বাড়ছে করোনা। এই অবস্থায় আগামী ১৫ দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বৃহস্পতিবারই নবান্নে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্যকে স্বাগত জানাল রাজ্য বিজেপি। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর ওই কথাকে হাতিয়ার করেই রাজ্যের চার পুরসভার ভোট অন্তত এক মাস পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে বঙ্গ বিজেপির তরফে।
আগামী ২২ জানুয়ারি শিলিগুড়ি, আসানসোল, চন্দননগর ও বিধাননগরে পুরভোট রয়েছে। চলছে কমিশন নির্ধারিত কোভিডবিধি মেনে প্রচার। কিন্তু, করোনা আবহে আগেই এই চার পুরনিগমের ভোট পিছনোর দাবি তুলেছে বাংলার পদ্ম বাহিনী। শুক্রবার রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের যুক্তি, 'মুখ্যমন্ত্রী যখন নিজেই বলছেন যে আগামী ১৫ দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তখন অন্তত ১ মাস ভোট পিছিয়ে দেওয়া হোক।' তাঁর সংযোজন, 'ভোট ও গণনার দিন সুরক্ষার জন্য রাজ্য পুলিশের উপর কমিশন আস্থা রেখেছে। কিন্তু পুলিশের বহু কর্মী বর্তমানে করোনায় সংক্রমিত। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের একাধিক আধিকারিও করোনা আক্রান্ত। শাসক, বিরোধী সব দলের নেতা, কর্মীদের করোনা কাবু করেছে। প্রার্থীরা গেলেও মানুষের সাড়া মিলছে না। তাই প্রাণে বাঁচতে ভোট পিছনো হোক।'
এতদিন রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও রাজ্য সরকারের কাছে কাছে ভোট পিছনোর দাবি জানিয়েছে বিজেপি। কিন্তু, এ দিন সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ভোট পিছিয়ে দেওয়ার জন্য হস্তক্ষেপের আবেদন জানান বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য।
যদিও পদ্ম বাহিনীর এই আর্জির পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য দেখছেন শাসক দল তৃণমূল। দলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় পাল্টা বলেছেন, 'করোনা বাড়ছে ঠিকই। তবে শুধু তো বাংলায় নয়, দেশজুড়ে বাড়ছে সংক্রমণ। তাহলে তো পাঁচ রাজ্যের আসন্ন নির্বাচনও পিছিয়ে দিতে হয়। কেন সেই দাবি করছে না বিজেপি? আসলে কলকাতার মতো এই চার পুরসভা ভোটেও গোহারা হারবে বিজেপি। তাই এখন ভোট পিছনোর কথা বলছে।' যদিও ভোট কখন হবে তা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত বলেই জানিয়েছেন এই তৃণমূল সাংসদ।
শুধু ভোট পিছনোই নয়, গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধেরও দাবি তুলেছে বিজেপি। শমীক ভট্টাচার্যের কথায়, 'এজি হাইকোর্টে বলেছেন এখন সাগরে মেলা উপলক্ষে ৩০ হাজার ভক্ত রয়েছেন। প্রশাসন, পুলিশ নিয়ে এই সংখ্যা ন্যূতম ৪৫ হাজার। এজি মনে করছেন অন্তন ৫ লক্ষ লোকের জমায়েত হতে পারে। সরকারের যুক্তি সাগর হাসপাতালে কোভিড বেড প্রস্তুত রয়েছে। বাস্তব হল ওই হাসপাতালে এখন ৬০টা শশ্যা রয়েছে, ডাক্তারের সংখ্যা ১১ জন। ৪৫ হাজার ভক্তদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়লেই মারাত্মক অবস্থা হবে। সামাল দেওয়ার পরিকাঠামো নেই। তাই কঠোর হাতে ভিড় নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।' তাঁর দাবি, 'ধর্মীয় আবেগ থাকলেও গঙ্গাসাগর মেলা বিপদ ডেকে আনতে পারে'। একই সঙ্গে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি থেকে পুণ্যার্থীরা এ বার যাতে সাগরমেলায় না আসেন, সে জন্যও বিজেপি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের কথাকথা ভাবছে বলে জানিয়েছেন শমীকবাবু। উল্লেখ্য, মেলা হওয়ার বিষয়টি এখন কলকাতা হাইকোর্টে বিচারাধীন।