-
কলকাতা এবং ময়দান এ দুটো একে অপরের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সারা দেশে কলকাতার ময়দান সবার কাছেই বেশ পরিচিত। সকাল থেকে বিকেল ভিড় করে কত মানুষ। এই ময়দানেই চলে ফুটবল ক্রিকেট। মে জুন থেকে চলে ফুটবলের মরশুম। এরপর শুরু হয় ক্রিকেট। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
কলকাতার ময়দানের ছবি দেখতেই অভ্যস্ত ছিল সকলে। গত বছর থেকে ময়দানের এই চেনা ছবি যেন বদলে গিয়েছে। খাঁ খাঁ করছে পুরো মাঠ। খেলা বন্ধ হয়েছে দু’বছর হয়ে গেল। এখন ইডেনের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় থমকে যেতে হয়। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
নিস্তব্ধ দুপুর, কেউ কোথাও নেই। গেটের সামনে বসে থাকা সিকিউরিটির লোকজন ঘুম চোখে পেপার পড়ছে। কারোর হাতে মোবাইল, তারা সেদিকে তাকিয়ে। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
কলকাতার অফিস যাত্রী এবং পথ চলতি মানুষের খাবারের অস্থায়ী ঠিকানা যেমন ডেকার্স লেন। ঠিক একইভাবে ক্রীড়াপ্রেমীদের ঠিকানা ময়দান ক্যান্টিন। দর্শক হোক কিংবা খেলোয়াড় ময়দানের চিকেন স্ট্যু ক্রীড়া-প্রেমীদের সবার প্রথম পছন্দ। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
মোহনবাগান, সিটি ক্লাব, কবাডি অ্যাসোসিয়েশন, মহমেডান ক্লাব, তালতলা ইনস্টিটিউট, সেন্ট্রাল এক্সারসাইজ়, CAB-র ক্যান্টিনে ভোর থেকেই শুরু হয়ে যায় প্রস্তুতি। শুধু অনুশীলন করতে আসা ফুটবলার কিংবা খেলা দেখতে আসা ক্লাবের সমর্থকরাই নন ক্যান্টিনে আড্ডার আসর বসাতেন বিভিন্ন ক্লাবকর্তারাও। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
এই করোনা আবহে তাই চরম সঙ্কটে ময়দানের ক্যান্টিন মালিকরা। ক্যান্টিন না চলায় বেশীরভাগ কর্মচারীরাও ফিরে গিয়েছেন নিজেদের বাড়িতে। রোজগার প্রায় নেই বললেই চলে। মোহনবাগান, সিটি ক্লাব এবং রাজ্য কবাডি তাঁবুর ক্যান্টিন চালান পলাশ মুখোপাধ্যায়। তিনি জানান,’আমার প্রত্যেক ক্যান্টিনে দিনে ২০ হাজার টাকার বেশি খাবার বিক্রি হতো আর কলকাতা লিগ বা আই পি এল থাকলে আরও বেশি। এখন ২০০ টাকার জিনিস বিক্রি হতে ঘাম বেরিয়ে যাচ্ছে। অর্ধেক কর্মীদের দেশে পাঠিয়ে দিয়েছি। যা পারছি সাহায্য করছি, কিন্তু এভাবে কতদিন। যারা বাদাম, চা বেচতো তারা রাস্তায় নেমেছে ময়দান ছেড়ে জিনিস বিক্রি করতে। ওরা আর ফিরে আসবে কি না সন্দেহ ! অনেক ক্যান্টিন কর্মীও শুনছি পেশা বদল করেছে। এভাবে আর কতদিন চলবে জানা নেই।’ এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
গত বছর লকডাউনের পর আবার সব স্বাভাবিক হয়ে আসছিল। এই বছর নতুন করে লকডাউনে সব শেষ হয়ে গিয়েছে। এইসময়ে প্রতিবছর কত খেলা হয়, লিগের খেলা। গত দু’বছরে সবটা বদলে গেল! বলে জানান তালতলা ক্যান্টিনের আরেক কর্মচারী। লকডাউন যেন নিঃস্ব করে দিয়েছে কলকাতা ময়দানকে। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
ভরা মরশুমে ময়দানের সব ক্যান্টিন যখন রমরমিয়ে চলত, সেখানে কাক-পক্ষীর দেখা নেই। ময়দানের দখল নিয়েছে কিছু ভবঘুরে। ময়দান মানেই ক্রীড়াপ্রেমীদের নানা ক্লাবের ক্যান্টিনের হরেকরকম খাবার। একটা সময় মহামেডান স্পোর্টিংয়ের গজা, দুধ চা। এরিয়ান ক্লাবের ডিমের ডেভিল, হিঙের চপ, তালতলা ক্যান্টিনের ঘুগনি কিমা, পাউরুটি টোস্ট বিখ্যাত ছিল। কবাডি টেন্টের লাল চা, ফিস ফ্রাই, এগুলি বৈকালিক আড্ডার রসনাতৃপ্তির অভিনব উপকরণ ছিল। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
এসব হারিয়ে যাওয়া সময়ের খাতায় নাম লিখিয়ে ফেলেছে। দু একজন কর্মচারী নিয়ে ক্যান্টিন কিছু থাকলেও দেখা নেই খদ্দেরের। কলকাতার ময়দানের সেরা ক্যান্টিনের মধ্যে অন্যতম সেন্ট্রাল এক্সাইজ। এই ক্যান্টিনের চিকেন ও ভেজিটেবল স্ট্যু ও সাদা স্লাইস পাউরুটি হলে আর কোনও কথা হবে না। সঙ্গে যদি ফিস ফ্রাই কিংবা ভেজিটেবল চপ থাকে তবে সোনায় সোহাগা। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
ক্যান্টিনের কর্ণধার মুন্না শর্মা। তিনি আবার ইস্টবেঙ্গলের মেম্বারও। লাল হলুদের লিগের খেলা থাকলে মুন্নাকে আর ক্যান্টিনে পাওয়া যাবে না। মুন্নার বক্তব্য, ‘কিছু করার নেই। অনেক কর্মীদের দেশে পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছি। চালাব কী করে? মাইনে দেব কিসের ভিত্তিতে? বছর তিনেক আগেও লিগের ম্যাচ চলাকালীন দিনে ১০ হাজার টাকার মতো লাভ হতো একটা দিনেই। মাঠের বাকি ছয়-সাতটি ক্লাব আমাদের ক্যান্টিন থেকে খাবার যেত। সব বন্ধ, সব শেষ হয়ে গেল করোনায়!’। কলকাতার ময়দান যেন এখন নিষঙ্গ হয়ে পড়েছে। আর তার পাশে ক্যান্টিনগুলো সুদিন ফেরার দিন গুনছে। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
