-
রাস্তার একপাশ জুড়ে কাঁটাতারের ফেন্সিং। দুপাশেই ধান খেত। ওপারটা বাংলাদেশ এপারটা ভারত। বাংলাদেশের নাগরিকরা যাতে এই দেশে ঢুকে পড়তে না পারে তাঁর জন্যে সীমান্তে রয়েছে কড়া নজরদারি। কিন্তু নিজের দেশেরই ছোট একটা টুকরো পড়ে গিয়েছে কাঁটাতারের ওপারে। অর্থাৎ ভারতের ‘জিরো পয়েন্টে’। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
একটা মুড়ির প্যাকেট আনতে গেলেও কাঁটাতার পেরিয়ে ঢুকতে হয় ভারতে। প্রয়োজন পরে বিএসএফের অনুমতির। বামনগোলা তালতলি ভারতের ‘জিরো পয়েন্ট’ এলাকার মানুষদের এমনই করুণ অবস্থা ২০০৬ সালের পর থেকে। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
জমি আছে। মানুষের বাস আছে। কিন্তু পায়ের তলার সেই জমির স্বীকৃতি নেই। সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যে ৬টা পর্যন্তই স্বীকৃতি মেলে তাঁদের ভারতে প্রবেশের। এরপর নিজের দেশের মধ্যেই হয়ে যায় তারা পরবাসী। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
২০০৬ সালে সীমান্তে বেড়া দেওয়ার সময় বাদ পড়ে গিয়েছে এই গ্রামটি। এরপর থেকেই এমন অবস্থার শুরু। ১০০ গ্রাম জিরে ৫০ গ্রাম শুকনো লঙ্কা আনতে গেলেও বিএসএফ চেকপোস্টে জমা রেখে যেতে হয় আধার কার্ড, এমনই অভিযোগ গ্রামের বাসিন্দা লক্ষ্মী মিস্ত্রির। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
হবিবপুর বিধানসভার অন্তর্গত চাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার তালতলি গ্রাম। গ্রামের কাছেই পূর্নভবা নদী। তা পেরোলেই বাংলাদেশ। এই গ্রামে ২৬টি পরিবারের বাস। প্রত্যেকবার নির্বাচনের আগে তালতলির এই ২৬টি পরিবার তাদের যথাযথ পুনর্বাসন এবং তাদের ভারতে অন্তর্ভুক্ত করার আশা নিয়ে ভোট দিতে যান। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
এবারেও তেমনটাই করেছেন গ্রামের লোকেরা। নির্বাচনের আগে প্রত্যেক রাজনৈতিক দল আশ্বাস দিয়ে যায় পরিস্থিতি সুরাহার। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
গত ১৫ বছর ধরে রাজনৈতিক দলগুলির এই আশ্বাস নিয়েই বেঁচে আছেন। এই সমস্যার সুরহা আজ কেউ করতে পারেনি বলে জানান গ্রামেরই বাসিন্দা বিশ্বজিৎ হালদার। তিনি বলেন, বাচ্চাদের স্কুল কলেজ পর্যন্ত এখানে কাছাকাছি নেই। স্কুল যেতে হলেও পরিচয়পত্র জমা রেখে যেতে হয়। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
সবুজ মাঠ। মাটির বাড়ি। সব বাড়িতে ধানের গোলা। গোয়ালে গরু। কাঁচা রাস্তা। সবই আছে এখানে। শুধু এ সব কিছুরই স্বীকৃতি নেই। কারণ তালতলি গ্রামটি জিরো পয়েন্ট ধরা হয়। বিএসএফ আধিকারিকদের কথায় এই জায়গাটি জিরো লাইন। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
সপ্তম দফার ভোট শেষ হয়ে গিয়ে শেষ দফার ভোট অর্থাৎ অষ্টম দফা। এই ভোট আসলে তাদের আশা জাগে নতুন সরকার তাদের এমন বন্দীদশা জীবন থেকে মুক্তি দেবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন বাস্তবরূপ পায়নি আজও। গ্রামের বাসিন্দা বৃদ্ধ নিতাই বিশ্বাস বললেন, আর কতদিন এভাবে বেঁচে থাকা যায়? আমাদের একটা হিল্লে করুন। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
আমাদের ছেলে মেয়েদের ভবিষ্যৎ আইনের কাঁটাতারে জট পাকিয়ে গিয়েছে। সমস্তরকম সরকারি প্রকল্পের সব সুবিধা থেকে আমরা বঞ্চিত হয়ে গিয়েছি। একমাত্র সম্বল শুধু ভোটার এবং আধার কার্ড। বাড়ির নিজের ছেলে মেয়ের বিয়ে দিতে গেলেও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর অনুমতি নিতে হয়। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
সকাল ছটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সীমান্তের গেট খোলা থাকে। নিদিষ্ট পরিচয় পত্র দেখিয়ে যাতায়াত করা যায়। আর জরুরী প্রয়োজন যেমন কেউ অসুস্থ হলে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বিশেষ অনুমতি নিয়ে খোলা হয় গেট। জিরো পয়েন্টে মানুষের বসবাসের অনুমতি নেই। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
দেশভাগের পর সেখানেই থেকে গেছে তারা। সীমান্তের ধার ঘেঁষে সেইসব গ্রাম কাঁটাতার আর আইনের বেড়াজালে মোড়া। ফলে যাতায়াত রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। দেশ স্বাধীন হয়ে গিয়েছে ৪৭ সালে কিন্তু আমরা এখনও পরাধীন, নিজের দেশ থেকেও যেন কিছুই নেই বলে আক্ষেপ করেন বছর পঞ্চাশের অর্চনা বিশ্বাস। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
-
১৯৯৮ সাল থেকে এই গ্রামে বিজেপি এবং সিপিএমের ভালই প্রভাব ছিল। পরে ২০১৮ সালে সিপিএমের বিধায়ক খগেন মুর্মু বিজেপিতে যোগ দেয়। সেই বছরে পঞ্চায়েত নির্বাচন জেতার পর বিজেপির পুরোপুরি দখলে যায় তালতলির গ্রামটি। এই বছর নির্বাচনের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে রয়েছে তালতলির এই ২৫টি পরিবার। স্বাধীনতার স্বাদ পাওয়ার আশায়। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
