মহুয়া মৈত্র, তৃণমূল সাংসদ
আগামী ৭ জুলাইয়ের পর সংসদে সরকারপক্ষে বা ট্রেজারি বেঞ্চে কোনও মুসলিম জনপ্রতিনিধি থাকবেন না। বিজেপির মুসলিম জনপ্রতিনিধিরা দলের মুখপাত্রদের চেয়েও কম গোঁড়া। তাঁরা যথেষ্ট সংবেদনশীলও। একইসঙ্গে গোটা বিশ্বকে তাঁরা বার্তা দিতেন যে ভারতের শাসক দল হিন্দু, মুসলিম-সহ সব ধর্মের মানুষকেই সমান চোখে দেখে। ভারতে সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন চলার কোনও রকম ভুলবার্তা যাতে আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় না-পৌঁছয়, সেটাও মুসলিম জনপ্রতিনিধিরা নিশ্চিত করতেন।
তার বদলে কিন্তু, উলটো ছবি ধরা দিচ্ছে। স্বঘোষিত 'বিশ্বের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল' বিজেপির লোকসভা এবং রাজ্যসভায় আগামী একমাসের মধ্যে কোনও মুসলিম সাংসদ আর থাকছেন না। শুধু তাই নয়, দেশের কোনও রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলেও বিজেপির কোনও মুসলিম জনপ্রতিনিধি থাকছেন না।
আমি যখন সোশ্যাল মিডিয়ায় এটি লিখেছি, তখন একজন পালটা লিখেছেন যে বিজেপি একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক দল। এই দল যোগ্যতায় বিশ্বাসী। টিকিট দেওয়ার যোগ্য কোনও মুসলমানকে না-পেলে দলকে দোষারোপ করা যায় কীভাবে? ওই ব্যক্তির মতে, তৃণমূল কংগ্রেসের মতো দলগুলো 'তুষ্টকারী'। এরা ভোটব্যাংকের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। কাজের জন্য সেরা ব্যক্তিকে বেছে নিতে এরা জানে না।
আর, সেখানে বিজেপি অনেক বেশি বিকশিত একটি দল। বংশবাদী দল নয়। জোর করে 'ধর্মনিরপেক্ষ' পরিচয় তৈরি করার বোঝা থেকেও মুক্ত। বিজেপি সেরা লোকদেরই টিকিট দিয়েছে। তাঁরা জয়লাভ করেছেন। তার ফলে দলের ক্ষমতায় থাকা নিশ্চিত হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, নির্বাচনে জয়লাভের চেয়ে কোনও রাজনৈতিক দলের কাছে বড় কোনও ধর্ম থাকতে পারে না।
আরও পড়ুন- ডলারের তুলনায় রেকর্ড পতন, আরও কমল টাকার দাম
অন্য একজন লিখেছেন যে, বিজেপি কেবল সংবিধান অনুসরণ করছে। সংবিধান ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য নিষিদ্ধ করেছে। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে বিজেপি যদি মুসলমানদেরকে কেবলমাত্র মুসলমান বলে টিকিট দেয়, তবে তা হিন্দুদের প্রতি বৈষম্যমূলক হবে।
যাঁরা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন, তাঁদের বেশিরভাগই আবার সরাসরি ছিলেন বিজেপির পক্ষে। তাঁরা বলেছেন, বিজেপি একটি হিন্দুত্ববাদী দল। সেই কারণেই তারা হিন্দুদের এগিয়ে দিয়েছেন। তাহলে কেন বিজেপিকে মুসলিমদের সংসদে না-পাঠানোর জন্য দায়ী করা হবে?
Read full story in English