চিরঘুমে বর্ষীয়ান পরিচালক তরুণ মজুমদার (Tarun Majumdar)। হাজারো সম্মান, জাতীয় পুরস্কার থেকে অগণিত মানুষের ভালবাসা। বহু বছর ধরে সমানতালে কাজ করলে চলেছেন ইন্ডাস্ট্রিতে। দুই প্রজন্ম বলা হলেও ভুল, একাধারে উত্তম-সুচিত্রা থেকে সোহম-কোয়েলের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। বাদ পড়েননি তাপস-দেবশ্রীও। এই প্রজন্মের সঙ্গেও নিদারুণ সম্পর্ক ছিল তার।
পিতৃতুল্য তরুণ মজুমদার। দেবশ্রীকে নিজের হাতে গড়ে তুলেছেন তিনি। এমনকি দেবশ্রী নামটাও তিনিই দিয়েছিলেন। অভিনেত্রী অভিনয় করেছেন, 'ভালবাসা ভালবাসা', 'দাদার কীর্তির' মতো ছবিতে। আজ কেঁদে ভাসাচ্ছেন দেবশ্রী। বাবাকে হারিয়ে প্রবল যন্ত্রণায় অভিনেত্রী।
তাপস পালের সঙ্গে দিয়েছেন বিখ্যাত দুটি সিনেমা। 'ভালবাসা ভালবাসা' এবং 'দাদার কীর্তির' অভিনয় দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন সকলে। তাপস তাঁর খুব কাছের ছিলেন।
এই প্রজন্মের অভিনেত্রী কোয়েল মল্লিক তরুণ মজুমদারের সঙ্গে কাজ করেছেন 'চাঁদের বাড়ি' ছবিতে। সম্পূর্ণ পারিবারিক এই ছবিতে কোয়েল ছাড়াও ছিলেন রঞ্জিত মল্লিক, লাবণী ঘোষ- সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।
সেই প্রজন্মের আরেক নায়িকা শতাব্দী রায়ের সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক ছিল দারুণ। শুধু অভিনয় নয়, শতাব্দী বলেন পরিচালকের সঙ্গে গল্প করার অভিজ্ঞতাও যথেষ্ট ভাল। শিক্ষক হিসেবে যথেষ্ট কড়া ছিলেন বর্ষীয়ান পরিচালক। 'আপন আমার আপন'-এর মতো হিট ছবিতে কাজ করেছেন শতাব্দী।
অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী কাজ করেছেন বহু বর্ষীয়ান পরিচালকের সঙ্গে। তরুণ মজুমদারের সঙ্গে তিনিও কাজ করেছেন 'চাঁদের বাড়ি' ছবিতে। শুধু একজন পরিচালক নন, কাছের জেঠুকে হারিয়েছেন সোহম। গুণী মানুষ চলে গেলেন, বললেন অভিনেতা।
তরুণ মজুমদারের হাত ধরেই ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছিলেন মৌসুমি চট্টোপাধ্যায়। 'বালিকা বধু' সিনেমা দিয়ে শুরু। অভিনেত্রীর জীবনের তনু কাকুর ভুমিকা বাবা কিংবা শ্বশুরমশাইয়ের থেকে কিছু কম নয়। বালিকা বধুর শুটিং চলাকালীন ভুল করলেই কান ধরে দাঁড় করিয়ে রাখতেন তরুণ মজুমদার।
অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর জীবনে 'আলো' সিনেমার ভুমিকা অনবদ্য। সেই ছবিতেই প্রথমবারের মত তিনি অভিনয় করেন তরুণ মজুমদারের সঙ্গে। সেই ছবির ক্ষেত্রে পেয়েছিলেন সারা জাগানো সাফল্য। এরপর 'চাঁদের বাড়ি' ছবিতেও অভিনয় করেছেন ঋতুপর্ণা। শেষ অভিনয় করেছেন 'ভালবাসার বাড়ি' ছবিতে ২০১৮ সালে।
অভিনেতা গৌরবের ইন্ডাস্ট্রিতে আসাই তরুণ মজুমদারের হাত ধরে। 'ভালবাসার অনেক নাম' ছবি দিয়েই সিনে দুনিয়ায় পা রাখেন গৌরব। ভারাক্রান্ত হৃদয়েই অভিনেতা ধন্যবাদ জানালেন বর্ষীয়ান পরিচালককে।
কত কত সিনেমা। যদি জানতেম থেকে 'গণদেবতা', 'আগমন' - সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর যুগলবন্দী দেখা গেছে বারংবার। 'চাঁদের বাড়ি' ছবিতেও কাজ করেছেন একসঙ্গে।
প্রাক্তন স্ত্রী সন্ধ্যা রায়ের সঙ্গে তাঁর ছবির তালিকা সবথেকে বেশি। 'নিমন্ত্রণ' থেকে 'সংসার সীমান্তের পারে'। 'ফুলেশ্বরী'-'ঠগিনি' নানা ছবিতে কাজ করেছেন সন্ধ্যা রায়। সোমবার সকাল হতেই খবর এল মানুষটি আর নেই। সন্ধ্যা রায় জানান, তাঁর আপন মানুষ চলে গেছেন। আর বলার কোনও ভাষা নেই।
বাবুল সুপ্রিয়র সঙ্গেও কাজ করেছিলেন তরুণ মজুমদার। 'চাঁদের বাড়ি' ছবিতে একঝাঁক নতুন প্রজন্মকে সুযোগ দিয়েছিলেন তিনি।