২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছিল নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার। কিন্তু ক্ষমতার দ্বিতীয় বার্ষিকীতে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে পদ্ম শিবির। যদিও সরকার স্থাপনের দ্বিতীয় বছরে মোদী ভক্তরা ছবি থেকে পোস্ট শেয়ার করেছেন। কিন্তু নেই কোথাও কোনও উদযাপনের বিজ্ঞাপন। মোদী শাসনের সাত বছরের বার্ষিকীতে গত সপ্তাহে অনলাইনে প্রকাশ করা হয়েছে একটি রিপোর্ট।
সেই রিপোর্টে মোদীকে ‘কোভিড চলাকালীন দৃঢ় ও সংবেদনশীল নেতৃত্বের’ জন্য প্রশংসা করা হয়েছে। প্রাক-কোভিড মাসে মোদী দূর-দূরান্তের দেশগুলিতে ভ্রমণ করেছিলেন। সবচেয়ে স্মরণীয়ভাবে হিউস্টনে ‘হাওডি মোদী’ ছিল যেখানে তিনি আশা করেছিলেন যে নিউ ইয়র্কের ভারতীয় প্রবাসীরা তাঁকে সমর্থন করবেন। কিন্তু ২০১৪ সালের মতো সেই অনুষ্ঠানে ভিড় থাকলেও স্বতঃস্ফূর্ততা অনুপস্থিত ছিল।
এর বেশ কিছু কারণও রয়েছে। দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসে তিন তালাক উঠিয়ে দেওয়া, ৩৭০ ধারা বিলোপ, নাগরিকত্ব আইনে সংশোধন করে মুসলমানদের বাদ দিয়ে অন্য ধর্মের শরণার্থীরা ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য এগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভারতীয় মুসলমানরা এটিকে বিপদ হিসেবেই দেখেছে। এই ঘটনায় এমনকী দাঙ্গাও দেখেছে দিল্লি।
কোভিড নিয়েও সমস্যা পড়েছে মোদী সরকার। প্রথম দফায় আচমকা লকডাউন এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্ভোগ ভাল চোখে নেয়নি দেশ। শত শত কিলোমিটার হেঁটে যেতে বাধ্য হওয়ার মাঝেই প্রাণহানি হয়েছিল একাধিকের। তবে জানুয়ারিতে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামকে দেওয়া এক ভাষণে মোদী বলেছিলেন ভারত কোভিডকে এমনভাবে পরাজিত করেছে যাতে অন্যান্য দেশ অনুপ্রাণিত হয়। কিন্তু সংশয়ে ছিলেন ভারতীয়রাই।
এরপর টিকা সমস্যা, বাংলার ভোটে পরাজয় তো আছেই। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সতর্কতা ভুলে হরিদ্বারে কুম্ভমেলায় সম্মতি, কোভিড আবহে পশ্চিমবঙ্গে ভোটে প্রচার ইত্যাদি মিলিয়ে ভারত যে ভয়াবহ সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছিল সেখানে প্রধানমন্ত্রী নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ হয়েছেন এমনটাই বলা হয়েছে। এছাড়াও কৃষি আইন নিয়ে কৃষকদের আন্দোলন। এখনও পর্যন্ত কৃষকদের সন্তুষ্ট করতে ব্যর্থ হয়েছেন মোদী।
রাজনৈতিক জীবনের এমন খারাপ বছর সাম্প্রতিক সময়ে দেখেননি মোদী। ভারত থেকে বিশ্বের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে। তাই কি উদযাপন বন্ধ?
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন