New Update
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2020/03/indira-gandhi-statue-in-front-birla-planetarium-Express-Photo-Shashi-Ghosh-1.jpg)
রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ে রানী রাসমণির মূর্তি। ছবি: শশী ঘোষ
ময়দান এলাকায় খুব সহজেই চোখে পড়ে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের মূর্তি। অগ্নিযুগের এই বিপ্লবী কন্যাকে বলা হয় স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলার প্রথম মহিলা শহীদ। জন্ম ১৯১১ সালে, ১৯৩২ সালে পাঞ্জাবি পুরুষের ছদ্মবেশে মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের সময় ব্রিটিশদের হাতে গ্রেফতারি এড়াতে পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে মৃত্যু। ছবি: শশী ঘোষ ২৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৩২, চট্টগ্রামের পাহাড়তলি ইউরোপিয়ান ক্লাবের ওপর হানা দেয় প্রীতিলতার নেতৃত্বে ১৫ জন বিপ্লবীর একটি দল। শুরু হয় গুলি বিনিময়, জখম হন প্রীতিলতাও। আহত অবস্থায় তাঁকে ধরে ফেলে ব্রিটিশ পুলিশ, কিন্তু তাদের চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে বিষ খেয়ে প্রাণত্যাগ করেন প্রীতিলতা। ছবি: শশী ঘোষ এই মূর্তি সকলের চোখে পড়ার মতো নয়। তাঁরই নামাঙ্কিত কলেজের ভেতরে স্থাপিত রয়েছে বাসন্তী দেবীর আবক্ষ মূর্তি। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের স্ত্রী বাসন্তী দেবী নিজেও ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে সক্রিয় অংশীদার, যাঁকে মাতৃসমা জ্ঞান করতেন নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু। ছবি: শশী ঘোষ মূর্তির অদূরেই দেওয়ালে বাসন্তী দেবীর ছবি। ১৮৮০ সালে আসামে জন্ম তাঁর, দেশবন্ধুর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ১৭ বছর বয়সে। আইন অমান্য এবং খিলাফত আন্দোলনে যোগদান ছাড়াও ১৯২০ সালে কংগ্রেসের নাগপুর অধিবেশনেও যোগ দেন তিনি। চিত্তরঞ্জন দাশের গ্রেফতারির পর স্বামীর নানাবিধ কর্মকাণ্ড নিজের হাতে তুলে নেন বাসন্তী দেবী। তাঁর মৃত্যুর এক বছর আগে, ১৯৭৩ সালে তাঁকে পদ্মবিভূষণ উপাধিতে সম্মানিত করে ভারত সরকার। ছবি: শশী ঘোষ পার্ক স্ট্রিট এবং ক্যামাক স্ট্রিটের সংযোগস্থলে অ্যালেন পার্কের বাইরেই অবস্থিত মাদার টেরিজার আবক্ষ মূর্তি। অ্যালবেনিয়ার এই ক্যাথলিক সন্ন্যাসিনী ও সমাজসেবিকা ভারতে আসেন ১৯২৯ সালে। আর জন্মস্থানে ফেরেন নি কোনোদিন। কলকাতা তাঁকে ডেকে নিয়েছিল চিরকালের ডাকে। ছবি: শশী ঘোষ ১৯৫০ সালে মাদার টেরিজা পত্তন করেন তাঁর সংগঠন মিশনারিজ অফ চ্যারিটির, যার কর্মভার আজীবন বহন করেন তিনি। ১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় 'নির্মল হৃদয়', ১৯৫৫ সালে 'নির্মলা শিশু ভবন'। ১৯৯৭ সালে প্রয়াত হন কলকাতার 'সেইন্ট অফ দ্য গাটারস', এবং ২০১৬ সালে ভ্যাটিকান তাঁকে 'সেইন্ট টেরিজা অফ ক্যালকাটা' উপাধি প্রদান করে। ছবি: শশী ঘোষ অবাক লাগলেও একথা সত্যি, ১৯৭৭ সালের আগে কলকাতায় কোনও মহিলার মূর্তি ছিল না। সেই শূন্যস্থান পূরণ করেন মাতঙ্গিনী হাজরা, তাঁর মূর্তিই হয় শহরে প্রতিষ্ঠিত প্রথম কোনও মহিলার মূর্তি। মেদিনীপুরের এই শহীদ ১৯৪২ সালে ৭২ বছর বয়সে তমলুক থানার সামনে ব্রিটিশ পুলিশের গুলিতে হাসিমুখে মৃত্যুবরণ করেন। ছবি: শশী ঘোষ ১৮ বছর বয়সে স্বামীকে হারান মাতঙ্গিনী, এবং ১৯০৫ সাল থেকে গান্ধীবাদে অনুপ্রাণিত হয়ে যোগ দেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে। ১৯৩২ সালে আইন অমান্য আন্দোলনে যোগ দিয়ে লবণ আইন ভঙ্গের অপরাধে গ্রেফতার হন তিনি। ১৯৪২ সালে 'কুইট ইন্ডিয়া' আন্দোলনের অন্তর্গত কর্মসূচি ছিল মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন থানার দখল নেওয়ার পরিকল্পনা। সেইমতো তমলুক থানা অভিমুখে প্রায় ৬.০০০ মানুষের মিছিলের নেতৃত্ব দেন মাতঙ্গিনী। মিছিল আটকাতে গুলি চালায় পুলিশ, মাতঙ্গিনীর গায়ে লাগে তিনটি গুলি। তবু এগিয়ে চলেন তিনি, যতক্ষণ না মৃত্যু গ্রাস করছে তাঁকে। থানার সামনে যখন পড়ে আছে তাঁর নিথর দেহ, হাতে তখনও ধরা জাতীয় পতাকা। ছবি: শশী ঘোষ ভারতের প্রথম (এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র) মহিলা প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মূর্তি অবস্থিত ময়দান এলাকায়, বিড়লা তারামণ্ডলের বিপরীতে। জওহরলাল নেহরুর কন্যা ইন্দিরা তাঁর পিতার পর ভারতের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী প্রধানমন্ত্রীও বটে। ১৯১৭ সালে জন্ম ইন্দিরার, মৃত্যু ১৯৮৪ সালে, তাঁরই দুই দেহরক্ষীর গুলিতে। নিজের রাজনৈতিক জীবনে প্রশংসা এবং সমালোচনা প্রায় সমপরিমাণে লাভ করেন তিনি, এবং তাঁর উত্তরাধিকার হিসেবে আরও অনেক কিছুর সঙ্গে রয়ে যায় দেশে প্রথম জরুরি অবস্থার প্রচলন। ছবি: শশী ঘোষ অধিকাংশ বাঙালিই রানী রাসমণিকে জানেন দক্ষিনেশ্বর মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা, এবং রামকৃষ্ণ পরমহংসের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে। তবে একথা হয়তো সকলে জানেন না যে, ৫৮ বছর বয়সে প্রয়াত স্বামীর জমিদারি সামলানোর ভার নিজের হাতে তুলে নেন তিনি, এবং তাঁর রক্ষণাবেক্ষণে দ্রুত বেড়ে ওঠে সেই জমিদারি। এছাড়াও আছে ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে তাঁর একাধিক সংঘাতের কাহিনি, যা তাঁর জীবদ্দশাতেই পরিণত হয় লোকগাথায়। দৃঢ়স্বভাব, তেজস্বিনী এই নারী বাঙালির চিরকালীন অনুপ্রেরণা। ছবি: শশী ঘোষ রাসবিহারী আভিনিউয়ে রানী রাসমণির মূর্তির চারপাশে রয়েছে একটি ছোটখাটো উদ্যান। তাঁর জীবনকালে (১৭৯৩-১৮৬১) অজস্র সমাজসেবামূলক কাজে অর্থ যোগান তিনি, এবং তাঁরই চেষ্টায় কলকাতায় তৈরি হয় বাবুঘাট, আহিরিটোলা ঘাট, এবং নিমতলা ঘাট। ছবি: শশী ঘোষ