
বাংলার লোক সংস্কৃতির অন্যতম প্রাচীন অংশ হল বোলান গান। আধুনিকতার যুগে পুরনো সংস্কৃতিতে ধুলো জমতে জমতে এখন অবলুপ্তির পথে। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ

আগের মতো গ্রামে গ্রামে বোলান বা গাজন উৎসব দেখা যায় না। তা সত্ত্বেও বীরভূম, বাঁকুড়া, নদীয়া, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, পুরুলিয়ার মতো জায়গায় এখনও চৈত্রের শেষে দেখা মেলে কিছু বোলান শিল্পীদের। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ

গাজনের দিন এলেই ফিরে ফিরে আসেন এই বোলান শিল্পীরা। নাচ-গানে জমিয়ে দেন উৎসব। চৈত্রের শেষে বৈশাখের আগে বাংলায় শুরু হয়ে যায় নানান পরব। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ

তার মধ্যে অন্যতম আকর্ষণ গাজন। গাজন প্রাচীন বাংলার এক লোকাচার যেখানে নাচ-গান ও সাজ পোশাকের মাধ্যমে বিভিন্ন পৌরাণিক দেবদেবীর কথা স্মরণ করা হয়। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ

মনসা ঠাকুরের গাজন প্রচলিত থাকলেও চৈত্র সংক্রান্তির গাজন মূলত শিবকে ঘিরেই। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ

চৈত্রের শুরুর থেকেই চলে প্রস্তুতি। শিবকে নিয়ে বাধা হয় নানান ধরণের গান। গাজনের নানা সাজে সেই গান পরিবেশন করাই হল বোলান। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ

চৈত্র মাসের শেষে,গাজনের দিন তিনেক আগে এখনও বোলান গানের আসর বসে। কাটোয়া মহকুমার কেতুগ্রাম -২ ব্লকের উদ্ধারণপুর, গঙ্গাটিকুরি -সহ লাগোয়া গ্রামগুলিতে গাজনের ধুম থাকে চোখে পড়ার মতো। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ

তবে সংখ্যাটা দিন দিন কমে আসছে। গ্রামের পিছিয়ে পড়া প্রান্তীক মানুষই মূলত গাজনকে কেন্দ্র করে শিবের উপাসনা করেন। তাঁদের উপাসনার অন্যতম মাধ্যম বোলান গান। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ

শিবকে খুশি করার জন্যই গান বেঁধে নাচের মধ্যে দিয়ে তা পরিবেশিত হয়। দু’তিন লাইনের কয়েকটি কলি নিয়ে তৈরি হয় একটি ছোট পালা। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ

বোলানের দল সেই পালা গ্রামে গ্রামে ঘুরে পরিবেশিত করে। পালার প্রথমে থাকে শিবের বন্দনা ও শেষে পালাকর্তার নাম। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ

বোলান গান মূলত চার প্রকার, দাঁড় বোলান, পালা বোলান, সখী বোলান আর শ্মশান বোলান। এর মধ্যে শ্মশান বোলানের চরিত্র উত্তেজক। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ

শিব শ্মশানবাসী বলে ভক্তের দল মনে করে। শ্মশান বোলানে তুলে ধরা হয় শ্মশান জীবনকে। বিচিত্র সং সেজে মাথার খুলি, অস্ত্র নিয়ে চলে নাচ-গান। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ

শিবকে বলা হয় শ্মশানবাসী। তাই তাঁর ভক্তরাও শ্মশান জীবনকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেন বোলানের মধ্যে দিয়ে। রাক্ষস বা কঙ্কালের বেশে চলে নাচ -গান। কেউ কেউ শিবও সাজেন। মরার খুলি থেকে তলোয়ার নিয়ে চলে উদ্দাম নৃত্য। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ

শ্মশান বোলানে দেখানো হয় , শকুন কী ভাবে শ্মশানে শবদেহ ছিঁড়ে খায়। কখনও মরার খুলি নিয়ে বন্যপশুদের টানাটানিও দেখানো হয়। তবে অনেক রীতি মেনে বোলান পালন করতে হয়। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ

সারা রাত ধরে গ্রামের পর গ্রাম ঘুরে পরের দিন অর্থাৎ গাজনের দিন সকালে ফিরে আসেন। বাচ্চা থেকে বুড়ো সকলেই থাকেন বোলান দলে এমনটাই রীতি রেওয়াজ হয়ে আসছে বছরের পর বছর। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ

যদিও, আগের মতন আগ্রহ দেখায় না বর্তমান প্রজন্ম। তাই বর্তমানে কমছে শ্মশান বোলানের দলের সংখ্যা। যার ফলে ক্রমে হারিয়ে যাচ্ছে বোলান গান। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ

তুর্কি আক্রমণের পর থেকেই বাংলার লোকসংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে বোলান গান। ইতিহাসবিদদের কথায়, বাংলায় তুর্কি আক্রমণের পর থেকেই অর্থাৎ বলা যেতে পারে দ্বাদশ থেকে চতুর্দশ শতকের মধ্যে বোলান গানের প্রসার ঘটে। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ

বাংলার লোকসংস্কৃতির গবেষকদের একাংশের মতে, তুর্কি তথা সুলতালি আগ্রাসনের হাত থেকে বাংলা লোক সংস্কৃতি বাঁচিয়ে রাখতে সাহায্য করেছিল এই বোলান গান। গত দু’বছর করোনা মহামারীর জন্যে গাজনের দিনে সেভাবে বোলান শিল্পীদের দেখা মেলেনি। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ

প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বোলান। এবছর থেকে ফের দেখা মিলেছে শিল্পীদের। বছরের শেষ পাঁচটি দিন পুরনো উদ্যামে এইবার ফের গ্রাম বাংলার মানুষ গাজনের দিনে বোলান গানে মেতেছে। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ