New Update
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2021/08/Biplab-Chatterjee.jpg)
সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরে এসেছিলেন সিনেমা জগতে। সিনেমা জগতে কাজ করেছেন মৃণাল সেন, তপন সিনহাদের মতো পরিচালকদের সঙ্গে। এখন কোনও কাজ নেই। বর্তমান হাতেগোনা কয়েকজন পরিচালকের কাজ তাঁর পছন্দ। এছাড়া সবাই 'ধর তক্তা, মার পেরেক'। বামপন্থী আন্দোলনে বিশ্বাসী। তবে তিনি মনে করেন, কোনও তত্ত্ব দিয়ে রাজনীতি হয় না, কাল মার্ক্স সাহেব বেঁচে থাকলে ওনার সব থিওরি এখন পাল্টে ফেলতেন। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ
সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরে এসেছিলেন সিনেমা জগতে। সিনেমা জগতে কাজ করেছেন মৃণাল সেন, তপন সিনহাদের মতো পরিচালকদের সঙ্গে। এখন কোনও কাজ নেই। বর্তমান হাতেগোনা কয়েকজন পরিচালকের কাজ তাঁর পছন্দ। এছাড়া সবাই 'ধর তক্তা, মার পেরেক'। বামপন্থী আন্দোলনে বিশ্বাসী। তবে তিনি মনে করেন, কোনও তত্ত্ব দিয়ে রাজনীতি হয় না, কার্ল মার্ক্স সাহেব বেঁচে থাকলে ওনার সব থিওরি এখন পাল্টে ফেলতেন। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ বরাবর স্পষ্ট বক্তা হিসেবে পরিচিতি। টলিপাড়ার কিংবদন্তি ভিলেন। নয়ের দশকের সকলে অন্তত তাঁকে ভিলেন হিসেবেই চেনে। গালে কাটা দাগ। অভিনয়ের দক্ষতা তাঁর এমনই ছিল যাঁকে দর্শক নেগেটিভ চরিত্রে দেখতেই বেশি পছন্দ করতেন। ভিলেন মানেই তো ভয়ংকর কেউ। কোনওভাবেই পজিটিভ না, নেগেটিভ, শয়তানি করাই যার কাজ। হেন খারাপ কাজ নেই, যা ভিলেন করে না। খুন-লুটপাট থেকে ধর্ষণ, সব। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ বাস্তবে ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় করা মানুষগুলো বিপরীত হয়। যেমন বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়। নিতান্ত একজন ভাল মানুষ। বামপন্থী মানসিকতার এই মানুষটি বাস্তব জীবনে অত্যন্ত আদর্শবাদী, অসম্ভব ভাল মনের। বিপ্লব চ্যাটার্জি বরাবরই স্পষ্টবক্তা, সত্যিটা মুখের ওপর বলতেই তিনি ভালবাসেন। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ বুক ফুলিয়ে এখনও তিনি বলেন, বামপন্থী ছিলেন বামপন্থী আছেন এবং বামপন্থী হয়েই বেঁচে থাকবেন সারাজীবন। তবে এখনকার রাজনৈতিক নেতাদের মতো নয়। যাঁরা পার্লামেন্টে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। এখন যে সব অভিনেতা-অভিনেত্রী ভোটের আগে দেশ সেবার নামে রাজনীতিতে এসেছেন। তাঁরা সবাই এসেছে টাকার লোভে। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ একসময় টলিপাড়ার অভিনেতাদের মধ্যে তিনিও বাম প্রার্থী হয়ে ভোট লড়ে ছিলেন। সে সব দীর্ঘদিন আগের কথা, এখন এসব থেকে দূরে। যেমনটা দূরে সরে গিয়েছেন শুটিং ফ্লোর থেকে। বলা যেতে পারে পুরোপুরি এখন তিনি লোক চক্ষুর আড়ালে। অপেক্ষায় রয়েছেন ভাল কোনও চিত্রনাট্যের। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ গত দু'বছর মহামারির জন্যে বাড়ির বাইরেও পা রাখেননি। সারাদিন বই এবং লেখালেখি নিয়ে ব্যস্ত। একটা নাটকের চিত্রনাট্যও লিখছেন। তবে পয়সা না পেলে খাতায় কলমেই চিত্রনাট্য থেকে যাবে সোজাসাপ্টা উত্তর তাঁর। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ প্রযোজক না পেলে নাটক সিনেমা কোনও কিছুই করা সম্ভব নয় বলে জানান বিপ্লব বাবু। তাঁর জন্ম রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ে, পরবর্তী কালে বিপিন পাল রোড হয়ে এখন পাকাপাকি বাসস্থান ভারত লক্ষ্মী স্টুডিওর পিছনে রসা রোডে। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ সব কিছুই এখন আশ্চর্য ভাবে বদলে গিয়েছে। যেমন বদলেছে সিনেমা সিরিয়াল। একটা সময় ছিল যখন বাংলা ছবি মানেই উপস্থিতি থাকত এই অভিনেতার। সত্যজিৎ রায়ের ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ ছবি দিয়ে প্রথম সিনেমা জগতে আসা! এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ এরপর একে একে মৃণাল সেন, তরুণ মজুমদার, তপন সিনহার মতো পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেছেন। তাঁর কথায় সত্যজিৎ, মৃণাল সেন, ওনারা যখন ছিল তখন বাংলা ছবির স্বর্ণযুগ। এখন এসব আর কিছু নেই। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ এখন যে সব ছবি তৈরি হয় তাঁর কোনও গল্প নেই। বাড়ির ভিত নড়বড়ে হলে বাড়ি তো ধসে পড়বেই। উত্তম কুমারের পরবর্তী সবাই যখন মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়েছিল, তখন আমরাই কমার্শিয়াল ফিল্মে কাজ করে সিঙ্গল স্ক্রিনেই হাউসফুল বোর্ড ঝুলিয়েছি। এখন এসব কোথায় হচ্ছে? এখন অভিনেতারা সব কায়দাবাজি শিখে গিয়েছে। কায়দাবাজি শিখে ভাল কাজ হয় না। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ টেলিভিশনের ধারাবাহিকের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, স্ত্রী টেলিভিশন দেখেন বলে তাঁর দেখতে হয়। তা না হলে একটা সিরিয়াল দেখার যোগ্য নয়। এই প্রজন্মের সিরিয়াল দেখলে তার ছোটবেলার সেই গল্পের গরু গাছে ওঠার প্রবাদের কথাই মনে পড়ে যায়। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ অভিনেতার বক্তব্য, “এখনকার সিরিয়ালগুলোতে বলুন গল্প আছে কিছু? একটা নির্দিষ্ট গল্প আছে কিছু? খালি বাড়ানোর চিত্রনাট্য। যিনি লিখছেন পয়সা পেয়ে যাচ্ছেন, আরামে আছেন ভালই ব্যবসা চলছে। এভাবে কাজ হয় না”। শুধু এখানেই শেষ নয়, অভিনেতাদের প্রতিও তাঁর বিস্তর ক্ষোভ জমা রয়েছে। তিনি মনে করেন, “এখন আর কেউ শিল্পী নেই, সব কুলপি হয়ে গিয়েছেন। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ "টাকা পেয়ে যান বলেই এরা বাজে গল্পে কাজ করতে প্রতিবাদ করেন না"। এই প্রজন্মের কলাকুশলীরা সিরিয়াল করে অল্প সময়ের মধ্যেই খ্যাতি, জনপ্রিয়তা লাভ করে ফেলছেন। একটা সময় কাজ করতে হলে কাজ শিখে আসতে হত এখন শেখার কিছু নেই। অনেকে এখনও এমন আছেন যাঁরা সুকুমার রায় কে ছিলেন তাই জানেন না। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ সত্যজিৎ রায় এবং মৃণাল সেনের মতো পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করার আগে কাজটা শিখে আসতে হত। কিন্তু বর্তমান পরিচালকরা একটা কাজ করেই নিজেকে বিশাল বড় মাপের পরিচালক ভাবতে শুরু করেন। তাই তার মতো অভিনেতাকে মনে রাখার প্রয়োজন নেই! এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ ব্যঙ্গাত্মক সুরে বিপ্লববাবু বলেন, বিশাল মাপের ডিরেক্টর ওঁরা! আমাকে কেন ডাকবে? ওরা পছন্দ করেন না তাই ডাকেন না। অভিনয়ের পাশাপাশি বিপ্লব চ্যাটার্জি একজন পরিচালকও। তিনি যে ছবি এবং নাটক পরিচালনা করেছেন এই কথাও অনেকে জানেন না। তাঁর পরিচালিত ছবি ‘অভিমন্যু' , ‘বিদ্রোহিনী ’, ‘চোর ও ভগবান’ এসব ছবির কথা সবাই ভুলে গিয়েছেন। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ "শকুনির পাশা" তাঁর করা লেজেন্ডারি নাটক। বর্ষীয়ান এই অভিনেতা মনে করেন, সম্রাট আলেকজান্ডার এই দেশে এসে সত্যি কথাই বলেছেন, 'সত্য! সেলুকাস কী বিচিত্র এই দেশ'। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ