বাংলাদেশের দীর্ঘ সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে প্রভাব পড়েছে। হাসিনা দিল্লিতে ভারত সরকারের আশ্রয় থাকার জন্য নয়াদিল্লির প্রতি ক্ষোভ বাড়ছে ঢাকার। একইসঙ্গে ওপার বাংলায় সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা বেড়েই চলেছে। মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন তদারকি সরকার সংখ্যালঘুদের উপর হামলা বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
এদিকে, হিন্দু-সহ সংখ্যালঘুদের উপর হামলায় ভারত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। পড়শি দেশ মুখ ফেরানোয় অন্যদেশের দিকে সাহায্যের হাত বাড়ানোর জন্য আবেদন-নিবেদনের রাজনীতি করছে বাংলাদেশ। সূত্রের খবর, এরই মধ্যে দেশে অচলাবস্থার কারণে বাংলাদেশের পরিস্থিতি বর্তমানে পাকিস্তানের মতো দেউলিয়া হওয়ার দিকে এগোচ্ছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল ভিত্তি হল পোশাক বা গার্মেন্টস শিল্প। আর অচলাবস্থার জেরে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই শিল্প। সংখ্যালঘুদের উপর ক্রমাগত হামলা, বিশেষত হিন্দুদের উপর এই শিল্পে উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বেশ কিছু সংস্থা ইতিমধ্যেই বন্ধ হওয়ার মুখে।
চিনের পর পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক শিল্প বাংলাদেশের। বেশ কিছু বিশ্বখ্যাত আন্তর্জাতিক পোশাক ব্র্যান্ড বাংলাদেশ থেকে পোশাক তৈরি করায়। তার পর সেগুলি বিশ্বের নামী-দামি দোকানে বিক্রি হয়।
পরে দেশের বড় বড় শো-রুমে পোশাক বিক্রি হয়। কিন্তু বাংলাদেশে চলমান অস্থিরতার কারণে এসব ব্র্যান্ডের ব্যবসায় ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি কমাতে এই ব্র্যান্ডগুলি তাদের চাহিদা মেটাতে ভারতীয় সংস্থাগুলির উপর নজর দিচ্ছে।
পোশাক শিল্প বাংলাদেশের জিডিপি-তে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। ২০২৪ সালের হিসাবে ১১ শতাংশ। আয়ের ৮০ শতাংশ আসে রফতানির উপর।
গার্মেন্টস শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হলে কর্মসংস্থানে প্রভাব পড়বে বাংলাদেশে। বহু সংখ্যক মানুষ চাকরি হারাতে পারেন। ঋণের বোঝা চাপবে দেশের উপর। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অবস্থা পাকিস্তানের মতো অর্থনৈতিক দেউলিয়ার মতো হবে।
বিশ্বের নামী-দামি ব্র্যান্ডগুলি পোশাক তৈরির জন্য বাংলাদেশের বিকল্প হিসাবে নতুন জায়গা খুঁজছে। ভারতের সুরাট একটি বড় বিকল্প হতে পারে। ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সুরাটের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডগুলির।
সুরাটের পোশাক শিল্পের বৃদ্ধির হার প্রতি বছর বর্তমান ১২ শতাংশ থেকে ২০-২৫ শতাংশে বাড়তে পারে।
সুরাট ছাড়াও তামিলনাড়ুর তিরুপুর, কোয়েম্বাটুর, পাঞ্জাবের লুধিয়ানা এবং উত্তরপ্রদেশের নয়ডার মতো শহরগুলিও পোশাক প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির পছন্দের তালিকায় রয়েছে।