অবসরের দোরগোড়ায় মহেন্দ্র সিং ধোনি। তিনি নিজে সরকারিভাবে অবসর ঘোষণা না করলেও, পরিস্থিতির বিচারে ধোনির পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা শুধু কঠিনই নয়, অসম্ভব! মঙ্গলবারই ধোনি ৩৯ বছরে পা দিলেন। মহাতারকার প্রস্থানের পর কী কী মিস করবে ক্রিকেট বিশ্ব, রইল দশ বিষয়-
ধোনি
মিলিটারি গ্লাভস- নিজে একজন সাম্মানিক কর্নেল। সেনা প্রেম বোঝাতে মাঠেই মিলিটারি ধাঁচের ক্যামোফ্লেজ গ্লাভস নিয়ে উইকেটের পিছনে দাঁড়াতেন ধোনি। বিশ্বকাপের মঞ্চে তো তুমুল বিতর্কই শুরু হয়ে গিয়েছিল। ধোনির প্রস্থান মানে আর হয়ত দেখা যাবে না সেই বিখ্যাত মিলিটারি গ্লাভস।
স্ট্যাম্প-মাইক কথপকথন- বিশ্ব ক্রিকেটে একসঙ্গে উইকেট কিপার ও ক্যাপ্টেন ভীষনই দুর্লভ। উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়েই কীভাবে বোলারদের সঙ্গে কথা চালাতেন, তা অন্যদের কাছে রীতিমত শিক্ষণীয় বিষয়। "জাগ যা জাদেজা", "এক লাইন পাকড় কে ডাল", "ফাইভ উইকেটস চাহিয়ে তো থোড়া মেহনত করনা পডেগা ওঝা।"- এমন হয়ত এই শোনা যাবে না।
স্টাম্পিং- ব্যাটম্যানের পা সীমানা থেকে একটু উঠেছে ক্ষণিকের জন্য। আর তাতেই বিদ্যুৎ গতিতে স্টাম্পিং। এত দ্রুত স্টাম্পিং বিশ্ব ক্রিকেটে এতদিন দেখা যায়নি। চোখের পলক ফেলার আগেই কত যে এমন স্টাম্পিং করেছেন মাহি। তার ইয়ত্তা নেই। এই ঘটনা কি আর দেখা যাবে?
৮-১ ফিল্ডিং- ব্যাটসম্যানের উপর মানসিক চাপ বাড়াতে ওস্তাদ ছিলেন ধোনি। এর একটা দিক- হঠাৎই সার্কেলের মধ্যে ৮ জনকে নিয়ে আসতেন। বাইরে থাকতেন ১ জন। বিভ্রান্ত হয়ে ব্যাটসম্যান সিদ্ধান্ত হীনতায় ভুগতেন। আউটও হতেন। ধোনির অজস্র উদ্ভাবনী শক্তির অন্যতম দিক ছিল এটা।
অলরাউন্ডার খোঁজা- অনেক সময়ই তিনি পরোক্ষে বলেছেন, তিনি টেস্ট স্কোয়াডে অলরাউন্ডার পাননি। এমন একজন যে একাই ব্যাট অথবা বল হাতে খেলা ঘুরিয়ে দিতে পারবেন! ধোনি পাননি। অনেক সময়ই তাই বাধ্য হয়ে তিনি গ্লাভস ছুড়ে চলে যেতেন বল করতে। বোলার ধোনিকে মিস করবে ক্রিকেট দুনিয়া।
নো সাইট থ্রো- না দেখেই পায়ের মধ্য দিয়ে ছুড়ে স্ট্যাম্প ভেঙে রান আউট করা। নতুন উঠতি উইকেটকিপাররা এখন অনুশীলনে অবশ্যই রাখে নো সাইট থ্রো। উইকেটকিপিংয়ের সংজ্ঞাটাই বদলে ফেলেছিলেন ধোনি।
হেলিকপ্টার শট- বিশ্বক্রিকেট আগেও দেখেছে উদ্ভাবনী সমস্ত শট। কিন্তু ধোনির হেলিকপ্টার সবার থেকে আলাদা। এগিয়ে এসে ডিপ মিড অন দিয়ে জোরালো শটে ছক্কা। কব্জির টুইস্ট এ এই শট যেন উড়ে যায় পুরোপুরি উড়োজাহাজের মত! তাই এই হেলিকপ্টার।
ফিনিশার- কঠিন সময়। রিকোয়ার্ড রেট অনেক বেশি। ভারতের ব্যাটিং অর্ডারে বিপর্যয়। এমন অবস্থায় ধোনি জাতীয় দলের হয়ে যে কত ম্যাচ ফিনিশ করেছেন, তাঁর কোনো ইয়ত্তাই নেই। শেষ ওভার পর্যন্ত ম্যাচ টেনে নিয়ে গিয়ে শেষ বলে ফিনিশ! এরকম আর কোনো দিন দেখা যাবে না।
ধোনি মানেই সবার থেকে আলাদা। সবার থেকে স্বতন্ত্র। বরফ শীতল ক্রিকের মস্তিস্ক, ব্যাটিংয়ে ফিনিশার, ক্যাপ্টেন হিসাবেও ছক ভাঙা। ক্রিকেট বিশ্ব আসলে মহাতারকার বাইশগজে উপস্থিতিতেই মিস করতে চলেছে।