Advertisment

কংগ্রেস রাজ্য দপ্তরে উল্লাস, কর্মী-সমর্থক শূন্য ৬, মুরলীধর সেন লেন

পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ফল আপাত প্রভাব ফেলেছে এরাজ্যেও। বাড়তি অক্সিজেন পেয়েছে কংগ্রেস। এবার দেখার বিষয়, বিজেপির গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা কতটা সফল হতে পারে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Congress Celebration Express photo Shashi Ghosh

রাজ্য় কংগ্রেস দপ্তরে উল্লাস কর্মী-সমর্থকদের। ছবি- শশী ঘোষ

পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফল এই বঙ্গে আদৌ কতটা প্রভাব ফেলবে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। তবে এদিন যে ঝড়ের কিছুটা হলেও আছড়ে পড়েছে এখানে, তা বিজেপি ও কংগ্রেসের রাজ্য দপ্তর দেখেই মালুম পাওয়া গেল। একদিকে সামনেই রয়েছে বিজেপির গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা, অন্যদিকে আগামীকাল বুধবার রাণী রাসমনিতে রয়েছে কংগ্রেসের জনসভা। কংগ্রেস ওই সভার আগের দিন যে এ রাজ্যে নতুন করে অক্সিজেন পেল, তা নিয়েও কোনও সন্দেহ নেই।

Advertisment

BJP party office Express photo Shashi Ghosh পাঁচ রাজ্যের ভোট গণনা শুরু হতেই সুনসান রাজ্য বিজেপি দপ্তর। ছবি: শশী ঘোষ

পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফলের আঁচ পাওয়া গেল কলকাতায়। একদিকে সিআইটি রোডে কংগ্রেসের রাজ্য দপ্তরে আতসবাজি পুড়িয়ে উল্লাশ চলছে। ঠিক তখনই সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ সংলগ্ন ৬, মুরলীধর সেন লেনের বিজেপির রাজ্য দপ্তর প্রায় জনমানবশূন্য। গেরুয়া শিবিরের কর্মী-সমর্থকদের কোনও ভিড় নেই। কিন্তু রাজ্য দপ্তরে দলের সমস্ত শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্ব রয়েছেন। তাঁদের সকলের চোখ টিভির পর্দায়।

এদিন দুপুরে প্রদেশ কংগ্রেস দপ্তরে গিয়ে দেখা গেল, যেন মরা গাঙে জোয়ার এসেছে। নেতারা হাজির না হলেও কর্মী-সমর্থকরা ভিড় জমিয়েছেন হাতে হাত মিলিয়ে। সঙ্গে রয়েছে রঙিন আতসবাজি। মুহূর্তের মধ্যে শুরু হয়ে গেল বাজি পোড়ানো। তখনও পুরো ফল প্রকাশ হয়নি। কেউ কেউ আর একটু অপেক্ষার কথা বললেও তার ধার ধারলেন না বেশিরভাগই। আবেগ উচ্ছ্বাসে ভেসে গেলেন দলের অনুগামীরা। প্রদশে কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, "এই নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাশিত ছিল। আগামীকাল রাণী রাসমনিতে সভা ডেকেছে কংগ্রেস। সেখানেই বিজয় উৎসব করব।"

Congress Celebration Express photo Shashi Ghosh একের পর এক আসনে জয় আসতেই উচ্ছ্বাস বাড়তে থাকে কংগ্রেস দপ্তরে। ছবি: শশী ঘোষ

সকাল থেকেই পাঁচ রাজ্যের ফলাফলের ট্রেন্ড অনুযায়ী ছত্তিসগড়, তেলেঙ্গানা ও মিজোরামে বিজেপিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। মাঝে মাঝে মধ্যপ্রদেশে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত মিলছিল বটে। কিন্তু রাজস্থানে কংগ্রেসের এগিয়ে যাওয়ারই ট্রেন্ড বজায় ছিল বরাবর।

এই গণনার প্রভাব গিয়ে পড়ে বিজেপির রাজ্য দপ্তরে। সাধারণ দিনেও কর্মী-সমর্থকরা ভিড় করেন সেখানে। নেতাদের অনুগামীদের ভিড়ে গমগম করে ৬, মুরলীধর লেন। এদিন সারা দিন সেই দৃশ্য ছিল একেবারে অধরা। অথচ নেতাদের কে ছিলেন না এদিন বিজেপির রাজ্য দপ্তরে! দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, কেন্দ্রীয় কর্মসমিতির সদস্য মুকুল রায়, সর্বভারতীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা, একাধিক রাজ্য সাধারন সম্পাদক সহ অনেকেই। কিন্তু সারাক্ষণ তাঁদের নজর ছিল টিভিতে। বাইরেটা ছিল ফাঁকা।

BJP party office Express photo Shashi Ghosh এভাবেই বুধবার সারাদিন খাঁ খাঁ করে বিজেপির অফিস। ছবি: শশী ঘোষ

এদিন পরাজয়ের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে দিলীপবাবু বলেন, "ওই রাজ্যগুলিতে কিছু মানুষের ক্ষোভ থেকে থাকতে পারে। তবে তার জন্য ছাগলের তৃতীয় সন্তানের মত তৃণমূল কংগ্রেসের লাফালাফি করে কোনও লাভ নেই। এরাজ্যে বিজেপির আন্দোলন যেমন হচ্ছে তেমনই চলবে।"

অন্যদিকে এদিন দিল্লিতে ছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সারা দিন ভোটের ফলাফলে নজর রেখে বিকেলে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী চলে যান প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে। মমতার মতে, "যেখানেই নির্বাচন হবে সেখানেই হারবে। এটা সেমিফাইনাল। যত তাড়াতাড়ি ভোট হয় ততই ভাল। এটা মানুষের জয়। এটা বিজেপির শেষের শুরু।"

সিপিএম বিরোধীদের এই জয়কে গণতন্ত্রের জয় বলে অভিহিত করেছে। দলের সাংসদ মহম্মদ সেলিমের বক্তব্য, "দেশ বিরোধীশূন্য, কংগ্রেস মুক্ত করে দেব। এই যে অহমিকা... বিজেপি রাজ্যে ও কেন্দ্রে সরকার চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। মানুষের আশা আকাঙ্খা পূরণ হয়নি। কৃষি সমস্যা, বেকারদের সমস্যা, ছোট কারবারীদের সমস্যা। নোট বাতিল ও জিএসটির ফল খুব খারাপ হয়েছে। মানুষ শুধু সুযোগ খুঁজছিলেন। বিজেপি মানুষের ক্ষোভ বুঝতে পেরে মন্দির নিয়ে মেতেছিল। মানুষ তাতে সায় দেননি। বিকল্প সরকার গঠন করে তাই মানুষ সমস্যার সমাধান চাইছেন।"

tmc bjp west bengal politics
Advertisment