Aamir Khan: আমির খানকে Mr. Perfectionist নাম কে দেন? নেপথ্যে রয়েছেন আরেক বলিউড তারকা

বলিউডে এমন কিছু তারকা আছেন যাঁরা সবসময় তাঁদের অভিনয়, নিষ্ঠা এবং চলচ্চিত্রের গুণমানের কারণে একটি আলাদা পরিচয় তৈরি করেন। তাঁদের একজন হলেন বলিউড সুপারস্টার আমির খান, যিনি 'মিস্টার পারফেকশনিস্ট' নামে পরিচিত। তিনি ১৪ মার্চ ১৯৬৫ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং তাঁর কঠোর পরিশ্রম, নিষ্ঠা এবং চমৎকার অভিনয় দিয়ে চলচ্চিত্র জগতে একটি আলাদা পরিচিতি তৈরি করেছেন। কিন্তু আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন কীভাবে তিনি এই বিশেষ ট্যাগ পেলেন? এর পেছনে লুকিয়ে আছে এক মজার গল্প।

'মিস্টার পারফেকশনিস্ট' তকমা পেলেন কীভাবে?

আমির খান সম্প্রতি 'দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কপিল শো'-তে প্রকাশ করেছেন যে এই ট্যাগটি তাঁকে প্রবীণ অভিনেত্রী শাবানা আজমি দিয়েছিলেন। এই ঘটনাটি ঘটেছিল 'দিল' (১৯৯০) ছবির শুটিংয়ের সময়, যখন আমির খান পরিচালক ইন্দ্র কুমারের সঙ্গে কাজ করছিলেন এবং বাবা আজমি (শাবানা আজমির ভাই) ছিলেন ছবির ক্যামেরাম্যান।

একদিন আমির খান বাবা আজমির বাড়িতে গিয়েছিলেন ছবির স্ক্রিপ্ট নিয়ে আলোচনা করতে। কথোপকথনের সময় শাবানা আজমি আমিরকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে তিনি চায়ে কত চিনি খাবেন। কিন্তু আমির ছবিটি নিয়ে আলোচনায় এতটাই ব্যস্ত ছিলেন যে তিনি তাৎক্ষণিক উত্তর দিতে পারেননি।

শাবানার প্রশ্ন বুঝতে পেরে তিনি উল্টে প্রশ্ন করলেন- "কাপটা কত বড়?" শাবানা যখন কাপটি দেখালেন, আমির পরের প্রশ্নটি করলেন - "চামচটি কত বড়?" এর পর তিনি সঠিক পরিমাণে চিনি যোগ করতে বলেন

এই ঘটনা দেখে হাসতে হাসতে শাবানা আজমি বলেন, আমির সবকিছুতেই এত বেশি খুঁটিনাটি এবং পরিপূর্ণতা খোঁজেন যে তাঁকে 'মিস্টার পারফেকশনিস্ট' বলা উচিত। তারপর থেকে এই নামটি আমির খানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায় এবং এই নামটি ধীরে ধীরে পুরো ইন্ডাস্ট্রিতে বিখ্যাত হয়ে ওঠে।

'মিস্টার পারফেকশনিস্ট' মানে কী?

ইংরেজিতে, 'Mister' ব্যবহার করা হয় একজন ব্যক্তিকে সম্মান জানাতে, যেখানে, 'Perfectionist' শব্দটি ইংরেজি শব্দ 'Perfect' থেকে এসেছে এবং 'Perfectionist' এর অর্থ হল - একজন ব্যক্তি যিনি প্রতিটি কাজ নিখুঁতভাবে করেন। আমির খানকে এই নাম দেওয়া হয়েছিল কারণ তিনি যা কিছু করেন তাতে পরিপূর্ণতা আনার চেষ্টা করেন।

আমির খানকে কেন 'মিস্টার পারফেকশনিস্ট' বলা হয়?

আমির খান শুধুমাত্র একটি মজার ঘটনার কারণে এই খেতাব পাননি, তবে তাঁর চলচ্চিত্র কেরিয়ারে এমন অনেক কারণ রয়েছে যা তাঁকে এই ডাকনামের যোগ্য করে তুলেছে।

প্রতিটি চরিত্রে গভীরতা এবং পরিপূর্ণতা

আমির খান প্রতিটি চরিত্রই পূর্ণ উদ্যমে অভিনয় করেন। 'লগান'-এর ভুবন হোক, 'গজিনি'-এর সঞ্জয় সিংহানিয়া, বা 'দঙ্গল'-এর মহাবীর ফোগাটের চরিত্র - তিনি নিজেকে প্রতিটি চরিত্রে সম্পূর্ণরূপে তুলে ধরেন এবং তাঁর চরিত্রকে বাস্তব মনে করেন।

স্ক্রিপ্টের গভীর উপলব্ধি

আমির খান শুধুমাত্র ভাল ও শক্তিশালী স্ক্রিপ্টের ছবি বেছে নেন। তিনি বিষয়বস্তুকে বেশি গুরুত্ব দেন এবং যদি একটি স্ক্রিপ্ট তাঁকে প্রভাবিত না করে তবে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করতে দ্বিধা করে না।

আমির শুধু একজন দুর্দান্ত অভিনেতাই নন একজন দুর্দান্ত পরিচালক এবং প্রযোজকও। তাঁর ছবি 'তারে জমিন পর' এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ, যেখানে তিনি শুধু অভিনয়ই করেননি, পরিচালনার দায়িত্বও নিয়েছেন এবং দর্শকদের একটি আবেগঘন গল্প দিয়েছেন।

অসাধারণ শরীরের রূপান্তর

আমির খান তাঁর চলচ্চিত্রের জন্য অসাধারণ বডি ট্রান্সফর্মেশন করেন। তিনি 'গজিনি'-এর জন্য একটি পেশীবহুল শরীর তৈরি করেছিলেন, 'দঙ্গল'-এর জন্য ৯৭ কেজি পর্যন্ত ওজন বাড়িয়েছিলেন এবং তারপরে তরুণ মহাবীর ফোগাটের ভূমিকার জন্য একটি ফিট বডি পেতে এটি কমিয়েছিলেন। 'লাল সিং চাড্ডা'-তে তিনি নিজেকে সম্পূর্ণরূপে একটি রোগ চরিত্রে মানিয়ে নিয়েছিলেন।

কয়েকটি কিন্তু দুর্দান্ত সিনেমা

এক বছরে অনেকগুলি ছবি করার পরিবর্তে, আমির খান শুধুমাত্র সেই ছবিগুলি বেছে নেন যেগুলি শক্তিশালী এবং দর্শকদের নতুন কিছু দেয়। এই কারণে, তাঁর বেশিরভাগ চলচ্চিত্র ব্লকবাস্টার হিসাবে প্রমাণিত হয় এবং দীর্ঘদিন ধরে মানুষের হৃদয়ে থাকে।