New Update
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2021/01/printing-press-Cover.jpg)
ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম মুদ্রণযন্ত্রটি স্থাপিত হয় ১৫৫৬ সালে, গোয়ায়। কাজটি করেন পর্তুগিজরা। ১৫৬৭ সালে গোয়ার ছাপাখানা থেকে এ অঞ্চলের প্রথম বইটি ছেপে বের হয়। খ্রিস্টান মিশনারিরা তাঁদের ধর্মীয় ভাবনা বিভিন্ন প্রকাশনার মধ্য দিয়ে প্রকাশ করার জন্যেই এই ছাপাখানাটি তৈরি করে। এরপর অনেক সময় পেরিয়ে বাংলায় প্রথম ছাপাখানা স্থাপিত হয় ১৭৭৭ সালে। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম মুদ্রণযন্ত্রটি স্থাপিত হয় ১৫৫৬ সালে, গোয়ায়। কাজটি করেন পর্তুগিজরা। ১৫৬৭ সালে গোয়ার ছাপাখানা থেকে এ অঞ্চলের প্রথম বইটি ছেপে বের হয়। খ্রিস্টান মিশনারিরা তাঁদের ধর্মীয় ভাবনা বিভিন্ন প্রকাশনার মধ্য দিয়ে প্রকাশ করার জন্যেই এই ছাপাখানাটি তৈরি করে। এরপর অনেক সময় পেরিয়ে বাংলায় প্রথম ছাপাখানা স্থাপিত হয় ১৭৭৭ সালে। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ জেমস অগাস্টাস হিকির হাত ধরে। এই 'বেঙ্গল গেজেটই' হিকি সাহবের প্রথম সাময়িক পত্রিকা। বাংলার ছাপাখানার ইতিহাস এসব অনেক পুরনো। এখনকার ডিটিপি আর কম্পিউটারাইজড জেনারেশন এসব ভুলে মেরে দিয়েছে। এমনিতে বাঙালি চিরকালই ইতিহাস বিমুখ। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ আর এই বাংলার ছাপাখানার আঁতুড় ঘর হুগলীর শ্রীরামপুর। এরপর উনিশ শতকে তো জোয়ার এলো বাংলা মুদ্রণে। উত্তর কলকাতা অর্থাৎ বিডন স্ট্রিট ও নিমতলা ঘাট স্ট্রিট, পশ্চিমে স্ট্র্যান্ড রোড, উত্তরে শ্যামবাজার স্ট্রিট এবং পূর্বে কর্নওয়ালিস স্ট্রিট এসব জায়গায় ব্যাঙের ছাতার মতো অসংখ্য ছোট সস্তার প্রেস গড়ে ওঠে। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ যদিও এখন এই ছাপাখানার ইতিহাস অতীত। বন্ধ হয়ে গিয়েছে বেশীরভাগ হাতে চালানো সব ছাপাখানা। যে কয়েকটা ছাপাখানা ছিল তা এই অতি মহামারিতে লোকসানের কারণে ছাপার যন্ত্রপাতি সব বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছে। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ এই প্রতিকূলতার মধ্যেও পটলডাঙ্গা স্ট্রিটে এখনও টিকে রয়েছে ৭০ বছরের কাছাকাছি একটি ছাপাখানা। এই ছাপাখানার বর্তমান মালিক যজ্ঞেশ্বর মল্লিক। কলেজ স্ট্রিটের ট্রামলাইন পেরিয়ে পটলডাঙ্গা স্ট্রিটের দিকে এগোলে চওড়া গলির মধ্যেই যজ্ঞেশ্বরবাবুর দোতলা বাড়ি। এই বাড়ির নিচের তলাতেই রয়েছে তাঁর পুরনো ছাপাখানার মেশিন। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ যজ্ঞেশ্বর বাবুর কথায়, সময়টা তখন ১৯৫১ সাল। কলকাতা সহ গোটা দেশে ছাপাখানার তখন রমরমা অবস্থা। তখনই তিনি ঠিক করেন চাকরির বদলে তিনি নিজে ছাপাখানা করবেন। স্বল্প সঞ্চয়ের টাকায় ছাপাখানার মেশিন কেনেন। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ এরপর বিভিন্ন বই থেকে শুরু করে নতুন বছরে ক্যালেন্ডার সবই ছাপাতে শুরু করেন। পাশে কলেজ স্ট্রিট হওয়াতে অল্পদিনের মধ্যেই ব্যবসায় বেশ উন্নতি হয়। তখন উত্তর ও মধ্যে কলকাতায় বেশীরভাগ জায়গাতেই কান পাতলে ছাপাখানার মেশিনের শব্দ। বলা যেতে পারে উনিশ শতকের এই সময়টা ছিল ছাপাখানার স্বর্ণযুগ। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ একটা সময় কাজের চাপে ঘুম উড়ে যেত। কিন্তু বর্তমান ডিজিটাল যুগে কম্পিউটারে প্রিন্টিং হয়ে যাচ্ছে সব কাজ, তাছাড়া সরকারি ও প্রশাসনিক স্তরের বিভিন্ন দপ্তরের যাবতীয় কাজ কম্পিউটারে প্রিন্ট হয়ে যাওয়ার ফলে প্যাড, বিল, সরকারি অনুষ্ঠানের নিমন্ত্রণপত্র, সূচি প্রভৃতি ছাপা প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছে। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ যজ্ঞেশ্বর বাবুর সমসাময়িক অনেকে লোকসানের কারণে ছাপাখানা বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু যজ্ঞেশ্বর বাবু এখনও সেই আগের মতনই রয়েছেন। ছাপাখানায় কাজ আসুক কিংবা না আসুক তিনি রোজ ছাপাখানাটি চালু রেখেছেন। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ তাঁর বাড়ির পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ছাপাখানা মেশিনের খটখট শব্দে সকলে একবার অন্তত থমকে দাঁড়ায়। দেশ বিদেশ থেকে অনেকে এই ছাপাখানার সম্বন্ধে শিখতে এবং জানতে যজ্ঞেশ্বরের কাছে আসেন। পুরনো মেশিনে কিভাবে কাজ হত তা ৮৭ বছরের এই বৃদ্ধ এখনও গড়গড় করে বলে যান। হয়তো ছাপাখানাটি মানুষের মধ্যেই বাঁচিয়ে রাখতে চান। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ লকডাউনের জন্যে গোটা পশ্চিমবঙ্গে যে কয়েকটা ছাপাখানা ছিল তাঁর বেশীরভাগই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যজ্ঞেশ্বর বাবু তবুও অবিচল। গত পাঁচ মাস আগে ছাপাখানার কাজে দোতলা থেকে নিচে নামার সময় পড়ে পা ভেঙ্গে ফেলেন এরপর থেকে এখন বিশ্রামে আছেন। ডাক্তার অনুমতি দিলেই আবার ছাপখানার কাজ তিনি শুরু করবেন। যজ্ঞেশ্বর বাবুর ছেলেরও প্রিন্টিং প্রেসের ব্যবসা। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ তবে এখন এই ছাপাখানার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন ছোট ভাই সিদ্ধেশ্বর মল্লিক। সিদ্ধেশ্বরই এখন নিয়ম করে ঝাড়া মোছা থেকে ছাপাখানাটি সচল রাখার কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর কথায়, তাঁর দাদার কাছে এই ছাপাখানাটি নিজের সন্তানের মতন তিনি যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন এই ছাপাখানা চালিয়ে যাবেন। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ কলকাতার অনেক মানুষ এমনকি স্কুল কলেজের অনেক ছাত্রছাত্রী এই ছাপাখানার মেশিন দেখতে আসে। পুরনো এই ছাপখানার মেশিন এখন আর কোথাও দেখা যায় না। বলা যেতে পারে এই ছাপখানার মেশিনই কলকাতার সব থেকে পুরনো। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ