-
বারাসত পেরিয়ে দত্তপুকুর। দত্তপুরের ছোট্ট গ্রাম চালতাবেড়িয়া। যশোর রোড ধরে যাওয়ার সময়ই রাস্তার দু’পাশে নজর পড়বে বহু ছোট ছোট দোকান। যার সামনে সারি দিয়ে সাজানো মাটির বহু জিনিস। প্রদীপ, মূর্তি, মাটির জলের বোতল থেকে শুরু করে নানা ঘর সাজানোর জিনিস। ( এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ )
-
দোকানের আশেপাশেই রয়েছে একাধিক পাকা বাড়ি। সেখানে একসঙ্গে বসে কাজ করছেন শ্রমিকরা। কেউ বানান প্রদীপ, কেউ ছাঁচে ফেলে তৈরি করেন নানা দেবদেবীর মূর্তি। দত্তপুকুরের চালতাবেড়িয়া প্রদীপ গ্রাম নামে পরিচিত সকলের কাছে। ( এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ )
-
রং বেরঙের টুনি বাল্ব, এলইডি আলোর চাহিদায় বেশি বর্তমান প্রজন্মের কাছে। কালীপুজো হোক কিংবা দীপাবলি, মণ্ডপ থেকে ঘর, আলোকসজ্জাতে প্রথম পছন্দ সস্তার চিনা আলো। এই চিনা আলোর জন্যেই গত কয়েক বছর মাটির জিনিসের চাহিদা এমনিতে কমে গিয়েছিল। তার সঙ্গে করোনা মহামারীর জন্যে প্রদীপের বাজার একদম খারাপ হয়ে গিয়েছিল। ( এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ )
-
প্রদীপের চাহিদা বাড়েছে। চালতাবেড়িয়ার মাটির সামগ্রী তৈরির কারখানার মালিক শিল্পী স্বপন পাল জানিয়েছেন, তাঁদের তৈরি সামগ্রী রপ্তানি করা হয় বিভিন্ন রাজ্যে। গত দু বছর ব্যবসা একদম ভালো ছিল না কিন্তু এই বছর যা অর্ডার এসেছে তাতে অনেক লাভ হয়েছে। তবে আমজনতার কাছে তাঁর আর্জি, যেন প্রত্যেকে চিনা আলো ছেড়ে প্রদীপ কেনেন। তাতে কমবে খরচও। এতে কুটির শিল্প এবং শিল্পী দুজনেই বাঁচবে। ( এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ )
-
প্রদীপের চাহিদা বাড়েছে। চালতাবেড়িয়ার মাটির সামগ্রী তৈরির কারখানার মালিক শিল্পী স্বপন পাল জানিয়েছেন, তাঁদের তৈরি সামগ্রী রপ্তানি করা হয় বিভিন্ন রাজ্যে। গত দু বছর ব্যবসা একদম ভালো ছিল না কিন্তু এই বছর যা অর্ডার এসেছে তাতে অনেক লাভ হয়েছে। তবে আমজনতার কাছে তাঁর আর্জি, যেন প্রত্যেকে চিনা আলো ছেড়ে প্রদীপ কেনেন। তাতে কমবে খরচও। এতে কুটির শিল্প এবং শিল্পী দুজনেই বাঁচবে। ( এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ )
-
কুটির শিল্পীরা তাদের হাতে তৈরি জিনিসগুলো পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে চুক্তি করে বানান। দু’হাতের দশ আঙুলের জাদুতে হরেক রকমের মাটির প্রদীপ তৈরি করেন পুরুষ থেকে মহিলা সকলে। যশোর রোডের দু’পাশে চোখে পড়বে মাটির বিভিন্ন মূর্তি, পট, বিশেষ করে পিলসুজ আর প্রদীপ তৈরির কাজ চলছে। হিন্দু-মুসলিম মিলে মিশে সকলে এই মাটির জিনিস তৈরি করেন। একটি পিলসুজের উপরে এক সঙ্গে পাঁচ, সাত, নয়, একুশ, একান্নটি প্রদীপও তৈরি হচ্ছে। একান্নটি প্রদীপের নাম, ‘একান্ন দিয়া।’ বাজার ধরতে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে প্রদীপের আদল। থাকছে বিভিন্ন কারুকাজ, সুক্ষ থেকে সুক্ষ কাজ যত্ন সহকারে করেন এখানকার শিল্পীরা। ( এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ )
-
কলকাতা ছাড়াও দিল্লি, মুম্বই, হায়দরাবাদ, গুজরাত, অসম, পাটনা, রাজস্থানে বেশ চাহিদা রয়েছে এখানকার মাটির প্রদীপ এবং লক্ষ্মী-গণেশের। ( এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ )
-
এখানকার টেরাকোটা শিল্পের শিল্প সত্তার পরিচিতি পেয়েছে বিশ্বের দরবারে বাইরের অনেক দেশেই এখানকার মাটির তৈরি জিনিস রফতানি হয়। প্রদীপ তৈরির পাশাপাশি দীপাবলির জন্য গড়া হয় লক্ষ্মী-গণেশ ছোট মূর্তিও। ( এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ )
-
লোকসান পুষিয়ে আশার আলো দেখছেন ব্যবসায়ীরা। যদিও যে হারে তেলের দাম বাড়ছে তাতে বাইরে পণ্য পাঠানো মুশকিল হয়ে পড়েছিল। পরিবহন খরচ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। তার সঙ্গে বেড়েছে মাটির দাম। এক লড়ি মাটির দাম যেখানে ছিল ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা, এখন তা বেড়ে হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ হাজার। এই খরচ পুষিয়ে বাইরে জিনিস পাঠানো মুশকিল। বাইরের রাজ্যে থেকে ভালো অর্ডার আসছে তাই এই বছর পুষিয়ে যাচ্ছে, বলছিলেন শিল্পী মালতি পাল। ( এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ )
-
পশ্চিমবঙ্গ সহ ভারতে বেশীরভাগ রাজ্যে যেসব মাটির প্রদীপ বিক্রি হয় তা বেশিরভাগই আসে দত্তপুকুরের চালতাবেড়িয়া থেকে। এ কথা হয়তো অনেকরই অজানা। উৎসবের মরশুমের আগে খাওয়ার ঘুম উবে গিয়েছে দীপাবলির বাজারে প্রদীপের চাহিদার জোগান দিতে দিতে। ( এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ )
-
করোনার জন্যে নতুন প্রজন্মের কিছু ছেলে মেয়ে কাজ হারিয়ে এই হস্ত শিল্পের পেশায় এসেছিল। এখন ভালোই রোজগার হচ্ছে এই কাজে। বছর ষাটের জয়দেব পাল বলেন, ‘করোনা মহামারী হোক বা বছরের অন্যান্য সময় কুটির শিল্পীদের বাইরে যাওয়ার কোনও প্রয়োজন পড়ে না। ঘরে বসেই কাজ করলেই রোজগার হয়, এতে করোনারও ভয় নেই উপার্জনও ভাল হয়। অনেক যুবক যুবতী এখন এই পেশায় আসছেন। করোনার ভয়াবহ দিন এখন সবাই ভুলতে চাইছে।’ শিল্পীরা সকলে ৩০ টাকা কিংবা ৪০ টাকা ঘণ্টা হিসেবে বেতনে কাজ করেন। কাজের মান অনুযায়ী কারও একদিনের রোজগার চারশো থেকে পাঁচশো টাকা। উত্তর ২৪ পরগণার এই প্রদীপ গ্রাম মহামারীর দুঃস্বপ্ন কাটিয়ে উঠেছে। সকলেই এখন ব্যস্ত কাজে। ( এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ )
