তামিলনাড়ু মন্ত্রিসভার ৩৬ সদস্যের ১০ জনই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির রাডারে। ক্ষমতাসীন ডিএমকে এই তদন্তকে দক্ষিণের রাজ্যে বিজেপির শক্তিবৃদ্ধির চেষ্টা বলে অভিযোগ করেছে। কারণ, তামিলনাড়ুতে বিজেপির উপস্থিতি প্রায় নেই বললেই চলে। কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলো তাদের সর্বশেষ অভিযান চালিয়েছে তামিলনাড়ুর পূর্ত এবং সড়ক যোগাযোগমন্ত্রী ইভি ভেলুর বিরুদ্ধে। এই অভিযান চলেছে ৩ নভেম্বর। চেন্নাই এবং কোয়েম্বাটোরের মতো জেলাগুলোর ৪০টিরও বেশি জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাগুলো। ভেলু দাবি করেছেন যে তাঁর সহযোগীরা তদন্তকারীদের প্রবল চাপের মুখে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। বাজেয়াপ্ত করা নথির বিশদ বিবরণ এখনও আয়কর দফতর প্রকাশ করেনি।
ভেলু ছাড়াও তামিলনাড়ু সরকারের যে মন্ত্রীরা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার মুখোমুখি হয়েছেন, তাঁরা হলেন- জলসম্পদ ও সেচমন্ত্রী দুরাইমুরুগান। তাঁর বিরুদ্ধে কোটি টাকার একটি বালি খনন কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া আর্থিক অনিয়ম কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে উচ্চশিক্ষামন্ত্রী কে পোনমুডি; গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী আই পেরিয়াসামি এবং প্রাক্তন আবগারি মন্ত্রী কে সেন্থিল বালাজি। চাকরি কেলেঙ্কারি এবং অর্থ পাচারের অভিযোগে জুন মাসে বালাজির বিরুদ্ধে অভিযান দিয়েই কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের সাম্প্রতিক অভিযান শুরু হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্টালিন অবশ্য বালাজিকে ক্ষমতাচ্যুত করেননি। তাকে মন্ত্রিসভায় রেখেছেন। কিন্তু, একাধিক জামিনের আবেদন প্রত্যাখ্যানের পরে বালাজি এখনও জেলে বন্দি। বালাজির ভাই অশোক আইনের চোখে পলাতক। যা, বালাজির আইনি পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে। অক্টোবরের শুরুতে ডিএমকের প্রবীণ সাংসদ এস জগঠরক্ষকনও আয়কর অভিযানের মুখোমুখি হয়েছিলেন।
সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের পরবর্তী টার্গেট হতে পারেন মন্ত্রী কেএন নেহেরু, ত্রিচির প্রবীণ খাদ্য ও বেসামরিক সরবরাহমন্ত্রী আর সাক্কারাপানি; এবং বাণিজ্যিক কর ও নিবন্ধন মন্ত্রী পি মূর্তি। তিনজনই ইতিমধ্যে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে পর্যবেক্ষণে আছেন। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি ডিএমকের স্তালিন পরিবারের বিরুদ্ধেও তদন্তে নামতে পারে। বালাজি, জগঠরক্ষকন এবং ভেলুর মত নেতারা ডিএমকের পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাঁদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা অভিযান চালানোয় ডিএমকের মধ্যে উত্তাপ ইতিমধ্যেই বাড়তে শুরু করেছে। সূত্রের খবর, 'এই সব তদন্ত স্ট্যালিনের কাছে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে তো বটেই।'
আরও পড়ুন- মহুয়ার আগে: অর্থের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্নের দায়ে দোষী সাব্যস্ত, বহিষ্কৃতরা কেমন আছেন?
ডিএমকের এক প্রবীণ মন্ত্রী জানিয়েছেন, এভাবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলো রাজ্যের একের পর এক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযান চালানোয় ডিএমকের বিভিন্ন কর্মসূচি ব্যাহত হচ্ছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের এই সব অভিযান আসলে ডিএমকে-কে লোকসভা নির্বাচনের আগে বাধা দেওয়ার চেষ্টা বলেই ওই মন্ত্রী মনে করছেন।