Advertisment
প্রতিবেদন প্রতিবেদন

তাঁকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন নালন্দার আচার্য, তবুও কেন বিশ্ববিদ্যালয় পুড়িয়ে দেন বখতিয়ার খিলজি?

নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে এত বই ছিল যে বখতিয়ার খিলজি যখন আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন, তখন তা প্রায় তিন মাস ধরে জ্বলতে থাকে। এই সেই খিলজি যাঁকে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আচার্য মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন। কিন্তু তার পরেও তিনি আগুন ধরিয়ে দেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Why Bakhtiar Khilji destroyed Nalanda University, Who saved the life of Bakhtiar Khilji
who destroyed nalanda university
আজ, বুধবারের বিহারের রাজগীরে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর মাধ্যমে ভারতের প্রাচীন ঐতিহ্যকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রী। এই নতুন কমপ্লেক্সটি নালন্দার প্রাচীন ধ্বংসাবশেষের কাছাকাছি। (ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস)
Why did Bakhtiar Khilji destroy Nalanda University?
একটা সময় ছিল যখন নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শিক্ষাকেন্দ্র। এটি বিশ্বের প্রথম আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে বিবেচিত হয় যেখানে ছাত্র এবং শিক্ষকরা একই ক্যাম্পাসে থাকতেন।
Name of Nalanda University Acharya who saved Bakhtiar Khilji
নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে এত বেশি বই ছিল যে বখতিয়ার খিলজি যখন সেগুলোতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল, তখন প্রায় তিন মাস ধরে এটি পুড়তে থাকে। এই সেই বখতিয়ার খিলজি যাঁকে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আচার্য মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন। কিন্তু তার পরেও তিনি ভারতের এই প্রাচীন ঐতিহ্যকে ধ্বংস করেন। এমনকী সেখানকার ধর্মীয় গুরু ও ছাত্রদেরও হত্যা করেন। আসুন জানি বখতিয়ার খিলজি কেন এমন করলেন?
Nalanda University Acharya who saved Bakhtiar Khilji
এগিয়ে যাওয়ার আগে, আমরা আপনাকে বলে রাখি যে সেই সময়ে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ১০ হাজার ছাত্র এবং ২ হাজার শিক্ষক ছিলেন। এর গ্রন্থাগারে প্রায় নব্বই লাখ বইয়ের সংগ্রহ ছিল। ছাত্ররা এখানে চিকিৎসা, যুক্তিবিদ্যা, গণিত এবং বৌদ্ধ নীতি অধ্যয়ন করত।
Interesting facts about Nalanda University in Hindi
শুধু ভারত নয়, জাপান, কোরিয়া, চিন, তিব্বত, ইন্দোনেশিয়া, পারস্য, তুরস্ক-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা গ্রহণের জন্য নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতেন।
PM Modi to inaugurate Nalanda University
নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিমধ্যেই দুটি হামলা হয়েছে কিন্তু সেগুলো তৃতীয় হামলার মতো বিধ্বংসী ছিল না। ১১৯৩ সালে, তুর্কি সেনাপতি ইখতিয়ারউদ্দিন মহম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজি নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে সবচেয়ে বিধ্বংসী আক্রমণ শুরু করেন।
Bihar Nalanda University
কথিত আছে, সে সময় বখতিয়ার খিলজি উত্তর ভারতের বৌদ্ধ শাসিত কিছু এলাকা দখল করেছিলেন। এই সময়ে, তিনি এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েন যে এমনকি চিকিৎসকরা তাঁর হাল ছেড়ে দেন এবং লোকেরা ধরে নেয় যে তিনি কয়েক দিনের মধ্যে মারা যাবেন। এদিকে, কেউ একজন তাঁকে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ুর্বেদ বিভাগের প্রধান আচার্য রাহুল শ্রীভদ্রের কাছ থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেন।
bakhtiar khilji destroyed nalanda university
খিলজির তাঁর চিকিৎসকদের উপর বেশি বিশ্বাস ছিল, তাই তিনি আচার্যের কাছ থেকে চিকিৎসা নিতে প্রস্তুত ছিলেন না। তিনি অনুভব করেছিলেন যে তাঁর চিকিৎসকরা ভারতীয়দের চেয়ে বেশি দক্ষ এবং জ্ঞানী। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রাণ বাঁচাতে ডাকা হয় আচার্য রাহুল শ্রীভদ্রকে। এখন বখতিয়ার খিলজি বৈদ্যরাজের সামনে অদ্ভুত শর্ত দিলেন যে তিনি তাঁর দেওয়া কোনও ওষুধ খাবেন না।
nalanda university history
বখতিয়ার খিলজির শর্ত ছিল বৈদ্যরাজ যেন তাঁকে ওষুধ ছাড়াই সুস্থ করেন। বৈদ্যরাজ তাঁর শর্তে রাজি হন এবং কিছু দিন পর তাঁর কাছে একটি কোরান নিয়ে আসেন এবং তাঁকে কোরানের কিছু পৃষ্ঠা পড়তে বলেন। বৈদ্যরাজ আচার্য রাহুল শ্রীভদ্র বলেন, এই পাতাগুলো পড়ে তিনি ভালো হয়ে যাবেন।
Nalanda University history in hindi
একই ঘটনা ঘটল... বখতিয়ার খিলজি কোরানের ওই পাতাগুলো পড়ে সুস্থ হয়ে ওঠেন। প্রকৃতপক্ষে, বলা হয় যে বৈদ্যরাজ কোরানের পাতায় ওষুধ প্রয়োগ করেছিলেন যা বখতিয়ার খিলজি পড়তে বলেছিলেন। খিলজি থুথু দিয়ে পাতা উল্টালে তাঁর মুখে ওষুধ ঢুকে যায় এবং তিনি সুস্থ হন।
bakhtiar khilji destroyed nalanda university in hindi
এখন খিলজি অবাক হয়ে দেখলেন যে ভারতীয় পণ্ডিত, আয়ুর্বেদ শিক্ষক ও শিক্ষকরা তাঁর চিকিৎসকদের চেয়ে বেশি জ্ঞানী ও দক্ষ ছিলেন। এই জিনিসটা তাঁকে খেতে শুরু করে। অবশেষে বখতিয়ার খিলজি ভারত থেকে বৌদ্ধধর্ম, জ্ঞান ও আয়ুর্বেদের শিকড় মুছে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর তিনি নালন্দার লাইব্রেরিতে আগুন ধরিয়ে দেন এবং সেই আগুনে প্রায় ৯০ লক্ষ পাণ্ডুলিপি পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
bakhtiyar khilji was saved from death by nalanda university acharya
যদি ঐতিহাসিকদের বিশ্বাস করা হয়, নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে আগুন লেগেছিল তিন মাস ধরে। এরপর বখতিয়ার খিলজি ও তাঁর তুর্কি বাহিনী নালন্দার হাজার হাজার ধর্মীয় পণ্ডিত ও সন্ন্যাসীদের পুড়িয়ে হত্যা করেন।
bihar General News
Advertisment