New Delhi Station Stampede: রেলের চরম গাফিলতির মাশুল দিল ১৮টা প্রাণ, এই ১০ ভুল না হলে এড়ানো যেত বিপর্যয়

শনিবার রাতে নয়াদিল্লি রেলওয়ে স্টেশনে যে পদপিষ্টের ঘটনা হয়েছিল তা সবাইকে হতবাক করেছে। প্ল্যাটফর্মে জড়ো হওয়া বিশাল ভিড়ের কারণে যে পদপিষ্ট হয়েছিল তাতে ১৮ জন মারা গেছে এবং কয়েক ডজন আহত হয়েছে।

শনিবার রাতে নয়াদিল্লি রেলওয়ে স্টেশনে যে ভিড় জড়ো হয়েছিল তারা প্রয়াগরাজের মহা কুম্ভে স্নান করতে যাচ্ছিল। এমন পরিস্থিতিতে আসুন জেনে নিই এর সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিটি তথ্য।

বলে রাখা ভাল পদপিষ্ট হয়ে আহতদের অবিলম্বে লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতাল এবং লেডি হার্ডিঞ্জ মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছিল।

নিহত ১৮ জনের মধ্যে ৯ জন মহিলা, ৪ জন পুরুষ ও ৫ শিশু রয়েছে। প্রশাসনিক গাফিলতি ও ভিড় নিয়ন্ত্রণে ফাঁকফোকর এই ঘটনার কারণ বলা হচ্ছে।

১- শনিবার রাতে প্রয়াগরাজে মহা কুম্ভে যাওয়ার জন্য যাত্রীদের ভিড় জমেছিল স্টেশনে। রেল কর্তৃপক্ষ প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১৫০০ সাধারণ টিকিট বিক্রি করে।

২- এই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত কারণ ঘন্টায় প্রায় ১৫০০টি টিকিট বিক্রি হওয়ার সময় কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। সাধারণ শ্রেণির জন্য সীমিত জায়গা থাকা সত্ত্বেও প্রয়োজনের চেয়ে বেশি টিকিট বিক্রি হয়েছে।

৩- একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন যে প্ল্যাটফর্মের সিঁড়িতে পদপিষ্ট শুরু হয়। তিনি বলেন, 'আমরা ছাপড়া যাওয়ার জন্য সিঁড়ি দিয়ে নামছিলাম। সবকিছু স্বাভাবিক ছিল, কিন্তু হঠাৎ ভিড় জমে যায়। এই ধাক্কাধাক্কিতে আমার মা পড়ে যান এবং জনতা তাঁকে পিষে দিয়ে এগিয়ে যায়।

৪- এই দুর্ঘটনার সবচেয়ে বড় এবং প্রধান কারণ ছিল রেলওয়ের প্ল্যাটফর্ম পরিবর্তনের আচমকা ঘোষণা। এর আগে যাত্রীদের বলা হয়েছিল যে প্রয়াগরাজগামী বিশেষ ট্রেনটি ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ছেড়ে যাবে। কিন্তু যখন ট্রেনটি ১৬ নম্বর প্লাটফর্মে যথাসময়ে ছাড়ার ঘোষণা করা হয়, তখন যাত্রীরা দ্রুত ছুটতে শুরু করে।

৫- প্ল্যাটফর্ম পরিবর্তনের ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং কিছুক্ষণের মধ্যে পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। মানুষ প্ল্যাটফর্মের সিঁড়িতে একজনের ওপর আরেকজন পড়ে পিষ্ট হতে থাকেন।

৬- টিকিট ছাড়াই প্ল্যাটফর্মে এসেছিলেন যাত্রীরা। সংরক্ষিত টিকিট-সহ যাত্রীরাও ট্রেনে ওঠার চেষ্টা করছিলেন। জেনারেল কামরা ছাড়াও এসি কোচগুলোও সম্পূর্ণ ভর্তি ছিল।

৭- এন্ট্রি পয়েন্টগুলিতে কোনও নিরাপত্তা চেক ছিল না, যার কারণে টিকিট ছাড়া যাত্রীরা সহজেই প্ল্যাটফর্মে পৌঁছে যান। এমনকি প্ল্যাটফর্ম টিকিটও পাওয়া যাচ্ছিল না, পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তুলেছে। প্রবেশপথে টিকিট চেক করা হলে পদপিষ্ট হত না।

৮- রেলওয়ে যখন টিকিট বিক্রি করছিল, তখন জানা গেল কত যাত্রী আসছে। এ জন্য কর্তৃপক্ষের অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল।

৯- এর পাশাপাশি, যখন প্ল্যাটফর্মে এত ভিড়, রেলওয়ের উচিত ছিল ভেবেচিন্তে প্ল্যাটফর্ম বদলানোর ঘোষণা করা। সম্ভবত এটি ১৮ জনের জীবন বাঁচাতে পারত।

১০- নয়াদিল্লি রেলওয়ে স্টেশনটিকে দেশের সবচেয়ে নিরাপদ স্টেশনগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচনা করা হয়, যেখানে অনেকগুলি অত্যাধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে৷ কিন্তু এই দুর্ঘটনা সব নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে।