তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর নন্দীগ্রামে প্রথম রোড শো করলেন শুভেন্দু অধিকারী। যদিও নতুন দলে যোগ দিয়ে তিনি প্রথম কর্মসূচি করলেন অরাজনৈতিক। বজরঙ্গবলী মন্দিরের পুজো উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার নন্দীগ্রামে যান শুভেন্দু। সাদরে তৃণমূল কংগ্রেসের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন বলেও তাঁর বক্তব্যে জানিয়ে দেন নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক। নাম না করে শুভেন্দু ফের তোপ দেগেছেন তৃণমূল যুবর সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে।
এদিন নন্দীগ্রামের টেঙ্গুয়া মোড় থেকে মিছিল শুরু হয়। বিজেপিতে যোগ দেওযার পর থেকেই প্রশ্ন ওঠে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে শুভেন্দু কী নন্দীগ্রামে প্রার্থী হবেন? এই প্রশ্ন তুলে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন সেই চ্যালেঞ্জ তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন শুভেন্দু। বরং তিনি পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন। শুভেন্দু অধিকরী বলেন, “যাঁদের পেটে এখনও আমার ভাত আছে। তাঁরা ছবিতে কালি দিচ্ছে। ওদের অপরাধ নেই। ওই তোলাবাজ ভাইপোর অফিস থেকে বলছে, এগুলো কর আর ছবি পাঠা। আমি ওদের বলে দিচ্ছি ভোটের দিন আমি প্রমাণ করে দেব, নন্দীগ্রামের মানুষের কাছে আমি আছি কি নেই। প্রমান করে দেব এসব করে লাভ নাই।”
কেউ কেউ প্রশ্ন তোলেন বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর এখনও কেন তিনি নন্দীগ্রামে যাচ্ছেন না? রাজনৈতিক মহলের একাংশ থেকেও দাবি ওঠে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত নন্দীগ্রামে বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দুর কোনও জায়গা নেই। তিনি নির্বাচনে জয়ী হতে পারবেন না। এদিন শুভেন্দু স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “আমরা সব সময় নিজের ধর্মের প্রতি আস্থাশীল থাকি। অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকি। আমি নন্দীগ্রামে আজ নয় 20 বছর ধরে আসছি। আমি সব সময় বলে থাকি আমি শুভেন্দু অধিকারী সনাতন ধর্মের একজন সেবক। আমি ব্রাহ্মন পরিবারের। আমি সূর্য প্রণাম, গায়িত্রী জপ করে বাইরে বের হই। তবে আমি সাংসদ ছিলাম, বিধায়ক ছিলাম মন্ত্রী ছিলাম তখন আমি মানব ধর্ম পালন করেছি। তখন গরীব মানুষ ,অসুস্থ মানুষ, বেকার বেকার, জীবনে কখনও জাতপাত, ধর্ম দেখিনি।”
এদিন নন্দীগ্রামে ভুতা মোড়ে পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের ওপর হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি, “এই আক্রমণ আমরা মেনে নেব না। আমাদের ভারতবর্ষের নানা ভাষা নান মতের ঐতিহ্য, তা পালন করব। কিন্তু আমরা দুর্বল নই।”
আগামী ৭ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে সভা করার কথা ছিল তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু সেই সভায় যাচ্ছেন না মমতা। বিধায়ক তথা পূর্ব মেদিনীপুরের নেতা অখিল গিরি করোনা আক্রান্ত হওয়ায় সেই সভা বাতিল হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। অবশ্য জোড়া-ফুলের দাবি উড়িয়ে এ দিন শুভেন্দু অধিকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নন্দীগ্রাম না যাওয়াকে কটাক্ষ করেছেন। চ্যালেঞ্জের সুরে তিনি বলেন, ”কর্মসূচি ঘোষণা করে পগার পার! বলছে পরে কর্মসূচি করব। আমরাও তার পরে করব। ৮ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অন্তত ১ লক্ষ মানুষের জমায়েত হবে।”
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন