ছয় দিনের সফরে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ৩০ মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রওনা দেবেন। মার্কিন মুলুকের তিন শহর- সানফ্রান্সিসকো, ওয়াশিংটন ডিসি ও নিউ ইয়র্কে তিন সফর করবেন। সেখানকার এনআরআই, ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধি এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তিনি আলাপচারিতা চালাবেন। এই পরিস্থিতিতে রাহুল ও কংগ্রসকে আইনি বাধা ভাবাচ্ছে। সাংসদ হিসেবে তিনি 'অযোগ্য' ঘোষিত হওয়ার পর রাহুল তাঁর কূটনৈতিক পাসপোর্ট জমা দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ পাসপোর্টে ছাড়পত্র (এনওসি) চেয়ে রাহুল আবেদন জানিয়েছেন। সেই আবেদনের ব্যাপারে শুক্রবার দিল্লির এক আদালত রায় দিয়ে চলেছে।
তার সফরসূচি অনুযায়ী, রাহুল সানফ্রান্সিসকো, ওয়াশিংটন ডিসি এবং নিউইয়র্কে দু'দিন করে কাটাবেন। এর মধ্যে ৩০ মে, তিনি সান্তা ক্লারার সান্তা ক্লারা ম্যারিয়টে মার্কিন মুলুকের এনআরআইদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। ৩১ মে সিলিকন ভ্যালির স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে 'দ্য নিউ গ্লোবাল ইকুইলিব্রিয়াম' বিষয়ে একটি বক্তৃতা দেবেন। স্ট্যানফোর্ড গ্র্যাজুয়েট স্কুল অফ বিজনেস-এ তাঁর বক্তৃতার বিষয়বস্তু থাকবে- গণতন্ত্র, উন্নয়ন এবং আইনের শাসন।
কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা, শিল্পী সংগঠনের প্রতিনিধিদের মুখোমুখি হবেন। পাশাপাশি, গণমাধ্যমেরও মুখোমুখি হবেন বলে সূচিতে রয়েছে। রাহুল ১ এবং ২ জুন ওয়াশিংটনে থাকবেন। তারমধ্যে ১ জুন, তিনি ভারতীয় গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ, বাক স্বাধীনতা এবং টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক বৃদ্ধির বিষয়ে মার্কিন প্রেসক্লাবে বক্তৃতা দেবেন। সিএনএন-এর তরফে ফরিদ জাকারিয়া আলাদাভাবে তাঁর একটি সাক্ষাৎকার নেবেন।
রাহুল ভারতীয়-মার্কিন উদ্যোক্তা ফ্রাঙ্ক ইসলামের দেওয়া একটি নৈশভোজেও যোগ দেবেন। সেখানে উপস্থিত থাকবেন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা, সেনেটর এবং কংগ্রেসম্যানরা। ৪ জুন নিউ ইয়র্কের জাভিটস সেন্টারে রাহুল ইন্দো-আমেরিকানদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন। গোটা আমেরিকা থেকে জড় হওয়া ইন্ডিয়ান ওভারসিজ কংগ্রেস সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
মানহানির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে মার্চ মাসে লোকসভা সাংসদ হিসেবে রাহুল 'অযোগ্য' ঘোষিত হন। এর পর তাঁর কূটনৈতিক পাসপোর্ট জমা করেছেন। মঙ্গলবার তিনি দিল্লির এক আদালতে গিয়ে তাঁকে 'সাধারণ পাসপোর্ট' দেওয়ার জন্য এনওসি চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন। তাঁর আবেদনের শুনানির সময়, অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) বৈভব মেহতা পর্যবেক্ষণ করেছেন যে ভ্রমণের অধিকার একটি মৌলিক অধিকার। আর, আদালত রাহুলের চলাফেরার ওপর কোনও বিধিনিষেধ জারি করেনি। অতীতে রাহুল অনুমতি ছাড়াই বহুবার বিদেশ ভ্রমণ করেছেন।
আরও পড়ুন- ইস্যু রাষ্ট্রপতির প্রতি বঞ্চনা, মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ফের একজোট বিরোধীরা, ২৪-এর প্রস্তুতি?
একইসঙ্গে, অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহতা বলেছেন যে প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী চাইলে রাহুলের পাসপোর্টে এনওসি চেয়ে আবেদনে নিজের মতামত জানাতে পারেন। রাহুল ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় একজন অভিযুক্ত। এই মামলায় সুব্রহ্মণ্যম স্বামী অভিযোগকারী। সেই নিয়ে স্বামীর কোনও বক্তব্য থাকলে শুক্রবারের মধ্যে তাঁকে জবাব দিতে হবে বলে জানিয়েছে আদালত। এসিএমএম উল্লেখ করেছেন যে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে রাহুলকে জামিন দেওয়ার সময়, আদালত তাঁর ভ্রমণে কোনও বিধিনিষেধ জারি করেনি। শুধু তাই নয়, রাহুলের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য স্বামীর আবেদন প্রত্যাখ্যানও করেছিল।