/indian-express-bangla/media/media_files/2024/12/21/0EH6RtnI9vUSKiwsB1NU.jpg)
'শান্তিপুর' যেখানে হারিয়ে যাওয়া তাঁত আর তাঁতিদের বসবাস Photograph: (এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘোষ)
/indian-express-bangla/media/media_files/2024/12/21/6cppJlTOR7rpewyyfN85.jpg)
সবুজ মাঠ, সর্ষে ক্ষেতের ধার, আর রাস্তার দুপাশে সকাল থেকে রং বেরঙের সারি সারি শাড়ি শুকোতে দেওয়ার তোড়জোড় চলছে। এক্সপ্রেস ফটো শশী ঘোষ
কলকাতা থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে নদীয়া জেলার শান্তিপুরের ঐতিহ্যবাহী তাঁত এবং তাঁতিদের কুঁড়েঘর। শীতের কুয়াশার আস্তরণ সবে কেটেছে। গাছের পাতা তখনও শিশিরভেজা। রোদের তেজে তেমন ঝাঁজ নেই। সবুজ মাঠ, সর্ষে ক্ষেতের ধার, আর রাস্তার দুপাশে সকাল থেকে রং বেরঙের সারি সারি শাড়ি শুকোতে দেওয়ার তোড়জোড় চলছে।
/indian-express-bangla/media/media_files/2024/12/21/jGNW1iMdl69RLjb24UsL.jpg)
নদীয়া জেলার শান্তিপুর তাঁতিদের হাতে বোনা শাড়ির জন্য পৃথিবী বিখ্যাত। এক্সপ্রেস ফটো শশী ঘোষ
দূর থেকে ভেসে আসছে মেশিনে কাপড় বোনার শব্দ। বছর চার পাঁচেক আগেও এখানে হাতে বোনা খট খট শব্দ শোনা যেত। এখন শব্দটি ম্লান হয়ে গিয়েছে। ডিজিটালের যুগে হাতে বোনা তাঁতের খোঁজ রাখেই বা কজন!
/indian-express-bangla/media/media_files/2024/12/21/6APnE1jPb0aXsL1uLSZj.jpg)
একটা সময় নদীয়া জেলার শান্তিপুর এলাকায় প্রায় প্রতিটি ঘরেই তৈরি হতো হাতে বোনা তাঁতের শাড়ি। এক্সপ্রেস ফটো শশী ঘোষ
নদীয়া জেলার শান্তিপুর তাঁতিদের হাতে বোনা শাড়ির জন্য পৃথিবী বিখ্যাত। অতুলনীয় বয়ন প্যাটার্ন এবং গুণমানের জন্য গোটা দেশে এর চাহিদাও ছিল অনেক বেশি। প্রায় দুলাখের বেশি তাঁতী এখানে তাঁত শিল্পের সঙ্গে জড়িত।
/indian-express-bangla/media/media_files/2024/12/21/8LbeFxizjjy1xsvPVHGw.jpg)
প্রায় দুলাখের বেশি তাঁতী এখানে তাঁত শিল্পের সঙ্গে জড়িত। এক্সপ্রেস ফটো শশী ঘোষ
এখন যার প্রায় ২০শতাংশেরও কম শিল্পীরা এই পেশার সঙ্গে রয়েছে। হারিয়ে যাচ্ছে এখানের তাঁত শিল্প। প্রশ্ন এখানেই, যে শান্তিপুরের শাড়ির এত কদর ইদানীং কেন তার এত দুর্দশা! এক্সপ্রেস ফটো শশী ঘোষ
/indian-express-bangla/media/media_files/2024/12/21/4WTDnDMdZsytEATF3mxO.jpg)
কয়েকটা মাত্র ঘর আছে যাঁরা এই শিল্পের উপর ভরসা করে সংসার চালান। এক্সপ্রেস ফটো শশী ঘোষ
শিল্পীরা বলছেন, তাঁতের শাড়ির থেকে বেশি চাহিদা সিল্কের শাড়ির, এর সাথে বেড়েছে ওয়েস্টার্ন পোশাকের বিপুল ব্যবহার। মূল্যবৃদ্ধির কারণে একাধিক কাঁচামাল সামগ্রীর দাম বাড়ছে। ফলে শাড়ির দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছেন শিল্পীরা। ক্রেতার সংখ্যা কমছে। এই দুয়ের চাপে মুখ থুবড়ে পড়তে হচ্ছে তাঁতীদের। এক্সপ্রেস ফটো শশী ঘোষ
/indian-express-bangla/media/media_files/2024/12/21/AZiWAdMDPbXuoNxwTTXD.jpg)
নবীন প্রজন্ম এই পেশায় আসতে চাইছেন না। এক্সপ্রেস ফটো শশী ঘোষ
এদিকে রোজগারও তেমন ভালো না হওয়ায় নবীন প্রজন্ম এই পেশায় আসতে চাইছেন না। তাঁদের অনেকেই ইতিমধ্যে পেটের তাগিদে অন্য রাজ্যে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। তাঁতযন্ত্রের সামনে বসে আক্ষেপ বলছিলেন ষাটোর্ধ্ব গোপাল দাস। এই হতাশা যদিও তাঁর একার নয়। শান্তিপুরের প্রত্যেক শিল্পীর।
/indian-express-bangla/media/media_files/2024/12/21/NY8U0X6uBkfWnhVg7L6K.jpg)
হাতে চালানো, যন্ত্রে চালানো ঘরোয়া তাঁত তো বটেই, সমস্যায় পড়ছে মাঝারি যন্ত্রচালিত ইউনিটও। এক্সপ্রেস ফটো শশী ঘোষ
. হাতে চালানো, যন্ত্রে চালানো ঘরোয়া তাঁত তো বটেই, সমস্যায় পড়ছে মাঝারি যন্ত্রচালিত ইউনিটও। অভিযোগ ‘সুরাট থেকে মাল আসছে শান্তিপুরে। তার ওপর মেশিনে কাজ হচ্ছে। বলা হচ্ছে শান্তিপুরী শাড়ি। সুরাটের শাড়ি দেশের সব জায়গায় তাঁতিদের সর্বনাশ করে দেবে। যেমন পথে বসিয়েছে আসামের মেখলাশিল্পীদের। এক্সপ্রেস ফটো শশী ঘোষ
/indian-express-bangla/media/media_files/2024/12/21/LGA8dw1zvlTlkguEMtu4.jpg)
যে তাঁত শিল্পের সঙ্গে বাংলার ঐতিহ্যশালী ইতিহাস জড়িয়ে তা আজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার মুখে। এক্সপ্রেস ফটো শশী ঘোষ
শ্রী অদ্বৈত আচার্যের অদ্বৈতমঙ্গলে শান্তিপুরের তাঁত হস্ত শিল্পের কথা লিখিত আছে বলে জানা যায়। সে প্রায় ১৪৬০-১৫৫৮ সালের কথা। গৌড়ের রাজা গণেশ দানু সাধনদেবের সময়ে শান্তিপুরে প্রথম শাড়ি বোনার সূচনা।
/indian-express-bangla/media/media_files/2024/12/21/yhvbM7z8F0bXfuiX0igP.jpg)
মহাপ্রভু শ্রী চৈতন্যদেবের উপদেশে বাংলাদেশের একদল তাঁতি বাস করতে শুরু করে শান্তিপুরে। এক্সপ্রেস ফটো শশী ঘোষ
মহাপ্রভু শ্রী চৈতন্যদেবের উপদেশে বাংলাদেশের একদল তাঁতি বাস করতে শুরু করে শান্তিপুরে। সঙ্গে চলতে থাকে তাদের পেশা, তাঁত বোনা। রাজা রুদ্র দেব রায়ের আমলে শুরু হয় বাণিজ্যিক ভাবে তাঁত বোনা।
/indian-express-bangla/media/media_files/2024/12/21/LmsyCsRniPrYbLOkEnIE.jpg)
কয়েকটা মাত্র ঘর আছে যাঁরা এই শিল্পের উপর ভরসা করে সংসার চালান। এক্সপ্রেস ফটো শশী ঘোষ
তবে বাংলাদেশ থেকে এই তাঁতিদের আসার পর থেকেই শাড়ির বাজার চলতে থাকে রমরমিয়ে। যে তাঁত শিল্পের সঙ্গে বাংলার ঐতিহ্যশালী ইতিহাস জড়িয়ে তা আজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার মুখে।
/indian-express-bangla/media/media_files/2024/12/21/q0DRRoGKj612qiRKvUL0.jpg)
এভাবে চললে কিছুদিন বাদে হারিয়ে যাবে শান্তিপুরি তাঁতের শাড়ি। এক্সপ্রেস ফটো শশী ঘোষ
একটা সময় নদীয়া জেলার শান্তিপুর এলাকায় প্রায় প্রতিটি ঘরেই তৈরি হতো হাতে বোনা তাঁতের শাড়ি। এখন সেই তাঁতিরাই কাজ করেন মহাজনের ঘরে। কেউ সুতো রং করেন কেউ বা রোডে শাড়ি শুকোন।
/indian-express-bangla/media/media_files/2024/12/21/RG0Lh8BMBre3HoAtRu3Q.jpg)
নদীয়া জেলার শান্তিপুর তাঁতিদের হাতে বোনা শাড়ির জন্য পৃথিবী বিখ্যাত। এক্সপ্রেস ফটো শশী ঘোষ
কয়েকটা মাত্র ঘর আছে যাঁরা এই শিল্পের উপর ভরসা করে সংসার চালান । এভাবে চললে কিছুদিন বাদে হারিয়ে যাবে শান্তিপুরি তাঁতের শাড়ি। এক্সপ্রেস ফটো শশী ঘোষ
/indian-express-bangla/media/media_files/2024/12/21/2bDUMCw2qwjRH8xdqxNV.jpg)
ইরের রাজ্য থেকে মনভোলানো রকমারি শাড়ি আসছে সেই জন্য এই শাড়ীর চাহিদা কমছে। এক্সপ্রেস ফটো শশী ঘোষ
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিল্পী বলছিলেন, "পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদাসীনতার কারণেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে । প্রায় চল্লিশ বছর ধরে শাড়ী বুনছি। মজুরী কমতে কমতে প্রায় তলানি তে এসে ঠেকেছে।
/indian-express-bangla/media/media_files/2024/12/21/2dg25nBRIrIbaOSnWKBT.jpg)
রাস্তার দুপাশে সকাল থেকে রং বেরঙের সারি সারি শাড়ি শুকোতে দেওয়ার তোড়জোড় চলছে। এক্সপ্রেস ফটো শশী ঘোষ
একশ্রেণীর মুনাফা লোভী মহাজন বেশি মুনাফার লোভে তাঁতি দের থেকে শাড়ী নিয়ে সেই শাড়ী বাজারে বেশী দামে বিক্রি করে দিচ্ছে । তার উপর বাইরের রাজ্য থেকে মনভোলানো রকমারি শাড়ি আসছে সেই জন্য এই শাড়ীর চাহিদা কমছে । এভাবে চললে কিছুদিনের মধ্যেই চিরতরে হারিয়ে যাবে শান্তিপুরি তাঁত।"