
আইপিএলে অন্যতম সফলতম দল কলকাতা নাইট রাইডার্স। তবে অন্যতম বিতর্কিতও বটে! ক্রিকেট বহির্ভূত একাধিক কারণে শিরোনামে উঠে এসেছে কেকেআর।

শাহরুখের ওয়াংখেড়ে নির্বাসন: আইপিএল ২০১২-এর ঘটনা। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ও কেকেআরের ম্যাচের পরে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করার সময়ে নাইট কর্তা শাহরুখ খান বচসায় জড়িয়ে পড়েছিলেন নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে।

এমসিএ কর্তারা অভিযোগ করেছিলেন যে শাহরুখ খান মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। সেই অবস্থাতেই নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে মৌখিক বাদানুবাদে জড়ান। যদিও শাহরুখ পরে এই অভিযোগ অস্বীকার করেন।

শাহরুখ সেই সময় বলেছিলেন, শিশুদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছিলেন নিরাপত্তাকর্মী। তারই প্রতিবাদ করতে গিয়েছিলেন তিনি।

এরপরেই ৫ বছরের জন্য ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে শাহরুখের প্রবেশের উপরে নির্বাসন জারি করা হয়। ঘরোয়া বা আন্তর্জাতিক- কোনও ম্যাচেই ওয়াংখেড়েতে ঢুকতে পারবেন না কিং খান, জানানো হয়েছিল।

যদিও নির্বাসনের মেয়াদ শেষ হওয়ার দু-বছর আগেই ২০১৫ সালে এই শাস্তি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

ফেমা গাইডলাইন লঙ্ঘন: আইপিএলের দশম সংস্করণ শুরুর ঠিক আগেই। কেকেআরের মালিক- শাহরুখ খান, স্ত্রী গৌরি খান, এবং জুহি চাওলা-কে শোকজ নোটিশ ধরানো হয়েছিল ফেমা গাইডলইন লঙ্ঘণ করার জন্য।

ইডি-র দাবি ছিল, আইপিএলের কেকেআর ফ্র্যাঞ্চাইজির সমস্ত শেয়ার প্রথমে শাহরুখ কিনেছিলেন স্ত্রী গৌরি খানের নামে। সাফল্যের পরে চল্লিশ লক্ষ নতুন শেয়ার দেওয়া হয় জুহি চাওলাকে। প্রতি শেয়ারের দাম ধার্য করা হয়েছিল ১০ টাকা। যদিও সেই শেয়ারের প্রকৃত ভ্যালু ছিল অনেক বেশি (৯০ টাকা প্রতি শেয়ার)।

জুহি চাওলা সেই শেয়ার আবার বিক্রি করেন মরিশাসের এম/এস টিএসআইআইএল-কে। এরফলে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ে ক্ষতি হয়েছিল ৭৩.৬ কোটি টাকা।

আইপিএল থেকে নাম প্রত্যাহারের হুমকি: অষ্টম সংস্করণের আইপিএল শুরুর আগের ঘটনা। তারকা স্পিনার সুনীল নারিনে বিসিসিআই অনঢ় স্ট্যান্স নেওয়ার কারণে আইপিএল থেকে সরাসরি নাম প্রত্যাহার করার হুমকি দিয়েছিল কেকেআর।

২০১৪ সালে অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের কারণে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল সুনীল নারিনেকে। এরপরে বোলিং অ্য়াকশন বদলে আইসিসি-র ল্যাবে পরীক্ষা দিয়ে খেলার ছাড়পত্রও আদায় করে নিয়েছিল তারকা স্পিনার।

যদিও বিসিসিআই সেই অ্যাকশনের শুদ্ধিকরণ মানতে পারেনি। চেন্নাইয়ে নিজস্ব ল্যাবে নারিনের বোলিং পরীক্ষা করার প্রস্তাব দিয়েছিল বোর্ড।

এরপরেই বিসিসিআইকে আদালতে টেনে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয় কেকেআর। সরাসরি বলা হয়েছিল নারিনেকে খেলতে না দিলে টুর্নামেন্ট থেকেই নাম তুলে দেওয়া হবে।

লাক্স কোজি-র সঙ্গে স্পনসরশিপ: ২০১০ সালে অন্তর্বাস প্রস্তুতকারক সংস্থা লাক্স কোজির সঙ্গে স্পনসরশিপ চুক্তি বাতিল করতে বাধ্য হয় কেকেআর। প্রচারমাধ্যম সূত্রের খবর, এই ব্র্যান্ডের মালিকের নাম ২০০৭ সালে একটি খুনের ঘটনায় জড়িয়ে যায়।


রোজভ্যালি কাণ্ড: চলতি ফেব্রুয়ারিতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের পক্ষ থেকে কেকেআরের ৭০ কোটি টাকার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, চিটফান্ড সংস্থার থেকে হিসেব বহির্ভূতভাবে টাকা নিয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স।

কেকেআরের তরফে এরপরে জানানো হয়, চিটফান্ড দুর্নীতির সঙ্গে কেকেআর কোনওভাবে জড়িত নয়। কেবলমাত্র স্পনসর হওয়া ছাড়া কোনও আর্থিক লেনদেনও হয়নি কেকেআরের সঙ্গে। ওই দু-বছরে রোজভ্যালি কেবল কেকেআরের জার্সির স্পনসর ছিল।

নতুন বছরে কাপ জয়ের লক্ষ্যে নামবে কেকেআর। তার আগেই নয়া বিতর্ক তাড়া করছে ফ্র্যাঞ্চাইজিকে।