
মা এসেছেন মর্তে। ঘুচবে সকল দুঃখ। ইয়াশ, বন্যা সহ নানা দুর্যোগের ক্ষত সহ্য করেও আশায় ছিলেন বাংলার হাজারে হাজারে ঢাকি। ফলে গ্রাম ছেড়ে সেই চতুর্থী থেকেই মহানগরে ঠাঁই জমিয়েছিলেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা, রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করেই শিয়ালদহ স্টেশনের সামনে ঢাকিদের ভিড়। ছবি-শশী ঘোষ

নাওয়া-খাওয়ার বালাই নেই, শুধু বাবুদের দেখলেই হল। দু’চোখে একরাশ স্বপ্নের উঁকি-ঝুঁকি। কাঁধে ঢাক তুলেই চরম উদ্দমে বাজছে বাদ্য। পুজোর মুখে আবারও চেনা ছবি শিয়ালদহের। ছবি-শশী ঘোষ

তরুণ থেকে বৃদ্ধ ঢাকির হাতের যাদুতে বোল উঠছে অনবরত। কিন্তু চোখ দু’টো বাবুদের মুখের পানে চেয়ে মন বোঝার চেষ্টায় ব্যস্ত। ছবি-শশী ঘোষ

এর মধ্যেই কেউ ডাক পাচ্ছেন, আবার কেই বাজিয়ে বাজিয়েই ক্লান্ত। জুটছে না বরাত। ঢাকি মনে বাড়ছে হায়ুতাস। ছবি-শশী ঘোষ

ততক্ষণে কাঁসর হাতে ঢাকির সঙ্গে আসা ছোট্টা ছেলেটিও যেন ক্রমেই দেওয়াল লিখন বুঝতে পারছে। ক্লান্ত শরীরে একসময় কোনও মতে ঢাকেই মাথা দিয়ে দু’চোখের পাতা এক হয় তার। ছবি-শশী ঘোষ

তবুও আশা ছাড়েনি, দুর-দূরান্ত থেকে আসা রাম, গদাই, অচিন্তরা। চতুর্থী থেকে পঞ্চমী, এমনকী ষষ্ঠীতেই শেষ পর্যন্ত বায়নার দেখা মেলেনি। এবার বুকে ভরা উদ্বেগ বাড়ছে। দু’রাত তিন দিনের পরিশ্রম বোধহয় পুরটাই জলে। না খাওয়া শরীরও ততক্ষণে বলছে আর পারা যাচ্ছে না। আর ছোট্ট কোলের ছেলেটি তো ক্লান্ত হয়ে ঘুম জমিয়েছে। ছবি-শশী ঘোষ

এ যেন বোধনের আগেই বিষাদের ধ্বনি। ষষ্ঠীর সন্ধ্যা, ট্রেনে বাবুদের ভিড়। গুটি গুটি পায়ে আশা ছেড়ে ফের ঢাক কাঁধে ছেলে সামলে ট্রেনে ওঠার পালা। হল স্বপ্নভঙ্গ। কিন্তু, এই ভাঙা গড়ার খেলা যেন নিয়তি। এবার হল না, হয়তো মা মুখ তুলে চাইবেন আগামী বছর। সেই আশা সম্বল করেই ক্লান্ত মনে বাড়ির পথে কাজ না মেলা ঢাকির দল। ছবি-শশী ঘোষ