-
পুরীর পাশাপাশি বাংলাতেও রথযাত্রা প্রসিদ্ধ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হুগলীর শ্রীরামপুরের মাহেশের রথ। মাহেশের রথযাত্রার ইতিহাস প্রায় ৬০০ বছর পুরনো। প্রচলিত কাহিনি অনুসারে, ধ্রুবনন্দ ব্রহ্মচারী সূচনা করা রথের রশিতে ১৩৯৬ সাল থেকেই টান পড়ছে। মাহেশের রথের ওজন ১২৫ টন এবং এই রথের উচ্চতা ৫০ ফুট। কথিত আছে যে, একদা মাহেশের রথের চূড়ায় নীলকন্ঠ পাখি এসে বসে। পুরীর রথযাত্রা শুরু সঙ্গে সঙ্গে সঙ্গে সেই পাখি উড়ে যায়। তার পরই মাহেশের রথের চাকা ঘোরে। মাহেশের রথযাত্রার সময় বিশাল মেলার আয়োজন করা হয়।
-
পূর্ব মেদিনীপুরের গুপ্তিপাড়ায় ১৭৪০ খ্রীষ্টাব্দে রথের সূচনা করেন মধুসূদানন্দ। গুপ্তিপাড়ার রথের উচ্চতা ৩৬ ফুট। ১৮৭৩ সালের আগে পর্যন্ত গুপ্তিপাড়ার বৃন্দাবন চন্দ্র মন্দির থেকে ১২ চাকার রথে চড়ে প্রভু জগন্নাথ দেব মাসির বাড়ি যেতেন। কিন্তু ১৮৭৩ সালে একটি দুর্ঘটনার পর সেই রথের চাকার সংখ্যা কমে গিয়েছে। গুপ্তিপাড়ার এই রথের উচ্চতা ৩৬ ফুট।
-
মাহেশের মতোই পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের রথযাত্রাও বিখ্যাত। মিষাদলের রথের ইতিহাস প্রায় ২০০ বছরের প্রাচীন। ১৭৭৬ সালে মহিষাদলের জমিদার আনন্দলালের স্ত্রী জানকী দেবী এখানে এই রথযাত্রার সূচনা করেছিলেন।
-
নদীয়ার মায়াপুরের ইস্কন মন্দিরের রথযাত্রা এরাজ্যের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অন্যতম নজির। প্রচলিত কাহিনি অনুযায়ী মায়াপুর ও সংলগ্ন রাজাপুর গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দাই বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী। প্রায় পাঁচশো বছর আগে এক পুরোহিত স্বপ্নে দেখেছিলেন যে, রাজাপুর থেকে মায়াপুরে প্রস্থান করবেন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা। তার পর সেখান থেকে রথে চড়ে ফিরে আসবেন তাঁরা। এই প্রথা মতোই প্রতিবছর মায়াপুর ও রাজাপুর গ্রামে রথ উৎসব পালিত হয়ে আসছে।
-
১৮৩৬ সালে জমিদার গোবিন্দপ্রসাদ পণ্ডিতের উদ্যোগে সিয়ারশোলের রথযাত্রার সূচনা হয়। তবে বহু বছর ধরেই এই রথযাত্রার সামগ্রিক পরিচালনায় রয়েছে সিয়ারশোল স্পোর্টস অ্যান্ড কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন।
-
কোভিড কাঁটা পেরিয়ে ফের পুরনো ছন্দে কোচবিহারের ঐতিহ্যবাহী মদনমোহনের রথযাত্রা। আর যন্ত্রচালিত ট্রাকে নয়, চিরাচরিত কাঠের রথে চড়েই শুক্রবার মাসির বাড়ি যাবেন মদনমোহন।
