New Update
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2020/12/Santa-cover.jpg)
কলকাতা মেতেছে বড় দিনে। রাত পোহালেই ক্রিসমাস। তবে এই বছরের কলকাতা সহ গোটা দেশে সব অনুষ্ঠানরই ছন্দপতন হয়েছে। করোনা মহামারীর জন্যেই সব তালগোল পাকিয়ে একাকার। তবুও নিউ নর্মাল জীবনে নিউ মার্কেট থেকে শপিং মল, ভিক্টোরিয়া থেকে চিড়িয়াখানা, সর্বত্র আগের থেকে মানুষের আনাগোনা অনেকটাই বেড়েছে। প্রতিবছর এই সময় কলকাতার রাস্তা কিংবা শপিংমলে ভালোভাবে দেখলেই নজরে পড়ে কলকাতার সান্টা ক্লজদের। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ
কলকাতা মেতেছে বড় দিনে। রাত পোহালেই ক্রিসমাস। তবে এই বছরের কলকাতা সহ গোটা দেশে সব অনুষ্ঠানরই ছন্দপতন হয়েছে। করোনা মহামারীর জন্যেই সব তালগোল পাকিয়ে একাকার। তবুও নিউ নর্মাল জীবনে নিউ মার্কেট থেকে শপিং মল, ভিক্টোরিয়া থেকে চিড়িয়াখানা, সর্বত্র আগের থেকে মানুষের আনাগোনা অনেকটাই বেড়েছে। প্রতিবছর এই সময় কলকাতার রাস্তা কিংবা শপিংমলে ভালোভাবে দেখলেই নজরে পড়ে কলকাতার সান্টা ক্লজদের। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ ঝোলা কাঁধে সান্টা ক্লজ সেজে রোজগারের আশায় বেড়িয়ে পড়েন অনেক। ভিড়ের মাঝে মানুষের মুড বদলাতে এগিয়ে আসেন সান্টা ক্লজেরা। অনেক একসাথে তোলেন সেলফি। যদিও এবার কলকাতায় দেখা নেই সান্টা ক্লজদের। কারণ করোনার জন্যে এ বছর রয়েছে অনেক বিধি নিষেধ। তাই কলকাতার সান্টা ক্লজদেরও কাজ নেই। এই বছর কোথাও তেমনভাবে চোখে পড়বে না সান্টার। মহামারীর জন্যে সান্টারা গিফট আসবে না এ বছর। এই নিয়ে মন খারাপ সকলের। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ যদি প্রশ্ন করা হয় কলকাতার সান্টাদের আদিপুরুষ কে? এককথায় উত্তর, সেলিম দ্য জোকারওয়ালা। শহরের তাবত্ সান্টারা কুর্নিশ করেন তাঁকেই। পেটের দায়ে দু চার পয়সা রোজগারের আশায় সেজেছিলেন সান্টা ক্লস। সেটা ১৯৯২। প্রথম আসরেই মাতিয়ে দিয়েছিলেন দর্শকদের। সেই শুরু। তারপর কখন নিজের অজান্তেই সেলিম আহমেদ হয়ে গেছেন সেলিম জোকারওয়ালা। কলকাতার সান্টা ক্লজ সেলিম জোকারওয়ালাকে চেনে না এমন কেউ নেই। তাঁর পথ অনুসরণ করে পরবর্তীতে কলকাতায় অনেক সান্টা সাজতে শুরু করেন। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ রিপন স্ট্রিট থেকে ডানদিকে, গলি তস্যগলি পেরিয়ে ৩ নং বেডফোর্ড লেন। সেখানেই থাকেন সেলিম আহমেদ ওরফে (২৫ বছরের পেশার সৌজন্যে) সেলিম জোকারওয়ালা। তিন বোন, সাত ভাইয়ের সংসারে এবার আর শীতের মরসুমে ক্রিসমাসের আগে ব্যস্ততা নেই। নেই আগের মতো ‘সান্তাক্লজ’, সাজার তাড়াও। করোনা মহামারীর জন্যে ক্রিসমাসের একদিন আগেও এখনও অর্ডার জোটেনি! এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ সেলিমের কথায়, সংসারে অভাব-অনটন যতই থাক, সেসব আড়াল করে উত্সবের মরশুমে মানুষজনকে নিখাদ মজা উপভোগ করানোই ছিল সেলিমের জোকারওয়ালার এতিদিনের প্রধান কাজ। এই বছর লকডাউনের জন্যে এমনিতেই রোজগার বন্ধ ছিল অনেকদিন। এখন সব আস্তে আস্তে সব শুরু হচ্ছে কিন্তু এখনও কোনও হাতে কাজ নেই। ক্রিসমাসের আগে প্রতি বছর কাজ করে দম ফেলার সময় হত না। এই বছর সেসবের কিছুই নেই। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ শুধু নিজের পরিবারের লোকেদেরই নয়। জুটিয়ে নিয়েছেন পাড়ার ছেলেদেরও। সকলকেই ট্রেনিং দিয়েছেন জোকারের ভূমিকায়। পরিবারের তো বটেই, অন্যদেরও রুটি-রুজির ব্যবস্থা করেছেন সেলিম। মধ্য কলকাতার রিপন স্ট্রিটের এই এলাকায় সংখ্যালঘু মুসলিমদের বসবাস। তবে এই জায়গায়টার বেশী পরিচিত সান্টা ক্লজ পাড়া নামে। বিশেষ করে প্রতিবছর বড়দিনের সময় বেডফোর্ড লেন জ্যান্ত সান্টাক্লজ ভাড়া পাওয়ার জন্যেই বিখ্যাত। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ এলাকার অধিকাংশ ছেলেই লাল জামা, লাল টুপি পড়ে দাড়ি-গোঁফ লাগিয়ে গলায় গিফটের ব্যাগ ঝুলিয়ে বেড়িয়ে পরেন। তিন-চার ঘণ্টার জন্য পারিশ্রমিক ৫০০ টাকা। সবাই যে টাকার প্রয়োজনে সান্টা সাজেন তা নয়। কেউ কেউ শখেও সাজেন সান্টা। প্রত্যেকের নিজস্ব পেশা আছে। ঝোলা কাঁধে নিয়ে তার মধ্যে থেকে গিফট বের করে মানুষকে আনন্দ দিতে পারার মজা উপলব্ধি জন্যেই সান্টা সাজা সেলিমের। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ তবে এই বছর কিছুই হবে না। সান্টার গিফটের ব্যাগ একদম ফাঁকা। কেউকে কিছু দেওয়ার ক্ষমতা নেই। সেলিম তার ছোট্ট ঘরে বসে এখন শুধু প্রার্থনা করছেন কাজের জন্যে। কলকাতার এই বুড়ো সান্টার উড়ুক্কুর বল্গা হরিণে টানা স্লেজে চেপে এই বছর আর বেরোনো হবে না। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ