'ইন্ডিয়া' জোটে জলঘোলা আরও বাড়ল। এবার বাংলার পথেই হাঁটল পঞ্জাব। বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গে কোনও জোট হবে না। সেই একই পথে হেঁটে এবার আম আদমি পার্টি (আপ)-ও জানিয়ে দিল, পঞ্জাবে তারা কোনও জোট চায় না। পঞ্জাবের শাসক দল আম আদমি পার্টি। মুখ্যমন্ত্রী আম আদমি পার্টির ভগবন্ত মান। বুধবার মান রীতিমতো ঘোষণা করে জানিয়েছেন যে আপ পঞ্জাবে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করবে না। কারণ, পঞ্জাবে কংগ্রেসই আম আদমি পার্টির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। দুই প্রধান বিরোধী দল পঞ্চনদের রাজ্যে জোট করলে সুবিধা পেয়ে যাবে সুরজিৎ সিং বাদলের অকালি দল এবং বিজেপি। সেটা হতে দিতে চান না আম আদমি পার্টি নেতৃত্ব।
- পঞ্জাবে ১৩-০ ফলের আশা করছে আপ।
- আপ, চণ্ডীগড় পুরসভার মেয়র নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে সহযোগিতা করেছে।
- প্রার্থী বাছাই করা হবে সমীক্ষার ভিত্তিতে।
এর আগে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানিয়ে দিয়েছিলেন, ২০তম লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল কংগ্রেস এককভাবে লড়াই করবে। বাংলায় ইন্ডিয়া জোট হবে না। কার্যত সেই সুরেই গণমাধ্যমকে সম্বোধন করে মান বলেছেন, 'দেশ মে পাঞ্জাব বনেগা হিরো, আম আদমি পার্টি ১৩-০।' তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, 'পঞ্জাবে আপ কংগ্রেসের সঙ্গে যাচ্ছে না।' চলতি মাসের গোড়ার দিকে অবশ্য ভগবন্ত মান তাঁর অবস্থানকে নরম করে জানিয়েছিলেন, কংগ্রেসের সঙ্গে যে কোনও জোটের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আম আদমি পার্টির হাইকমান্ডই নেবে। পরবর্তীকালে, আপ চণ্ডীগড় পুরসভার মেয়র নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে সহযোগিতাও করে। সেসময় আপ নেতা রাঘব চাড্ডা, দিল্লিতে ঘোষণা করেছিলেন যে, কংগ্রেস ও আপ ভারত ব্লকের মধ্যে নির্বাচনী সহযোগিতার সূচনা করেছে। যা আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে সম্মিলিতভাবে চ্যালেঞ্জ জানাবে।
আরও পড়ুন- ছাদে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে বিশাল ঘোষণা মোদীর, আবার কোনও চমক নাকি?
সেই অবস্থান থেকে সরে এসে বুধবার মান জানান, বিজয়ী হওয়ার যোগ্যতার ভিত্তিতেই প্রার্থী বাছাই করা হবে। তিনি বলেন, 'আমরা ৪০ জন সম্ভাব্য প্রার্থীর একটি তালিকা পেয়েছি। তার মধ্যে থেকে ১৩ জনকে প্রার্থী হিসেবে বেছে নেওয়া হবে। আমরা সমীক্ষা করব। যাঁরা জেতার মাপকাঠি পূরণ করবেন, কেবল তাঁদেরই টিকিট দেওয়া হবে।' সূত্রের খবর, আপের এই ৪০ জন সম্ভাব্য প্রার্থীর মধ্যে কিছু আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর সংখ্যা ২ এবং ৩। তালিকায় বর্তমান সংসদ সুশীলকুমার রিংকুও আছেন বলেই জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন- কানাডায় বিদেশি ছাত্রদের ওপর নিষেধাজ্ঞা, কতটা প্রভাব পড়বে ভারতীয়দের ওপর?
ইন্ডিয়া জোট গঠনের পর, পঞ্জাবে আপ এবং কংগ্রেসের দিকে সকলের নজর চলে যায়। স্থানীয় কংগ্রেস নেতারাও অতীতে জোটের বিরোধিতা করেছেন। তাঁরা অভিযোগ করেছেন, পঞ্জাবের আপ সরকার কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসা চালিয়েছে। ভিজিল্যান্স ব্যুরোকে ব্যবহার করে বেশ কিছু কংগ্রেস নেতাকে গ্রেফতার করানো হয়েছে। পাশাপাশি, কংগ্রেসের নেতা ও কর্মীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং অন্যান্য মামলা দায়ের করা হয়েছে। চলছে পুলিশি হেনস্তাও। শুধু অভিযোগ করাই নয়, বিরোধী কংগ্রেসের নেতারা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী মিটিং শুরু করেছেন। তাঁরা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে আপের সঙ্গে জোট করবেন না। সম্প্রতি, কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা ইনচার্জ দেবেন্দর যাদবের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে, কংগ্রেস ক্যাডাররা পঞ্জাবে যে কোনও জোটের বিরোধিতা করেছেন। কংগ্রেস নেতারাও নাম প্রকাশ না করে নিশ্চিত করেছেন যে পঞ্জাবে কোনও জোট হবে না। পঞ্জাবে ১৩টি লোকসভা আসন রয়েছে। পঞ্জাব থেকে আপের মাত্র একজন সাংসদ আছে। তিনি হলেন জলন্ধরের সুশীলকুমার রিংকু। তিনি কংগ্রেস সাংসদ সন্তোষ চৌধুরীর মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে জিতেছিলেন। পাশাপাশি, পঞ্জাব থেকে কংগ্রেসের রয়েছে ছ'জন সাংসদ।