব্যক্তিগত ভাবে চাকরি জীবন শেষ করে, কাজের জায়গা থেকে বাড়ি ফিরে এসেছি। সেখানেও এই করোনার জন্য কাজ বেড়ে যাওয়া পরিবেশ আর চাপে থাকা ডাক্তারদের দেখে এসেছি। সব মিলে সরকারি আর বেসরকারি ডাক্তারদের কাজের পদ্ধতি আর প্রকরণ, সবই বেশ বদলে গেছে গত কয়েক মাসে।
আরও পড়ুন: কর্তব্যে অবিচল, নব্বইয়ের কোঠাতেও টলাতে পারেনি করোনা, চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন এই ডাক্তারবাবু
বেসরকারি হাসপাতাল প্রচুর খরচ বাড়িয়েছে চিকিৎসার। তার মুখ্য দায় এই করোনার। সরকারি হাসপাতালে করোনা-ভয় সার্থকভাবে চিকিৎসাকে দূরতর করেছে।
পাড়ার ডাক্তার আর ছোট ক্লিনিকের ডাক্তার, নানা বিপদে পাশে দাঁড়ানো আর খুঁজে বেড়ানো ডাক্তার আর রোগীসাধারণের মধ্যে ঢুকে পড়েছে দ্বিধা ও সংশয়। পয়সা থাকলেও পরিচিত চিকিৎসা আর কেনা যাচ্ছে না। আইনসিদ্ধ টেলিমেডিসিন কিনতে হচ্ছে আজকের এই 'নিউ নর্মাল' পরিমণ্ডলে।
প্রথমেই বলেছিলাম, 'করোনার আবহে' কথাটা। ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার-উকিল-প্রফেসর, এই পেশাগুলো অন্যান্য পেশার চেয়ে আদরণীয়, সামাজিক কথ্য ভাষ্যে। অন্য সবাই এখন ওয়ার্ক ফ্রম হোম! খালি ডাক্তারেরা 'ফ্রন্ট লাইন ওয়ারিয়র্স'। নেতা বলছে, জনগণ বলছে। এবং ডাক্তার করোনা পজিটিভ হলে তাকে ফ্ল্যাটে ঢুকতে দেবে না, সেটাও বলছে জনগণের একাংশ।
ডাক্তার যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যায়নি, গেলেও ফিরে এসেছে। আর হ্যাঁ, পিপিই, এন নাইন্টি ফাইভের গোলকধাঁধায় একজন দুজন করে মারাও যাচ্ছে। তাকে দেবতা ভাবার দরকার নেই। আপনার চারপাশে যে ডাক্তারেরা, তাঁদের অন্তত মানুষ ভাবুন আজকের এই চিকিৎসক দিবসে। দোষে গুণে আপনাদেরই মত মানুষ তাঁরা।
পুনশ্চঃ বীরোচিত বুক চিতিয়ে লড়াই করা কোভিড সৈনিক এই ডাক্তারদের সম্মান জানানোর জন্য চিকিৎসক দিবসকে ছুটির দিন ঘোষণা করা হয়েছে। এটি শতাব্দীর সেরা রসিকতা বলে বিবেচনা করা যেতে পারে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন