-
গত বছর যখন প্রথম লকডাউন হয় তখন লোকাল ট্রেন বন্ধ ছিল দীর্ঘ প্রায় আটমাস। প্রথম লকডাউনের ধাক্কা সামলে সবাই ছন্দে ফেরার জন্যে মরিয়া চেষ্টা করছিল। গত বছরের সেই পুরনো ছবি আবারও ফিরে এলো এই বছরও। সময়টা কার্যত কম বেশী সকলের দুঃস্বপ্নের মধ্যে কাটছে। সব থেকে বেশী করুণ অবস্থা ট্রেনে বা স্টেশন চত্বরে হকারের পেশায় নিযুক্ত মানুষদের। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ
-
করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় ফের রেল বন্ধ করার মতন কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হয় রাজ্য সরকারকে। যারফলে চোখের নিমেষে রেল হকারদের জীবনে নেমে এসেছে অন্ধকার। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ
-
শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার ক্যানিং, ডায়মন্ড হারবার, লক্ষ্মীকান্তপুর থেকে উত্তরে বনগাঁ, বসিরহাট, সর্বত্রই সঙ্কটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে রেল হকাররা। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ
-
এই রেল হকাররা রেল যাত্রীদের কাছে পরিচিত ছিলেন, বাদামওয়ালা, কটকটি ভাজা, লেবুওয়ালা নামে। সেই পরিচিতি যেন রয়েছে আজ অস্তিত্ব সঙ্কটে। সৌজন্যে সেই পরিচিত লকডাউন। লোকাল ট্রেনের মতোই হকারদের জীবনের চাকাও এখন থেমে রয়েছে। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ
-
বেকার হয়ে গিয়েছেন প্রায় ৫০ হাজার হকার। হকারদের দিন আনি দিন খাওয়া সংসারে এখন এক দিনের ভাতও কপালে ঠিক মতন জোটেনা। ট্রেনে বাদামভাজা, কটকটি ভাজা থেকে শুরু করে লজেন্স সবই বিক্রি করতেন সুনীল দাস এবং তার স্ত্রী সুমিত্রা দাস। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ
-
দুজনেই শিয়ালদহ বনগাঁ শাঁখার রেল হকার। গত দশ পনেরো বছর ধরে রেলে হকারি করেই তাঁদের সংসার চলে। রোজগার কম হলেও লকডাউনের আগে পর্যন্ত কখনও সংসারে খাওয়া নিয়ে অভাব হয়নি। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ
-
এখন একবেলা খেতে পারলে বাকি দুদিন না খেয়ে থাকতে হয় বলে জানান সুনীল দাস। পঁয়ষট্টি বছরের সুনীলবাবুর সংসার বৃদ্ধ মা, স্ত্রী, ছেলে, ছেলের বৌ এবং নাতি নাতনি নিয়ে। লকডাউনের জন্যে ছেলের রোজগারও বন্ধ। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ
-
গত বছর ধারদেনা করে কোনোভাবে সংসার চলেছিল। এই বছর সেই উপায়ও নেই। বারাসাত স্টেশন থেকে আপের দিকে গেলে সনাতন সমিতি রেল লাইনধারে সুনীল দাস এবং সুমিত্রা দাসের ছোট্ট ঝুপড়ি। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ
-
এখানেই গাদাগাদি করে থাকেন আটজন মানুষ। গত বছর আম্ফান ঘূর্ণি ঝড়ে ঝুপড়ির ছাঁদ উড়ে গিয়েছিল। তারপর থেকে কোনওমতে ঠেকনা দিয়ে চলছে। ফাস্ট ট্রেনের শব্দে রোজ ঘুম ভাঙ্গতো। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ
-
লাইনের ধারে ঘর হওয়ায় সারাদিনই থাকতো ট্রেনের শব্দ। কোনদিন বিরক্ত লাগেনি। এখন খালি রেল লাইনে নিস্তব্ধতা যেন কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে অনেকগুলো সংসারকে। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ
-
সারাদিন সব বিক্রি শেষে, শেষ ট্রেনে যখন সুনীলবাবু এবং তার স্ত্রী বাড়ি ফিরত। তখন একেক জনের রোজ দুই থেকে তিনশো টাকার মতন রোজগার ছিল। অল্প টাকার রোজগারই তাঁদের পরের দিন কাজ করার রসদ যোগাত। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ
-
এখন এসব যেন স্বপ্নের মতন মনে হয় সুমিত্রা দাসের কাছে। পাশের মুদির দোকানে গত দুমাসেই ধার বাকি হয়ে গিয়েছে অনেক। ট্রেন বন্ধ তাই হকারি করতে বেরিয়েছিলেন বিভিন্ন পাড়ার অলিতে গলিতে। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ
-
সুনীলবাবুর কথায়, ‘এই বয়সে আর কী-ই বা করব? হকারির হাঁক পাড়ার অভ্যাসটা রয়ে গিয়েছে। তাই পাড়ার অলিতে গলিতে বাদাম বিক্রি করতে বেড়িয়েছিলাম। কিন্তু লকডাউনের জন্যে কেউ কিনতে চাইনি। অনেক আবার পাড়া থেকেও বের করে দিচ্ছেন’। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ
-
ঘরের মধ্যেই পড়ে নষ্ট হচ্ছে সব জিনিস। জমানো টাকা সব শেষ। আগামী দিন কি হবে কেউ জানে না। রেলকে কেন্দ্র করেই জীবন। কয়েকটা স্টাফ ট্রেন চলছে কিন্তু তাতে হকার ওঠার অনুমতি নেই। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ
-
শিয়ালদহ-বনগাঁ রেলওয়ে স্টেশন হকার ইউনিয়নের সেক্রেটারি অভিজিৎ বক্সী বলেন, “শিয়ালদহ বনগাঁ লাইনেই প্রায় রয়েছে ১০ হাজারের মতন হকার যারা এই লোকাল ট্রেনকে কেন্দ্র করেই জীবন জীবিকা চালান। সকলেই এখন বেকার। সবার সংসার যে কিভাবে চলছে তা বলে বোঝানো যাবে না।” এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ
-
লকডাউনে আর্থিক পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারায় গত বছর আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন হকাররা। তছনছ হয়ে গিয়েছে রেলের হকারদের স্বাভাবিক জীবন। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ
-
সুনীল দাস এবং সুমিত্রা দাসের মতন হকাররা এখন প্রতিদিন নিজের অস্তিত্ব বাঁচানোর লড়াই করে যাচ্ছে। আর দিন গুনছে ট্রেনের চাকা গড়ানোর। এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ
