Vishnu idol recover: অজয় নদ থেকে উদ্ধার হল কালো পাথরের উপর খোদাই করা বিষ্ণূমূর্তি। শনিবার পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের রসুই গ্রামের এক বাসিন্দা অজয় নদের তটে প্রাচীণ বিষ্ণু মূর্তিটি দেখতে পান । তিনি মূর্তিটি বাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে পুজার্চ্চনা শুরু করেন। সেই খবর কেতুগ্রাম থানায় পৌছাতেই পুলিশ নড়েচড়ে বসে।
পুলিশ ওই ব্যক্তির বাড়ি থেকে মূর্তিটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে কেতুগ্রাম থানার আই সি পিন্টু মুখার্জী বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজিয়াম ও আর্ট গ্যালারির প্রতিনিধি শ্যামসুন্দর বেরার হাতে বিষ্ণু মূর্তিটি তুলে দেন। ত্রিবিক্রম মূর্তটি এখন থেকে সেখানেই সংরক্ষিত রাখা থাকবে।
মূর্তিটি প্রসঙ্গে শ্যামসুন্দর বেরা জানান,“মূর্তিটির ভাষ্কর্য ও শিল্পকলা দেখে মনে হচ্ছে মূর্তিটি আনুমানিক ৯০০ বছর আগে তৈরি। সম্ভবত সেন যুগে এই মূর্তি তৈরি হয়েছিল। মূর্তিতে থাকা শিল্পকলা গুলি সেই সময়কালের ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করছে। মূর্তিটি বিষ্ণুর ত্রিবিক্রম মূর্তি।"
শ্যামসুন্দর বাবু আরও জানান," মূর্তিটি দ্বাদশ শতকে সেন আমলের। ২০ ইঞ্চি উচ্চ এবং ৯ ইঞ্চি চওড়া। মোটামুটি অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে মূর্তিটি । বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজিয়াম ও আর্ট গ্যালারিতে মূর্তিটি সংরক্ষিত থাকবে"।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,বর্তমান সময়ে অজয় নদে জল কম। স্থানীয় রসুই গ্রামের এক বাসিন্দা অজয়নদের চরের কাছে গরু চড়াতে গিয়ে বালিতে ঢাকা কিছু লক্ষ্য করেন। ওই বালি তিনি হাতে করে সরাতেই তিনি ভগবান বিষ্ণুর মূর্তিটি দেখতে পান । সঙ্গে সঙ্গে তিনি মূর্তিটি উদ্ধার করে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান।
অজয় নদ থেকে এই প্রথম প্রাচীণ বিষ্ণু মূর্তি উদ্ধার হল এমনটা নয়। বিগত কয়েক বছর যাবৎ বিভিন্ন সময়ে প্রাচীন ও মূল্যেবান মূর্তি অজয় নদ থেকে পাওয়া গেছে। এর আগে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে কেতুগ্রাম থানার নারেঙ্গা গ্রামের কাছে অজয় নদের চর থেকে এমনই একটি প্রাচীন ত্রিবিক্রম বিষ্ণুমূর্তি উদ্ধার হয়েছিল। তার আগে মঙ্গলকোটের খেঁড়ুয়া গ্রাম থেকে উদ্ধার হয়েছিল একটি প্রাচীন বিষ্ণুমূর্তি।।
এ ছাড়াও চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি জেলার মেমারি থানায় সাতগেছিয়ার ছোট দুলেপাড়ার পদ্মপুকুর সংস্কারের সময় একটি প্রাচীন বিষ্ণু মূর্তি উদ্ধার হয়। ৩ ফুট ৩ ইঞ্চি উচ্চতা এবং ১.৫ ফুট প্রস্থের কালো পাথরে নির্মিত ওই বিষ্ণু মূর্তিটি আনুমানিক ১০০০ বছর আগে ,পাল যুগের শেষ এবং সেন আমল শুরুর পর্বের বলেই শ্যামসুন্দর বেরা জানিয়েছিলেন। এই বিষ্ণু মূর্তিটিও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মউজিয়ামে সংরক্ষিত রাখা আছে।