-
করোনা মহামারীর জন্যে একেই সব মানুষেরই নাজেহাল অবস্থা। এর সঙ্গে যোগ দিয়েছে মূল্যবৃদ্ধি। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জ্বালানির দামও। দফায় দফায় বাড়ছে পেট্রোল–ডিজেলের দাম। লাগামছাড়া পেট্রোলের দামে মাথায় হাত মধ্যবিত্তের। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
একটা সময় ছিল যখন পেট্রোল দাম ছিল মাত্র লিটার প্রতি ৯০ পয়সা। বর্তমানে যার দাম সেঞ্চুরি অতিক্রম করেও থামছে না। জ্বালানির এই দাম বৃদ্ধির সাক্ষী হয়ে রয়েছে কলকাতার প্রথম পেট্রোল পাম্প জটাধারী দাঁ এন্ড গ্র্যান্ড সন্স। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
এটি সম্ভবত ভারতের প্রথম কার্বসাইড রিফিউলিং পেট্রোল পাম্প। ১৯২৯ সালে কলকাতার সি আর এভিনিউ ধারে পেট্রোল পাম্পটি চালু হয়েছিল। বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই বৃদ্ধ পেট্রোল পাম্পটির বয়স এখন ৯২ বছর।
-
বর্তমান মালিক কাঞ্চন দাঁ এর কথায়, আমার প্রপিতামহ প্রথম কলকাতায় ফুয়েল স্টেশন এর কনসেপ্ট নিয়ে আসে। তখন আমারাই এই জায়গা থেকে কার্বসাইড পেট্রোল পাম্পটি চালু করি। ১৯২৯ সালে তেলের দাম কত ছিল তা জানা থাকলেও। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
১০ বছর বয়সে যখন বাবার হাত ধরে এখানে আসতাম অর্থাৎ ১৯৬৫ সালে তখন তেলের দাম ছিল মাত্র ৯০পয়সা। আমার মনে আছে কেউ যখন সে সময় এক গ্যালন অথবা ৫ লিটারের তেলের জন্যে ৫টাকা দিত আমরা তাকে ৫০পয়সা ফেরত দিতাম। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
তখন মানুষ গাড়ী চরত শখে। এখন সেটা প্রয়োজন হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে দাঁ পরিবারের জে এম এভিনিউ, গড়িয়াহাট, এবং সি আর এভিনিউ তিনটি জায়গায় পেট্রোল পাম্প রয়েছে। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার বজবজে দাঁ পরিবারের জমিদারি ছিল। এশিয়াটিক পেট্রোলিয়াম নামের সংস্থা বিলেত থেকে সে সময় জাহাজে করে পেট্রোল নিয়ে আসতো। বজবজই ছিল তেল সংরক্ষণের জায়গা। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
১৯২০ সালে কলকাতার ক্যানিং স্ট্রিটে দাঁ তেল বিক্রির পারিবারিক ব্যবসা ছিল। এরপর পেট্রোলিয়াম শিল্পে যখন বিপ্লব এলো তখন ১৯২৯ কলকাতার সি আর এভিনিউতে পেট্রোল পাম্পটি চালু করা হয়। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
সে সময় পেট্রোল পাম্পের সাথে গাড়ির সার্ভিসিং গ্যারাজ থাকতো। তেলের নেওয়ার পাশাপাশি কলকাতার বেশীরভাগ অ্যাম্বাসেডর গাড়ির সার্ভিসিং হত জটাধারী দাঁ এন্ড গ্র্যান্ড সন্সেই। ১৯৭৬ সালে কাঞ্চন দাঁ তার পৈতৃক ব্যবসার হাল ধরেন।
-
সময়ের সঙ্গে অনেক কিছুই তিনি বদলে যেতে দেখেছেন। এই পাম্পটির সব থেকে পুরনো কর্মচারী নিতাই সাহা। ১৯৭৭ সাল থেকে তিনি এখানে কাজ করছেন। তিনি জানিয়েছেন, ৭৭ সালে তেলের দাম ছিল ৪ থেকে ৫ টাকা মাত্র। এরপর ১৯৮৫ সালে ডিজেলর দাম ১.৭৫ টাকা এবং পেট্রোলের দাম ছিল ৫.৭০ টাকা। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
এই ফুয়েল স্টেশনের আরেকজন কর্মচারী নারায়ণ সাহা। তার বক্তব্য পুরনো অনেক গ্রাহকরা এক সময় পুরো ট্যাঙ্ক ভর্তি তেল নিয়ে যেত। এখন তারাই অল্প তেল নিয়ে চলে যান। তেলের দামের এত হেরফের হবে কখনও আসা করতে পারিনি। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
১৯৯৫ সালে ডিজেলের দাম ছিল ৭.২৫টাকা, পেট্রোল ছিল ১৭.৬৮টাকা। ২০১৫ সালে ডিজেলের দাম ছিল ৫১.৫৪ টাকা, পেট্রোল ছিল ৬৫.২৮ টাকা। গত বছর থেকে যেভাবে তেলের দাম বেড়েছে তা অপ্রত্যাশিত। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
একটা সময় ছিল যখন এই পাম্প থেকে সকলে তেল নিতে হাসি মুখে আসতো। এখন যেন সেই হাসি কোথাও উধাও হয়ে গিয়েছে। আগের থেকে রাস্তায় অনেক গাড়ি বেড়েছে। তার সঙ্গে বেড়েছে মানুষের খরচও। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
আগামীতে এর থেকে আরও বেশী তেলের দাম বাড়বে বলে মনে করছেন কাঞ্চন দাঁ। সময়ের সঙ্গে অনেক কিছু বদলেছে। কলকাতা শহরের পুরনো বাড়ি বড় বড় বিল্ডিং হয়েছে। অ্যাম্বাসেডর গাড়ি বদলে এখন সকলের নতুন মডেলের গাড়ি কিনছে। এসব কিছুর সাক্ষী হয়ে দড়িয়ে আছে জটাধারী দাঁ এন্ড গ্র্যান্ড সন্স তেলের পাম্প। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
