সানাইয়ের সুর শুনলেই যেন মনটা আনচান করে ওঠে। আশ্চর্য মধুর এক শব্দ রয়েছে এই বাদ্যযন্ত্রের। সুরের মধ্যে জেগে থাকে অদ্ভুত বিষাদ। অথচ দেখুন, এ বাদ্যযন্ত্র তো বাঙালি সমাজে আনন্দ অনুষ্ঠানের সঙ্গী। এককালে বিয়ে থেকে শুরু করে প্রায় সমস্ত মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানই ছিল সানাইয়ের সুর ছাড়া অসম্পূর্ণ। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষবড় বড় সব বিয়েবাড়িতে এককালে বসত নহবত। সেখানে বাজাতেন নামীদামী সব ওস্তাদরা। তবু একটা সময় পর্যন্ত ধ্রুপদী সঙ্গীতের ধারায় বিশেষ মান ছিল না এই বাদ্যযন্ত্রটির। ওস্তাদ বিসমিল্লাহ খাঁ-এর হাত ধরে সানাইয়ের বাজনা উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের মর্যাদা পেয়েছে। সানাইয়ের খ্যাতিও ছড়িয়ে পরে সারা বিশ্বে। তবে এই সানাইয়ের জগত আজও যেন বড্ড বেশি পুরুষপ্রধান। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ পুরুষেরা এই যন্ত্রটিকে নিজেদের দখলেই রেখেছেন। সেখানে মহিলাশিল্পী প্রায় নেই বললেই চলে। ব্যতিক্রম কেবল একজন। তিনি হাবড়া কল্যানগড়ের অঞ্জনা নন্দী। পশ্চিমবঙ্গের সম্ভবত প্রথম মহিলা সানাই বাদক। অন্তত এমনটাই দাবি। ইতিমধ্যে এই মহিলা সানাইশিল্পী পশ্চিমবঙ্গ নারী ও শিশু কল্যান দপ্তর থেকে সম্মানও অর্জন করেছেন। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষসানাই বাজাতে শ্বাসযন্ত্রের জোর লাগে। আর সেই কারণেই বোধহয় এই ক্ষেত্রটায় মহিলাদের আনাগোনা কম। তবে সেই ট্যাবুটাই ভাঙতে চেয়েছিলেন অঞ্জনা নন্দী। মেয়ে হিসেবে সানাইয়ের দুনিয়ায় পা রাখাটা সহজ ছিল না। ছোটবেলা থেকে ক্ল্যাসিক্যাল সঙ্গীতে পারদর্শী ছিলেন এছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরণের বাদ্যযন্ত্রও বাজাতে জানতেন। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ অঞ্জনা নন্দী বলেন, "২০১৫ সালে কোন একটি ঘটনায় দাদার সঙ্গে জেদ করে আমি এই জগতে এসেছি। ছোটভাই সজল নন্দীর সাহায্যে বিসমিল্লা খাঁ-এর ভাগ্নে জামাই ওস্তাদ ফকির আহমেদের কাছে সানাই শেখা শুরু। এছাড়া আমার পরিবারের সকলেই সঙ্গীত জগতের সঙ্গে যুক্ত। সঙ্গীত আমার রক্তেই রয়েছে। আমি শুনেছি খুব সম্ভবত পুণেতে একজন রয়েছে মহিলা সানাই শিল্পী এরপর দ্বিতীয় আমি। পশ্চিমবঙ্গে আমি প্রথম মহিলা সানাই শিল্পী"। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষগুরুজি ফকির আহমেদের কাছ থেকে এখনও সানাই শিখতে বেনারসে যান অঞ্জনা। প্রথম এক বছর লেগেছিল সানাই এর ফু বের করতে। তারপর যা হয়েছে সবার সামনে। তিনবছর পর গুরুজি সাথেই প্রথম মঞ্চে সানাই প্রদর্শন। এরপর বহু জায়গায় মহিলা সানাই বাদকের ডাক পায়। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষএকজন মহিলাকে সানাই বাজাতে দেখে অনেকে চমকে ওঠেন। পুরুষদের হাতে সানাই দেখতে সকলেই অভ্যস্ত। কিন্তু যখনই কোন এক মহিলাকে সানাই বাজাতে দেখছেন তখনই সকলে থমকে যাচ্ছেন। "সম্মান, খ্যাতি আজ সবটাই হয়েছে এই সানাইয়ের জন্যে", জানান অঞ্জনা দেবী। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষঅঞ্জনা দেবী চায় আরও মহিলা তাঁর মত এগিয়ে আসুক হাতে তুলে নিক এই সানাই বাদ্যযন্ত্র। রাজ্যের প্রথম মহিলা সানাই বাদ্যকারকে খুব কম মানুষই চেনেন। সানাইয়ের কদর এখন নেই বললেই চলে। তারওপর মহিলা সানাই শিল্পীর খোঁজ কেউ না রাখাটায় স্বাভাবিক। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষঅঞ্জনা দেবী শুধু যে সানাই বাজায় তা নয় মহিলা ঢাকি হিসেবে বেশ নাম ডাক রয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নানান অনুষ্ঠানে গিয়ে ঢাক বাজিয়ে সুনামও অর্জন করছে। প্রথাগত গণ্ডি ভেঙ্গেছেন এই মহিলা সানাইবাদক। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষশিল্পের কোন নারী পুরুষ ভেদাভেদ নেই। ইচ্ছে থাকলেই সকলেই শিল্পী হতে পারেন। সানাইকে সঠিকভাবে মর্যাদা দিলে নতুন প্রজন্মের অনেকে এই সানাইয়ের প্রতি আগ্রহী হত। এমনটা মনে করেন অঞ্জনা নন্দী। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ
আমাদের নিউজলেটার সদস্যতা!
একচেটিয়া অফার এবং সর্বশেষ খবর পেতে প্রথম হন