New Update
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2021/02/Window-Cover-Photo.jpg)
কলকাতার সঙ্গে জানলার এক অদ্ভুত সম্পর্ক। উত্তর ও মধ্যে কলকাতার আধ্যিকালের সব বাড়িগুলোর বিরাট অংশ জুড়ে রয়েছে এই জানলা। বড় গরাদের খড়খড়ি জানলাগুলো দেখলেই যেন মনে করিয়ে দেয় পুরনো কলকাতার স্মৃতি। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
কলকাতার সঙ্গে জানলার এক অদ্ভুত সম্পর্ক। উত্তর ও মধ্যে কলকাতার আধ্যিকালের সব বাড়িগুলোর বিরাট অংশ জুড়ে রয়েছে এই জানলা। বড় গরাদের খড়খড়ি জানলাগুলো দেখলেই যেন মনে করিয়ে দেয় পুরনো কলকাতার স্মৃতি। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ খড়খড়িতে চোখ রেখে উদাস সত্যজিতের চারুলতার রাস্তার দিকে সেই কয়েক পলক তাকিয়ে থাকার ওই দৃশ্য অনেকে অবাক হয়ে দেখে। এটিকে বাংলা চলচ্চিত্রের এক অবিস্মরণীয় ফ্রেম বলে ধরা হয়। সত্যজিৎ তাঁর এই ছবিতে বাড়ির জানলার বিভিন্ন অংশ দেখিয়েছিলেন। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ বাঙ্গালির জীবনে কীভাবে ওতপ্রোতভাবে জানালা জড়িয়ে আছে চারুলতা ছবিটি তাঁর সুনিদিসষ্ঠ উদাহরণ। সার্সি, খড়খড়ি, ময়ুরপঙ্খীর মতন বিভিন্ন ডিজাইনের জানলা তখন বাড়িতে বসত। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ অলস দুপুরে জানলার পাশে বসে মন চলে যায় কোনও এক দূরদেশে। আবার কখনও বা বৃষ্টির দিনে জানালার সামনে বসেই কেটে যাওয়া গোটা একটা দুপুরবেলা। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ সব কিছুই ছিল একটা সময় পর্যন্ত বাঙ্গালির কাটানো সেরা মুহূর্তগুলোর মধ্যে একটি। যদিও হাতে স্মার্টফোন থাকা এই ফোর জি-র যুগে মানুষের এখন দু'দণ্ড জানলার পাশে দাঁড়িয়ে থাকার সময় ও সুযোগ তেমন নেই। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ ফ্ল্যাট সংস্কৃতিতে বছরের বড় সময় ধরে ঘরে চলে এসি। জানলা খোলার প্রয়োজন হয় না। একটি ফ্ল্যাটবাড়ির সঙ্গে পাশের ফ্ল্যাটবাড়ি এতটাই গায়ে গা লাগা যে, বাড়ির আব্রু রক্ষার জন্যও জানলা খুলতে পারেন না অনেকে। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ তাই কলকাতা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে সেই রহস্যময়ী জানালার দল। এখন প্রাচীন স্থাপত্যের সময় ফুরিয়েছে। কলকাতার বেশির পুরনো বাড়ি ভেঙ্গে সেই জায়গায় তৈরি হয়েছে ফ্ল্যাট। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ সব বাড়িগুলো আকাশ ছুঁলেও মনটা আগের মতন দিল দরিয়া নেই। চার দেওয়ালে আটকে গিয়েছে। বড় ঢাউস বারান্দা বদলে হয়ে গিয়েছে এখন শোয়ার ঘর আর ছোট্ট ব্যালকনিতে। চিলে কোঠার ছাদের ঘর হারিয়ে গিয়েছে। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ সেই হারিয়ে জাওয়ার দলে এখন খড়খড়ি আটা সেই ঝিলিমিলি জানালারা। ৭০ কিংবা ৮০'র দশক তখনও এই জানলার কদর ছিল ভালোই। দরজা যেমন তৈরি হত বিশাল, ঠিক তেমনি তাঁর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তৈরি হত বিরাট জানালা। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ উপর নিচে লাগানো থাকতো পাত। মাঝ বরাবর ডাণ্ডি। জানলা বন্ধ থাকলেও ডাণ্ডি উঠিয়ে দেখে নেওয়া যেত বাইরের পরিবেশ। কলকাতার গরম থেকে বাঁচতে মূলত জানলা তৈরির এই পদ্ধতি অবলম্বন করা হত। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ অনেকটা এয়ার কন্ডিশনের কাজ করতো। যাতে বছরের পুরটা সময় ঘরতে আলো বাতাস আসতে পারে। তখন কোনও কৃত্রিম বাতাসের প্রয়োজন হত না। খোলামেলা পরিবেশেই মানুষ যাতে ভালোভাবে শ্বাস নিতে পারে। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ এই খড়খড়ি দেওয়া জানলাকে ইংরেজিতে হত 'লাউভারে উইন্ডো' অথবা 'জালাওসি উইন্ডো'। বাংলায় অবশ্য জানলা শব্দটি এসেছে পর্তুগিজ জানেলা থেকে। যদিও ব্রিটিশদের হাত ধরে জানালা এই দেশে এসেছিল। এরপর নানা ঢঙের জানালা বাড়িতে বসতে শুরু করলো। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ কলকাতার রোমান্টিকতার সঙ্গে জানালার জুড়িমেলা ভাড়। বড্ড আদরের ছিল ঝিলিমিলি জানালা। এখন যে কয়েকটা পুরনো বাড়ি রয়ে গিয়েছে তার জানালারা এখন ফুরিয়ে যাওয়ার দিন গুনছে। কালের নিয়মে একদিন হয়তো এই জানালাগুলোই হারিয়ে যাবে। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ